342605

তরুণীর ডায়েরিতে লেখা শ’ঙ্কাই সত্যি হলো

দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার পাঁচপুকুরিয়া শালবাগান থেকে হা’ত-পা বাঁ’ধা অবস্থায় রুখিয়া রাউত (২৩) নামে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এক তরুণীর ম’রদে’হ উ’দ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) ভোরে অ’জ্ঞাত হিসেবে তার ম’রদে’হটি উ’দ্ধার করা হয়। পরে রাতে জাতীয় পরিচয়পত্রের সূত্র ধরে তার নাম-ঠিকানা জানতে পারে পুলিশ।

এ ঘ’টনায় তিনজনকে আ’টক করা হয়েছে। আ’টকদের বুধবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে ১৬৪ ধারায় স্বী’কারোক্তিমূল’ক জ’বানব’ন্দি নেয়ার জন্য দিনাজপুর বি’জ্ঞ বি’চারকের আ’দালতে নেয়া হয়েছে।

নি’হত রুখিয়া রাউত রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের আদিবাসী পল্লী মিশনপাড়ার দিনেশ রাউত ও সুমতি রাউতের মেয়ে এবং রংপুর কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্স (ইতিহাস) শেষ বর্ষের ছাত্রী। তাকে গ’ণধ”র্ষণের পর নৃ’শংস’ভাবে হ’ত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ ও এলাকাবাসী।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার (৫ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রংপুরে মেসে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন রুখিয়া। বান্ধবীদের সঙ্গে একরাত থেকে পরদিন তার ফিরে আসার কথা ছিল। যাওয়ার সময় শেষবার মা সুমতিকে তিনি বলে যান যে, ‘মা রংপুর যাচ্ছি। চিন্তা করিস না। সকালে আবার ফিরে আসবো।’ এরপর থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। ওইদিন তিনি আর বাড়িতে ফিরে না আসায় উ’দ্বিগ্ন হয়ে পড়েন পরিবারের লোকজন।

এদিকে পরদিন মঙ্গলবার ভোরের দিকে বদরগঞ্জ উপজেলার লোহানীপাড়া ইউনিয়নের ঘুনুরঘাট এলাকার সীমান্তবর্তী পার্বতীপুর উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের পাঁচপুকুরিয়া শালবাগান থেকে অ’জ্ঞাত একটি ম’রদে’হ উ’দ্ধার করেন মধ্যপাড়া পুলিশ ফাঁ’ড়ির সদস্যরা। ওড়না দিয়ে তার হা’ত-পা’ ও গ’লা বাঁ’ধা ছিল। পরনে ছিল সালোয়ার কামিজ। তার দাঁতগুলোও ভা’ঙা ছিল। র’ক্তা’ক্ত ও ক্ষ’তবি’ক্ষত ছিল মুখ।

দু’র্বৃত্ত’রা নি’র্মমভা’বে তাকে হ’ত্যার পর অটোরিকশায় করে সেখানে ম’রদে’হ ফেলে গেছে বলে ধারণা পুলিশের। পরে মধ্যপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ম’রদে’হটি উ’দ্ধার করে ময়’নাতদ’ন্তের জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ম’র্গে পাঠায়।

ম’রদে’হের পরিচয় জানতে ওইদিন সন্ধ্যায় দিনাজপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একটি তদন্ত দল নি’হতের হাতের আঙুলের ছাপ নেয়। এতে জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে চেহারা মিলে যাওয়ায় তার পরিচয় নিশ্চিত হন তারা। পরে জানতে পারেন তিনি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিবারের মেয়ে। বাড়ি বদরগঞ্জে।

রুখিয়ার বাবা দিনেশ রাউত বলেন, একই এলাকার আব্দুল গফুরের ছেলে আনিছুল প্রায় সময় রুখিয়াকে উ’ত্ত্য’ক্ত করতো। একপর্যায়ে সে প্রেমের প্র’স্তাব দেয়। গত সোমবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে রুখিয়া তার ডায়েরিতে লিখে গেছে ‘আ’ত্মহ’ত্যা করতে গিয়ে কোনোভাবে বেঁ’চে গেলাম। আজ ৫/১০/২০২০ আনিছুল আমাকে দূরে কোথাও ডেকেছে। সেখানে সে নিজ হাতে আমাকে হ’ত্যা করতে পারে। আমার সব কিছুর জন্য আনিছুল দায়ী।’ বাড়ি থেকে যাওয়ার আগে কোনো এক সময় রুখিয়া ডায়েরিতে এসব লিখে রেখেছে। পড়ার টেবিল থেকে রুখিয়ার ডায়েরি উ’দ্ধার করে এসব তথ্য পাওয়া যায় বলে জানান দিনেশ রাউত।

বদরগঞ্জ উপজেলা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সমাজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি শ্যামল টুডু বলেন, গ’ণধ’র্ষ’ণের পর তাকে নৃ’শংসভা’বে হ’ত্যা করা হয়েছে। এ হ’ত্যাকা’ণ্ডের সঙ্গে জ’ড়িতদের শা’স্তি চাই। তা না হলে বৃহৎ আ’ন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

পার্বতীপুর থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) সোহেল রানা বলেন, হত্যার মূল পরি’কল্পনাকারী হিসেবে আনিছুল হক, অটোচালক রাজ মিয়া ও তাদের সহযোগী আশিকুজ্জামানকে বুধবার ভোরে নিজ বাড়ি থেকে আ’টক করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে আনিছুল ও রাজ বদরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের আদিবাসী পল্লী মিশনপাড়ার এবং আশিকুজ্জামান পার্বতীপুর উপজেলার পশারবাড়ি ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা।

তিনি আরও বলেন, আলামত হিসেবে বেশ কিছু জিনিসপত্র তাদের কাছ থেকে উ’দ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক বিজ্ঞাসাবাদে তারা হ’ক্যাকা’ণ্ডে জ’ড়িত থাকার কথা স্বী’কার করেছেন। ১৬৪ ধারায় স্বী’কারোক্তিমূ’লক জ’বানব’ন্দি নেয়ার জন্য আ’টকদের দিনাজপুর বিজ্ঞ বি’চারকের আদা’লতে নেয়া হয়েছে। ম’য়নাতদ’ন্তের প্রতিবেদন পেলে তাকে ধ’র্ষ’ণ করা হয়েছে কি-না তা জানা যাবে। সূত্রঃ জাগো নিউজ

ad

পাঠকের মতামত