345453

জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে : বিভাগীয় কমিশনার

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে কোরআন অবমাননার অ’ভিযোগ তুলে শহীদুন্নবী জুয়েল নামের এক ব্যক্তিকে পি’টিয়ে হ’ত্যা এবং লা’শ পু’ড়িয়ে ফেলার ঘ’টনায় কারও ইন্ধন থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের রংপুর রেঞ্জর ডিআইজি দেবদাশ ভট্টাচার্য্য। তবে এ ঘটনায় জঙ্গি সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা তদন্ত সাপেক্ষে বলে যাবে বলে জানান রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আবদুল ওয়াহাব ভুঞা।

এ ছাড়া এ ঘটনায় পৃথক তিনটি মা’মলা দায়ের হয়েছে। নি’হতের পরিবার, বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ ও পুলিশ বাদী হয়ে গতকাল শুক্রবার রাতে পৃথক মা’মলা তিনটি দায়ের করে। আজ শনিবার লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে গিয়ে শহিদুন্নবী জুয়েলকে পি’টিয়ে ও পু’ড়িয়ে হ’ত্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রংপুর রেঞ্জর ডিআইজি ও বিভাগীয় কমিশনার। পরিদর্শন শেষে পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের শহীদ আফজাল হোসেন মিলনায়তনে আলেম সমাজের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব কথা বলেন তারা।

রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আবদুল ওয়াহাব ভুঞা বলেন, ‘শহিদুন্নবী জুয়েলকে পি’টিয়ে ও পু’ড়িয়ে হ’ত্যার ঘটনাটি অত্যন্ত অমানবিক এবং দুঃখজনক। উ’ত্তেজিত উশৃঙ্খল জনতাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশ ফাঁকা গু’লি ছুঁ’ড়েও তাদের থামাতে পারেনি। এ ঘটনায় যারা জ’ড়িত তাদের প্রত্যেককে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।’

এ ঘটনায় জ’ঙ্গির সম্পৃক্ততা আছে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনেই কিছু বলা যাবে না। বিষয়টি তদন্ত করে বলতে হবে। তবে আমার মনে হচ্ছে এ ঘটনায় জ’ঙ্গি সম্পৃক্ততা নেই।’

তদন্ত প্রক্রিয়া কতদূর সম্পন্ন হয়েছে জানতে চাইলে পুলিশের রংপুর রেঞ্জর ডিআইজি দেবদাশ ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘তদন্ত প্রক্রিয়া অনেক দূর এগিয়েছে। এ ঘটনায় তিনটি মা’মলা দায়ের হয়েছে। এ সব মা’মলায় যাদের আমরা এরই মধ্যে শনাক্ত করতে পেরেছি, তাদের আ’সামি করা হয়েছে। বাকি আ’সামিদের আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।’

ঘটনাটিকে পরিকল্পিত হ’ত্যাকা’ণ্ড মনে করছেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি বলেন, ‘আমরা মনে করি এ ঘটনায় কারও না কারও ইন্ধন রয়েছে। না হলে এমন একটা তুচ্ছ ঘটনা, যেটা কিনা ঘটনাই নয়, সেটা নিয়ে এমন বড় কিছু হওয়ার কথাই নয়। যারাই থাকুক ঘটনার সামনে কিংবা পেছনে, তাদের খুঁজে বের করা হবে।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার মাগরিবের নামাজের আগে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের দরজা ভেঙে শহিদুন্নবী জুয়েলকে বের করে পি’টিয়ে হ’ত্যা করা হয়। পরে লা’শ নিয়ে বুড়িমারী বাঁশকল এলাকায় লালমনিরহাট-বুড়িমারী জাতীয় মহাসড়কের ওপর কাঠখড়ি ও পেট্রোল ঢেলে পু’ড়িয়ে দেয় বি’ক্ষুব্ধ জনতা।

নি’হত শহীদুন্নবী জুয়েল রংপুর শহরের শালবন মিস্ত্রি পাড়ার মৃ’ত আবু ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক লাইব্রেরিয়ান।

পাটগ্রামের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুন নাহার বলেন, ‘খবর পাওয়া মাত্রই আমি বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদে চলে যাই। আমার কথায় প্রথমে উত্তেজিত জনতা শান্ত ছিল। তখন লোকজনও অনেক কম ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে কিছু বহিরাগত লোকের আগমন ঘটে। তারা শান্ত পরিস্থিতিকে উত্তে’জিত করে তোলেন। পুলিশ ফাঁ’কা গু’লি করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। ফলে এ ঘটনা ঘটে।’

ad

পাঠকের মতামত