341126

মৃত্যুর ২৪ দিন পর জীবিত বানিয়ে রেজিস্ট্রি!

মৃত্যুর ২৪ দিন পর এক নারীকে জী’বিত দেখিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়েছে জমির দলিল। সেই দলিল বাতিল চেয়ে মাম’লা করা হয়েছে আদালতে। পটুয়াখালীর বাউফলের সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের এ ঘটনায় হতবাক স্থানীয়রা।

জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর দুরারোগ্য ব্যাধিতে মা’রা যান উপজেলার চন্দ্রপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আলতাফ হোসেনের স্ত্রী নি:সন্তান রেহেনা বেগম (৫৭)। কিন্তু এর ২৪ দিন পর ২৮ নভেম্বর ওই নারীই জমির দলিল রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন বলে দাবি সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির।

ইউনিয়ন পরিষদের দেয়া মৃত্যু সনদ, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা জানায়, রেহেনা বেগমের স্বামী আলতাফ হোসেন মা’রা যান ২০১১ সালে। এরপর তার ওয়ারিশ হিসেবে জীবিত আছেন তিন চাচাতো ভাই মৃ’ত ফজলুল হক সিকদারের ছেলে আবুল হোসেন, একেএম শফিউল আলম ও মামুন হোসেন। কিন্তু রেহেনা বেগমের ওয়ারিশ না হলেও উপজেলার ভরিপাশা গ্রামের বাসিন্দা আলমগীর হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম নামে একজন দাবি করছেন- ২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর দুটি অছিয়তনামা দলিলে ৭৪ শতাংশ জমি তাকে নিবন্ধন করে দেন রেহেনা বেগম। এতে একই তারিখের ৬৯/২০১৯ নম্বরে দলিলে চন্দ্রপাড়া মৌজার ৫০ শতাংশ ও ৭০/২০১৯ নম্বর দলিলে ভরিপাশা মৌজার ২৪ শতাংশ জমির কথা উল্লেখ রয়েছে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় মদনপুরা ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর আবুল কালাম বলেন, ‘দলিল নিবন্ধনকালে দাতাকে ছবিযুক্ত স্বাক্ষর ও সাব-রেজিষ্ট্রারের সামনে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে হলফনামা দিতে হয়। রেহেনা বেগমের মৃত্যুর ২৪ দিন পরে কিভাবে দলিল রেজিস্ট্রি হলো তা বোধগম্য নয়। এমন জাল-জালিয়াতির শাস্তি হওয়া উচিত।

মৃ’তের ওয়ারিশ মামুন হোসেন বলেন, ‘মা’রা যাওয়ার আগে থেকে দেখভাল করলেও সম্প্রতি জানতে পারি সাইফুল নামে একজনকে ওই জমির অছিয়তনামা দলিল দেয়া হয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, রেহেনা বেগমের মৃত্যুর ২৪ দিন পরে দলিল রেজিস্ট্রি দেখানো হয়েছে। সম্প্রতি সাব-রেজিষ্ট্রারের কার্যালয় থেকে সইমোহর (নকল কপি) উঠিয়ে তা বাতিল চেয়ে পটুয়াখালীর বাউফল সহকারী জজ আদালতে মাম’লা করেছি।’

এ ব্যাপারে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘রেহেনা বেগম জী’বিত থাকাকালীন অছিয়তনামা দলিল দিয়েছেন। তিনি ওই ২০১৯ সালের ৫ ডিসেম্বর মা’রা যান।’ এ ব্যাপারে সাব-রেজিষ্ট্রার কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে দলিল নিবন্ধনের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি।’

তবে ওই সময়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব-রেজিস্ট্রার আবদুর রব বলেন, ‘জমি দাতাকে অবশ্যই সাব-রেজিষ্ট্রারের সামনে উপস্থিত হতে হয়। কোনোভাবেই মৃ’ত ব্যক্তির নামে দলিল নিবন্ধন হওয়ার সুযোগ নেই। তবে এই বিষয়টি কিভাবে ঘটেছে তা আমার জানা নেই।’ সূত্রঃ একুশে টিভি

ad

পাঠকের মতামত