352507

প্রধানমন্ত্রীকে প্রথমে ভ্যাকসিন নেয়ার আহ্বান ডা. জাফরুল্লাহর

নিউজ ডেস্ক।। জনমনে ভীতি দূর করতে টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রথমে ভ্যাকসিন নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন বিষয়ে জনগণের আস্থা ফেরাতে আমি প্রস্তাব করছি এই ভ্যাকসিন প্রথমেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে নেবেন। তাহলে জনগণের আস্থা বাড়বে। উনি যেহেতু আমাদের নেত্রী, তাই উনাকে দিয়েই আমাদের ভ্যাকসিনের যাত্রা শুরু হোক।’

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত ‘করোনা টিকার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এ কথা বলেন। ভারতের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ ভ্যাকসিন নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বলে উল্লেখ করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘ভ্যাকসিন নিয়ে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর হয়তো কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।’

যেসব পেশাজীবী শ্রমিকদের করোনার সংক্রমণ-ঝুঁকি বেশি, তাদের মাঝে ভ্যাকসিন বিতরণ করতে সরকারকে উপদেশ দিয়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘সব চিকিৎসকদের নয়, যারা করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন, শুধু তাদেরকে আগে ভ্যাকসিন দেওয়া উচিত। একইভাবে শুধু ট্রাফিক পুলিশদের ভ্যাকসিন দেওয়া উচিত।’

পাশাপাশি সরকারিভাবে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম শেষ হওয়ার আগে বেসরকারিভাবে ভ্যাকসিন দেওয়ার অনুমোদন না দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

এ সময় অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের অর্থমন্ত্রী প্রথম ভ্যাকসিন নিতে চেয়েছেন। তার প্রথমে ভ্যাকসিন নেওয়ার প্রয়োজন নেই। তার থেকে প্রথমে তাকে অন্য একটা কাজ করে দিতে হবে। উনি বলেছেন ৪৩ বিলিয়ন ডলার আমাদের বর্তমানে উদ্বৃত্ত রয়েছে। বিলিয়ন ডলার থেকে মাত্র আধা বিলিয়ন ডলার গবেষণা এবং ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য বরাদ্দ করে দেন। উনি এটা করলে আমরা নিজেরাই উৎপাদন করে সকলেই করোনার ভ্যাকসিন নিতে পারবো এবং পাশাপাশি অন্য দেশকেও সহযোগিতা করতে পারবো।’

ভারত থেকে টিকা আমদানির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘ভারত থেকে টিকা আমদানির বিষয়ে সরকার প্রথমে বলেছে এটা জিটুজি পদ্ধতিতে করা হচ্ছে। কিন্তু এটা হচ্ছে একটি প্রাইভেট কোম্পানির সঙ্গে আরেকটি প্রাইভেট কোম্পানির চুক্তি। বাংলাদেশ সরকার তার সাক্ষী হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার গ্যারান্টি দিয়েছে টাকা দেওয়ার বিষয়ে। এখানে বেক্সিমকো এক পয়সাও বিনিয়োগ করেনি। বরং বেক্সিমকো এ থেকে যে পরিমাণ লাভ করেছে সেই টাকা দিয়ে তারা ফ্রান্সের ওষুধ কোম্পানি সানোফির বাংলাদেশ অংশের ৫৪ শতাংশ তিন কোটি ৫৫ লাখ পাউন্ড দিয়ে কিনে নিয়েছে। এরমধ্যে আবার ৪৫ শতাংশের মালিক ছিল বাংলাদেশ সরকার।’

তিনি আরও বলেন, ‘কথা ছিল ভারত যে দামে ভ্যাকসিন পাবে আমরাও সেই দামে পাবো। কিন্তু আমরা সেই দামে পাচ্ছি না। ১২শ কোটি টাকা বিনা টেন্ডারে মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু খালেদা জিয়া তো দুই কোটি টাকার মামলা থেকে রেহাই পাননি। সুতরাং আপনারাও যে ভবিষ্যতে ঝামেলায় পড়বেন না, সেই নিশ্চয়তা নেই। তাই আমি সাবধান করে দিচ্ছি এটি একটি অন্যায় এবং ভুল কাজ। সরকারের এ কাজ করা উচিত হয়নি।’

এসময় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ও বিশিষ্ট ভাইরোল‌জিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রাথ‌মিক স্বাস্থ্য প‌রিচর্যা ও রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের প্রাক্তন পরিচালক অধ্যাপক ডা. জা‌কির হো‌সেন, বিএসএমএমইউ ফার্মা‌কোলজী বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সা‌য়েদুর রহমান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপউপাচার্য অধ্যাপক ডা. মহিবুল্লাহ খন্দকার, গণস্বাস্থ্যের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু প্রমুখ।

ad

পাঠকের মতামত