338605

যুবলীগের আসাদুলের ভাইসহ আরও দুইজন আ’টক

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলী শেখের ওপর হা’মলার ঘটনায় আরও দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। পুলিশের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, শনিবার বিকালে ঘোড়াঘাট উপজেলা সংলগ্ন সাগরপুর গ্রামের নিজের বাড়ি থেকে আশরাফুল ইসলাম ওরফে শাওন (৪০) নামে এক জেনারেটর ও আইপিএস ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেছে ঘোড়াঘাট থানার পুলিশ। ওই ঘটনায় গ্রে’ফতার হওয়া প্রধান সন্দেহভাজন যুবলীগের বহি’ষ্কৃত নেতা আসাদুল ইসলামের ভাই আশরাফুল।

আসাদুলের বোন রত্না বেগম বলেন, বিকাল পাঁচটার দিকে তাঁর ভাইকে শাওনকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায় ঘোড়াঘাট থানার পুলিশ। এ ছাড়া আজ বিকালে ইউএনও কার্যালয়ের মালি মো. সুলতানকে (৩২) উপজেলা কমপ্লেক্স এলাকা থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এর আগে শুক্রবার দিনাজপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ওই মামলার তদন্তে যাকেই প্রয়োজন হবে তাঁকেই জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। এদিকে ওই মামলার দুই অন্যতম সন্দেহভাজন নবীরুল ইসলাম ও সান্টু কুমার বিশ্বাসকে সাত দিনের রি’মান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

শনিবার দিনাজপুরের আমলি আদালতে নিয়ে পুলিশ তাদের ১০ দিনের রি’মান্ড চাইলে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শিশির কুমার বসু সাত দিনের রি’মান্ড মঞ্জুর করেন। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত প্রধান সন্দেহভাজন আসাদুলকে আদালতে তোলা হয়নি।

প্রসঙ্গত, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমকে হ’ত্যাচে’ষ্টার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে র্যা ব ছয়জনকে আ’টক করে। এদের মধ্যে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে যুবলীগ নেতা আসাদুল ইসলামসহ তিনজনকে গ্রে’ফতার দেখানো হয়। এ ঘটনার পর আসাদুল ইসলামকে যুবলীগ থেকে বহি’ষ্কার করা হয়েছে।

তবে ওই ঘটনার পর বহি’ষ্কৃত অপর যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলমসহ বাকি তিনজনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। র্যা ব জানিয়েছে, আসাদুল ইসলাম এ ঘটনায় জড়িত বলে র্যা বের কাছে স্বীকার করেছে। আর ঘটনার সময় নবীরুল ইসলাম ও সান্টু কুমার বিশ্বাসও তার সঙ্গে ছিল বলে জানিয়েছে আসাদুল।

র্যা ব জানায়, আসাদুল দাবি করেছে- চু’রির উদ্দেশ্যে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ঘরে ঢুকেছিল। এ সময় বাধা দেয়ায় তার (ওয়াহিদা খানমের) ওপর হা’মলা করা হয়। পরে তার বাবাকেও মার’ধর করে। শুক্রবার রাতে র্যা ব-১৩ (রংপুর) অধিনায়ক রেজা আহমেদ ফেরদৌস তার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য দেন।

তিনি বলেন, যদিও আ’সামিরা র্যা বের কাছে চুরি’র ঘটনা বলছে, তবে এর বাইরেও কোনো ঘটনা আছে কি না, তা তদন্ত করছে র্যা পিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন। ঘটনায় ব্যবহৃত আলামত হিসেবে হা’তুড়ি, মই এবং একটি লাল শার্টসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র সিআইডির হেফাজতে রয়েছে।

সেগুলো মা’মলার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ বলে র্যা বের ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এদিকে মু’মূর্ষু অবস্থায় ইউএনওকে ঢাকায় আনার পর বৃহস্পতিবার রাতেই অ’স্ত্রোপ’চার করা হয়। রাতেই তার জ্ঞান ফিরে আসে। তিনি স্বামীকে চিনতে পেরেছেন, কথাও বলেছেন।

এই হাম’লার ঘটনায় রংপুর বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) জাকির হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্যা সদস্যরা হলেন পুলিশের রংপুর রেঞ্জের একজন অতিরিক্ত ডিআইজি ও দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ মাহমুদ। কমিটিকে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে র্যা বের ওই কর্মকর্তা বলেন, প্রথমে ঘটনায় জড়িত সন্দহে ছয়জনকে আ’টক করা হয়। এরা হল- আসাদুল ইসলাম (৩৫), নবীরুল ইসলাম (৩৪), সান্টু কুমার বিশ্বাস (২৮), জাহাঙ্গীর আলম (৩৮), রানা মাসুদ (৩৫) ও নাহিদ হোসেন পলাশ (৩৭)।

আসাদুল হকের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ওই ঘটনায় যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম (৩৮), রানা মাসুদ (৩৫) ও নাহিদ হোসেন পলাশ (৩৭)-এর কোনো সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বাকি তিনজনকে গ্রে’ফতার দেখানো হয়।

ad

পাঠকের মতামত