338836

না.গঞ্জে গিয়েছিলেন হাসি ফোটাতে, ফিরলেন লা’শ হয়ে

জেলা প্রতিনিধিঃ মায়াবী চেহারার হাস্যোজ্জ্বল টগবগে তরুণ শুকুর আলী নয়ন। ছোটবেলা থেকেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন। হৃদয়ে ছিল অনেক স্বপ্ন। মা-বাবা আর ছোট ভাইদের মুখে হাসি ফোটাতে চাকরির জন্য ছুটে যান নারায়ণগঞ্জ শহরে। কিন্তু সেই স্বপ্ন নিমিষেই শেষ হয়ে গেল। সেদিন মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে নিজের নামটা লিখিয়ে নিলেন মৃত্যুর মিছিলে।

শুকুর আলী নয়ন (২৫) লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মেহের আলী ও বুলবুলি বেগমের ছেলে। রোববার (৬ সেপ্টম্বর) বিকেলে উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের তালুক পলাশী গ্রামে তার লা’শ দা’ফন করা হয়। নয়ন নারায়ণগঞ্জে পোশাক কারখানায় এক বছর ধরে চাকরি করছিলেন।

পারিবারিক সূত্র জানায়, শুক্রবার রাতে মসজিদে ওই ভ’য়াবহ বি’স্ফোর’ণে শুকুর আলী নয়ন দ’গ্ধ হন। ছেলের বন্ধুর কাছ থেকে মুঠোফোনে সেই খবর পেয়ে রাতেই মা বুলবুলি বেগম আদিতমারী থেকে ঢাকার পথে রওনা হন। শনিবার সকাল ৬টার দিকে ঢাকায় পৌঁছান। ছুটে যান ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ও প্লাস্টিক সা’র্জারি ইউনিটে। সেখানেই অপেক্ষা করতে থাকেন। বিকেলে ছেলের মৃত্যু খবর পান বুলবুলি বেগম। রাতে ছেলের লা’শ নিয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি।

শুকুর আলী নয়নের বন্ধু শামীম বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় আমাদের গার্মেন্ট কারখানা ছুটি হয়। নয়ন বাসায় ফিরে নামাজ পড়তে এসেছিল। নামাজ পড়ে গিয়ে আমাদের একসঙ্গে খাবার খাওয়ার কথা। কিন্তু হঠাৎ খবর পেলাম বি’স্ফো’রণ, আ’গুন লেগেছে। গিয়ে দেখি লোকে লোকারণ্য। আমরা ওই মসজিদের মেসেই থাকি। তাকে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে ওর লা’শ ও মোবাইলটি পাই। এরপর ওর বাড়িতে কথা হয়। ওর ভগ্নিপতি ও মা শনিবার সকাল ৬টায় ঢাকায় পৌঁছালে লা’শ বুঝে পান। এরপর আমরা ১৫ হাজার টাকায় একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে লা’শ নিয়ে রওনা দিই।

নয়নের মা বুলবুলি বেগম বিলাপ করে বলেন, তার তিন ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিল বড় ছেলে নয়ন। সেও আল্লাহর ডাকে চলে গেল।

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, বি’স্ফো’রণে নি’হতদের দা’ফনের জন্য ২০ হাজার টাকা অনুদান হিসেবে প্রদান করা হবে। সেই সঙ্গে পরিবারটিকে কীভাবে সাহায্য করা যায়, সেটা ভেবে দেখা হচ্ছে।

ad

পাঠকের মতামত