
বঙ্গবন্ধু কখনোই ভাস্কর্যের পক্ষে ছিলেন না: চরমোনাই পীর
বিদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের ষড়যন্ত্র করছে নাস্তিকরা। বঙ্গবন্ধু ধার্মিক ছিলেন। তার পরিবারও ধার্মিক, এমনকি ওনার পূর্বপুরুষরাও ধার্মিক ছিলেন। বঙ্গবন্ধু কখনোই ভাস্কর্যের পক্ষে ছিলেন না। আর সেজন্যই নাস্তিকরা ওনার ভাস্কর্য নির্মাণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দলটির ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর ও পীর সাহেব চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মোহাম্মাদ রেজাউল করীম।
তিনি আরো বলেন, একটি সুবিধাভোগী মহল সাধারণ মুসলিম জনতার উত্থাপিত একটি যৌক্তিক মতামতকে কেন্দ্র করে গোটা দেশে হুমকি দিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে। সরকারের কোন কাজের সংশোধনমূলক পরামর্শ, গঠনমূলক সমালোচনা বা বিরোধিতা করলেই চিহ্নিত মহলটি পাকিস্তানপন্থী, রাজাকার, আলবদর, সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী ইত্যাদি বলে ভিন্নমত পোষণকারীদের প্রতি হামলে পড়ে। ভাস্কর্যের পক্ষে থাকাটা হলো মূর্তি প্রীতি ও বিজাতীয় চেতনার বহিঃপ্রকাশ। ইসলামি আন্দোলন সীমাহীন ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে এসেছে। আমরা ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছি। উগ্রবাদী শক্তি আমাদের নীরবতাকে দুর্বলতা ভেবেছে। আমি সরকারকে সীমা লঙ্ঘনকারীদের নিবৃত করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, ভাস্কর্য বিরোধী আন্দোলনের পেছনে আমাদের কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ নেই। আমি মনে করি ভাস্কর্য স্থাপন করতে বিদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে তারা। আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে ঘোষণা করছি- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রক্রিয়া বন্ধ না করা হলে শিগগিরই আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবো।
পীর সাহেব চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মোহাম্মাদ রেজাউল করীম আরো বলেন, উলামায়ে কেরামের দাবির মধ্যে মরহুম বঙ্গবন্ধুর প্রতি কোন বিদ্বেষ ছিলো না, অসম্মানও ছিলো না। বরং বিষয়টি ছিলো দেশের জনগণের বোধ বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক মূর্তি স্থাপন না করে অন্য কোন পন্থায় তাকে স্মরণ করার দাবি। আলেমসমাজ ও সাধারণ মুসলিম ধর্মপপ্রাণ জনগণ এ ক্ষেত্রে সরকারের কাছে নিজেদের প্রাণের আকুতি তুলে ধরতেই পারে। মানা না মানা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব।
চরমোনাই পীর বলেন, গতকাল মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের একটি ভূঁইফোড় সংগঠন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের নামে একটি জঘন্য মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রক্রিয়ায় গিয়েছে। সঙ্গে আরো দুইজন বিশিষ্ট আলেম আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ও মাওলানা মামুনুল হকের নামেও মিথ্যা মামলা দায়ের করার প্রক্রিয়ায় গিয়েছে তারা। আমরা বিষয়টিকে রাজনৈতিক ইস্যু মনে করিনি। যে কারণে ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি পর্যাবেক্ষণ করেছি মাত্র।
তিনি আরও বলেন, যারা দেশের ওলামা সমাজকে এবং সম্মানিত ধর্মীয় ব্যক্তিদেরকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে, কটুক্তি করে, ব্যঙ্গ কার্টুন প্রকাশ করে অপমান অপদস্ত করে, প্রাণ নাশের হুমকি দেয়, সংঘাত, মারামারির আহ্বান জানায় তাদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির দাবি করছি। ধোলাইপাড়ের মূর্তির বিষয়ক মতামতের সাথে দেশের অন্য কোন মূর্তি ভাঙার কোন সম্পর্ক নেই। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই মতামতের সাথে বিষয়টিকে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী ও আলহাজ্ব খন্দকার গোলাম মাওলা, রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান ও মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, কেএম আতিকুর রহমান, আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, মাওলানা নেছার উদ্দিন, বরকত উল্লাহ লতিফ, মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, জিএম রুহুল আমীন, মাওলানা খলিলুর রহমান, এডভোকেট একেএম এরফানুল হক চৌধুরী, ছাত্রনেতা এম হাছিবুল ইসলাম, নুরুল করীম আকরাম, এডভোকেট আবদুল বাসেত প্রমুখ।
সূত্র: আরটিভি অনলাইন