349918

যুক্তরাষ্ট্রের যে ক্ষতি করেছেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র থেকে গণতন্ত্রকে উৎখাতের চেষ্টা করেছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে তিনি বার বার বাধা পেয়েছেন। তার সেই প্রচেষ্টাকে আটকে দিয়েছে দেশের রক্ষাকারীরা। রক্ষা পেয়েছে গণতন্ত্র। তবু তিনি থেমে নেই। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় এখনও তিনি সক্রিয়।

তার পক্ষে দায়ের করা মামলা শুক্রবার হাইকোর্টে প্রত্যাখ্যান করার আগে তার প্রচারণা টিম ঘোষণা করে তারা ভোটে জালিয়াতির বিষয়টি প্রচার করতে অনলাইনে আরো বিজ্ঞাপন প্রচার করবে। অনলাইন সিএনএন-এ এক মন্তব্য প্রতিবেদনে এসব কথা লিখেছেন সাংবাদিক মায়েভ রেস্টোন।

তিনি লিখেছেন, শুক্রবার রাতে বড় ধাক্কা খেয়েছেন ট্রাম্প। তিনি ৫ সপ্তাহ ধরে ক্ষমতায় টিকে থাকার মোহে যে আক্রান্ত হয়ে ছিলেন তাতে বড় ছেদ ঘটেছে এতে। অন্যদিকে অপ্রতিরোধ্য বিজয় অর্জন করেছেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত জো বাইডেন। শেষ পর্যন্ত গণতন্ত্রের রক্ষাকারীরা তাদের দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সপ্তাহে দ্বিতীয়বারের জন্য সুপ্রিম কোর্টে মামলায় হেরে গেছেন ট্রাম্প।

দেশে যখন করোনা মহামারিতে একের পর এক মানুষ মারা যাচ্ছেন, প্রায় তিন লাখ মার্কিনি মারা গেছেন, সেই মহামারি রোধে তিনি সাহায্য করার পরিবর্তে পরবর্তী রাজনৈতিক পদক্ষেপ কি হবে তিনি তা নিয়ে মেতে আছেন। এতে বলা হয়, আরো ভালভাবে বললে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি মার্কিনিদের বিশ্বাস ও আস্থায় যে ক্ষতি তিনি করেছেন তা দীর্ঘস্থায়ী হবে।

তিনি বাক্সপ্যাটরা গুছিয়ে নিয়ে চলে যাওয়ার পরেও তা থেকে যাবে। ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ প্রেসিডেন্সির অন্যতম হয়ে থাকবে তার প্রেসিডেন্সি। সুপ্রিম কোর্টের রায় শোনার আগে শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরো একটি কা- ঘটিয়ে বসেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আরেক প্রতিষ্ঠানকে আক্রমণ করে সেখানে এক নতুন ‘যুদ্ধক্ষেত্র’ সৃষ্টি করেছেন। এদিন তার প্রশাসন থেকে ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশনকে (এফডিএ) চাপ দেয়া হয়েছে ওই দিনের মধ্যে ফাইজার আবিস্কৃত করোনা ভাইরাসের টিকা অনুমোদন দিতে, তা নাহলে এর প্রধানকে পদত্যাগ করার জন্য চাপ দেয়া হয়।

এটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার এমন চাপ সৃষ্টি করেন বলে মার্কিন মিডিয়ায় খবর প্রকাশ হয়েছে। এমন চাপে পড়ে বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে অর্থাৎ শুক্রবার রাতের মধ্যেই এফডিএ অনুমোদন দেয় ফাইজারের টিকা। তবে এফডিএ প্রধান এমন চাপের কথাকে অসত্য বলে দাবি করেছেন। মার্কিনিরা যখন নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন যে, যেকোনো দিন তাদের জন্য প্রথম টিকার অনুমোদন দেয়া হবে, তখন হোয়াইট হাউজে ট্রাম্প অস্থির হয়ে পড়েন।

তিনি নির্বাচনে পরাজিত হয়ে এবং জর্জিয়াতে ভোট নিয়ে মিথ্যা তথ্য সম্বলিত টুইট করেন। তাই এ দিনটিকে একটি ঐতিহাসিক দিন হিসেবে মনে করা হয়। রিপাবলিকান দলের নির্বাচনী আইনজীবী বেন গিন্সবার্গ বলেন, এর মাধ্যমে আমাদের গণতন্ত্রের জন্য একটি বিশাল চাপের পরীক্ষা সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্য দিয়ে এটাই প্রতিফলিত হয় যে, যুক্তরাষ্ট্রের কমান্ডার ইন চিফ নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে খর্ব করেছেন এবং অগণিত নির্বাচনী কর্মীর নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলেছেন।

কারণ, তিনি নির্বাচন নিয়ে যেসব মামলা করেছেন তা প্রত্যাখ্যান করেছেন ওইসব বিচারক, যাদেরকে তিনি নিজে নিয়োগ দিয়েছিলেন। গিন্সবার্গ আরো বলেন, নির্বাচনের পর ৫ সপ্তাহ কেটে গেছে। এরই মধ্যে ওই প্রচেষ্টায় আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ছিল অক্ষুন্ন। তারা যা করেছে, তার জন্য আমাদের গর্বিত হওয়া উচিত। শুক্রবার রাতে সিএনএনের উলফ ব্লিটজারের ‘দ্য সিচুয়েশন রুম’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন গিন্সবার্গ।

তিনি বলেন, ট্রাম্পকে যেসব রিপাবলিকান অনুসরণ করেন তাদের এখন উচিত দেশকে নতুন করে শক্তিশালী করে গড়ে তোলা, দেশের ভিত্তি এবং গণতন্ত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে ক্ষতি করেছেন তা সারিয়ে তোলা। কিন্তু তারা যে সেটা করবেন তেমনটা মনে হয় না। (সিএনএন থেকে সংক্ষেপিত)

ad

পাঠকের মতামত