
যেভাবে ব্যারিস্টার সুমন-ইশরাতের আদালত অবমাননা
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুলের লিখিত আদেশ প্রকাশ হয়েছে। রোববার (১৫ নভেম্বর) ৫ পৃষ্ঠার এ লিখিত আদেশ হাতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।
লিখিত আদেশে বলা হয়েছে, ইশরাত হাসান যে কবিতা (সুকুমার রায়ের ‘বিচার’ কবিতা) পোস্ট করেছেন, আর যে ফেসবুকে স্ট্যাটাস (থ্রি ইডিয়ট মুভি নিয়ে) দিয়েছেন তা আদালতের জন্য অবমাননাকর। সুকুমার রায়ের কবিতা পোস্ট করে বিচার বিভাগকে চরমভাবে অবমাননা করা হয়েছে। সুকুমার রায়ের কবিতা পোস্ট করা অপরাধ না হলেও এ মামলার প্রসিডিং চলা অবস্থায় ওই কবিতা পোস্ট করে তিনি বিচারককে সরাসরি ব্যক্তিগতভাবে আঘাত এবং কলংকিত করেছেন। এতে আদালত অবমাননা হয়েছে।
এছাড়া ব্যারিস্টার সুমন এ বিষয়টিকে সমর্থন করেছেন এবং আদালতের আদেশ সত্ত্বেও নিজের আগের সব পোস্ট সরিয়ে নেননি। তাই তাদের ওপর আদালত অবমাননার রুল ইস্যু করা হলো। লিখিত আদেশে তাদের ১৬ নভেম্বর সশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত ৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি গোবিন্দ্র চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মাদ উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হওয়ার পরও একজন বিচারপতির ছেলে ব্যারিস্টার জুম্মন সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে গেজেট প্রকাশের বৈধতা চ্যালেঞ্জের রিটের রুল শুনানিতে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন আদালত।
গত বছরেরে ১৮ ডিসেম্বর ওই বিচারপতির ছেলেকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে জারি করা গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে গেজেট প্রকাশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
গত বছরের ২১ নভেম্বর আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষায় বারবার অনুত্তীর্ণ হওয়ার পরও হাইকোর্টের এক বিচারপতির ছেলেকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী ঘোষণার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করা হয়। আইনজীবী সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন ও ইশরাত হাসান বাদী হয়ে এ রিট দায়ের করেন।
রিট আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরীক্ষায় কয়েকবার অংশ নিয়েও কৃতকার্য হতে পারেনি হাইকোর্টের এক বিচারপতির ছেলে জুম্মান সিদ্দিকী। অথচ গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর জুম্মান সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করে গত বছরের ৩১ অক্টোবর গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
তাই রিটে ওই গেজেট এবং ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ বার কাউন্সিল অর্ডারের ২১(১)(খ) ও ৩০(৩) ধারা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। জুম্মান সিদ্দিকীসহ বার কাউন্সিলের সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়।
গত ৮ নভেম্বর এ রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আইনজীবী অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ একজন বিচারপতির ছেলে ব্যারিস্টার জুম্মন সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে গেজেট প্রকাশ বৈধ বলে রায় দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ ধরনের রিট করে আদালতের সময় নষ্ট করার জন্য হাইকোর্ট ব্যারিস্টার সুমন ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসানকে ১০০ টাকা করে জরিমানা করেন। পরে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের এ রায় স্থগিত করেছেন।