347433

কোমর ব্যথায় অপারেশনবিহীন চিকিৎসা

লাইফস্টাইল ডেস্ক: বয়স যেমনই হোক অনেকেই কোমর ব্যথায় ভোগেন। যারা নিয়মিত বসে কাজ করেন তাদের অনেকের ক্ষেত্রে এই ব্যথা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। তবে এর অনেকগুলো কারণ আছে। এর মধ্যে একটি কারণ হলো পিরিফরমিস সিনড্রোম। আমাদের গ্লুটিয়াল অর্থাৎ বাটক এর মাংসপেশি অথবা হিপ জয়েন্টে ব্যথা থাকে এবং এটা পায়ের দিকে ছড়িয়ে যায়। আমাদের পিরিফরমিস মাসলের এবনর্মাল কন্ডিশন এর জন্য এটা হয়। পায়ের দিকে ছড়িয়ে যায়। এজন্য এটাকে পেরিফেরাল নিউরাইটিসও বলা হয়। সায়াটিক নার্ভের জন্য এই সিনড্রোম হলে এটাকে সায়াটিকাও বলা হয়। বিভিন্ন ধরনের গবেষণা বলে, এটা মেয়েদের ছয় গুণ বেশি হয় ছেলেদের তুলনায়।

কোমর ব্যথার কারণ
১. গ্লুটিয়াস /বাটক এরিয়াতে আঘাত লাগলে।
২. পিরিফরমিস মাংসপেশি টাইট/স্পাজম হলে।
৩. পিরিফরমিস মাসল এর বার্সাতে ইনফ্লামেশন/প্রদাহ হলে।
৪. পিরিফরমিস মাসলের হাইপার্ট্রফি অর্থাৎ পুরুত্ব বাড়লে।
৫. স্যাক্রোআইলিয়াক জয়েন্ট এর আর্থাইটিস হলে।
৬. টোটাল হিপ জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট হলে।
৭. টিউমার হলে।
৮. দীর্ঘ সময় ওয়ালেট বা মানিব্যাগ ব্যবহারের কারণে.
৯. সিকার্স, ট্রাক চালক, টেনিস খেলোয়াড়, দীর্ঘপথ বাইক চালক এদের ঝুঁকি বেশি।

লক্ষণ
অবিরাম বাটক, হিপ জয়েন্ট, হ্যামস্ট্রিং মাসল, এমনকি পায়ের মাংসপেশী পর্যন্ত ব্যথা ছড়িয়ে পড়বে।
অবশ অবশ ভাব হতে পারে।
পাকে অন্য পায়ের দিকে নিয়ে আসলে (adduction, internal rotation), দাঁড়িয়ে থাকলে, বসলে, এ সময় ব্যথা বৃদ্ধি পায়।
হাঁটলে বা হাটার সময় ব্যথা কমে।
পা ফুলে যেতে পারে।
যৌ’ন মিলনের সমস্যা হতে পারে।
ব্যথা পায়ের বাইরের (lateral) পাশ দিয়ে অনুভূত হতে পারে।
(এই সমস্যাগুলো হলে ন্যূনতম একজন গ্রাজুয়েট ফিজিওথেরাপিস্ট/নিউরোলজিস্ট/অর্থোপেডিক্স বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হবেন তিনি ফিজিক্যাল এক্সামিনেশন, সিটি স্ক্যান, এমআরআই, ইলেক্ট্রোমায়োগ্রাফি দ্বারা ডায়াগনোসিস করবেন)

চিকিৎসা
১. ওষুধ: পিরিফরমিস সিনড্রোম সঠিক নির্ণয় করার পরে ব্যথা কমানোর জন্য ব্যথানাশক (NSAIDs) ওষুধ, মাংসপেশি টাইটনেস এর জন্য (muscle relaxant), নার্ভজনিত ব্যথার জন্য (neuropathy medication).
২. ফিজিওথেরাপি (প্রধান চিকিৎসা): ৬০-৭০ শতাংশ পুরোপুরি ভালো হয়ে যায় সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন করে দুই মাস চিকিৎসা নেয়ার পর।

ব্যথা কমানোর জন্য হট প্যাক অথবা কোল্ড স্প্রে। এছাড়াও একজন ফিজিওথেরাপিস্ট যথাযথভাবে অ্যাসেসমেন্ট এবং ডায়াগনোসিসের পরে আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি, ওজন থেরাপি, মোবিলাইজেশন, ম্যানুপুলেশন, স্ট্রেচিং এবং স্ট্রেনদেনিং এক্সারসাইজ দিয়ে থাকেন এবং মুভমেন্ট প্যাটার্ন শিখিয়ে থাকেন।
এছাড়াও বাসায় কিছু এক্সারসাইজ শিখিয়ে দিবে সেগুলো করা এবং জীবনধারার কিছু পরিবর্তন করতে হবে।
৩. এতেও তেমন একটা উপকারে না বুঝলে স্টেরয়েড, বটুলিনাম টক্সিন ইনজেকশন দিতে হবে পিরিফরমিস মাসলে।

প্রতিরোধ করার উপায়
দীর্ঘ সময় বসে না থাকা। প্রত্যেক ২০ মিনিট পরে হাঁটা কিংবা দাঁড়ানো।
ড্রাইভিং এ কিছু পরপর থামানো এবং দাঁড়ানো তারপর স্ট্রেচিং করা।
গ্লুটিয়াল রিজিওনকে কোনো আঘাত থেকে রক্ষা করা।
প্রতিদিন স্ট্রেচিং করা যাতে পিরিফর্মিস সিনড্রোম পুনরায় না হয়।
সাইফুল ইসলাম (ফিজিওথেরাপি শিক্ষার্থী)
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর), ঢাকা।

সূত্র: আরটিভি নিউজ

ad

পাঠকের মতামত