339140

রাস্তায় মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর প্রসব, নাড়ী কা’টতে পুলিশের ছোটাছুটি

বুধবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০টা। জুরাইন রেল গেট ফ্লাইওভারের নিচে ৩০ বছরের এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারী ছটফট করছেন প্রসব বেদনায়। পথচারীরা এমন দৃশ্য দেখেও পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছেন। কাছেই জুরাইন রেল গেট ট্রাফিক পুলিশ বক্স। সেখানে দায়িত্বরত ছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক ওয়ারী জোনের পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যানবাহ) টিআই গোলাম মাওলা কবির। এক পথচারী এসে তাকে জানালেন ফ্লাইওভারের নিচে এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারী প্রসব যন্ত্রণায় ছ’টফট করছেন।

এমন কথা শোনার পরই তিনি দ্রুত হাজির হন সেই মা’নসিক ভারসাম্যহীন মায়ের কাছে। গিয়ে দেখেন ওই নারী ততক্ষণে বাচ্চা প্রসব করেছেন। কিন্তু নাড়ী রয়ে গেছে মায়ের শ’রীরের সঙ্গেই। তিনি সময় ক্ষেপণ না করে সাময়িকভাবে একটা বেষ্টনী দিয়ে ঘিরে দিলেন ওই স্থানটি। অতঃপর শ্যামপুর থানায় জরুরি কল করে তাদের দ্রুতগামী অপারেশন টিমকে ডাকলেন। কিন্তু রোগীর জীবনের কথা চিন্তা করে টিআই গোলাম মাওলা মুহূর্তের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজেই দৌড়ে গেলেন নিকটস্থ হাসপাতালে। ঘটনা শুনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত সাড়া দিয়ে তাদের জরুরি অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি চিকিৎসা টিমকে ঘটনাস্থলে পাঠান। চিকিৎসক টিম এসে বাচ্চাকে মায়ের গর্ভ থেকে আলাদা করলেন এবং জরুরি চিকিৎসা দিলেন।

অবশেষে সদ্য প্রসবকৃত বাচ্চা ও মাকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে মিডফোর্ট হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন ট্র্যাফিক পুলিশের টিআই গোলাম মাওলা কবির। পুলিশের এমন মানবিক কর্মকাণ্ডকে সাধুবাদ জানিয়েছেন উপস্থিত সাধারণ মানুষ।

সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে ঘটনাটি জানা গেছে। ঘটনাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টও করেছেন পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা।

ঘটনা সম্পর্কে সেই টিআই গোলাম মাওলা বলেন, ‘আমি যখন সকালের দিকে ডিউটিতে ছিলাম, তখন একজন এসে জানালো এক নারী ফাইওভারের নিচে বাচ্চা প্রসব করছে। তখন আমি দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখি ওই নারী ছ’টফট করছে বাচ্চা বেরিয়ে গেছে কিন্তু নারীর সাথে আ’টকে আছে। তখন দ্রুত আমি শ্যামপুর থানায় ফোন দেই। তারা একটা টিম পাঠায়। আমি তখন দৌড়ে হাসপাতালে যাই। সেখান থেকে মেডিক্যাল টিম নিয়ে আসি। এরপর নাড়ী কাটা এবং প্রসব পরবর্তী অন্যান্য কাজগুলো সম্পন্ন করা হয়। এরপর মা এবং বাচ্চাকে হাসপাতালে মিডফোর্ট হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই।’’

ad

পাঠকের মতামত