338255

লা’শ চু’রি ঠেকাতে তিন মাস রাত জেগে কবর পাহারা দেবে পরিবার

বজ্রপাতে মৃ’ত ব্যক্তির ম’রদে’হ, ক’ঙ্কাল বা অস্থি কবিরাজী চিকিৎসাতে অনেক মূল্যবান- এই মতকে বিশ্বাস করে বজ্রপাতে নি’হত কলেজ শিক্ষার্থী দা’ফনকৃত ম’রদে’হের অস্থি চু’রি যেতে পারে ভেবে রাত জেগে কবর পাহারা দিচ্ছেন স্বজনরা। তিন মাস ধরে এই পাহারা চলবে বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।

কবরটি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা গ্রামের ইউনিয়নের ঘোগারকুটি গ্রামের অধিবাসী আরিফুল ইসলামের। সফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজে এইচএসসি পরীক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম (১৮) গত মঙ্গলবার (১ আগষ্ট) সকাল ৯টার দিকে বৃষ্টি শুরু হলে নীলকোমল নদী থেকে সেচের জন্য পানি তোলা মেশিন বন্ধ করতে গিয়ে বজ্রপাতে মা’রা যায়। পরে ঘোগারকুটি এলাকার বাড়ির পাশে তার ম’রদে’হ দা’ফন করা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফুলবাড়ী থানায় একটি ইউডি মা’মলা দায়ের করা হয়।

এদিকে মৃ’ত আরিফুলের মামা হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, তার বোন রাহিলা বেগমের সাথে সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের কুমোরপর কদমেরতল এলাকার শহিদুল ইসলামের বিয়ে হয়েছিল। এই দম্পতির ৩ ছেলেমেয়ের মধ্যে আরিফুল ছিল সবার বড়। এ অবস্থায় স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে সন্তানদের নিয়ে ঘোগারকুটি গ্রামে পিতা আজগার আলীর বাড়িতে চলে এসে বসবাস করতে থাকেন। রাজমিস্ত্রীর যোগালীসহ নানান কায়িক শ্রমের কাজ করে ৩ সন্তানকে লালনপালন করতে থাকেন। এরপর আরিফুল এসএসসি পাশ করার পর রাহিলা বেগম তার ৩ সন্তানকে পিতার বাড়িতে রেখে কাজ নিয়ে চলে যান জর্ডানে। ফলে নানার বাড়িতে থেকে লেখাপড়াসহ লালিত পালিত হচ্ছিলেন আরিফুলসহ ৩ ভাইবোন।

তিনি আরও জানান, তার বোন রাহিলা বেগম জর্ডান থেকে টাকা পাঠিয়ে তাদের বাড়ির সাথে ১৬ শতাংশ জমি কিনেছেন বাড়ি করার জন্য। সেই জমির একপাশে আরিফুলের মরদেহ দা’ফন করা হয়েছে।

মামা হাফিজুর রহমান আরও জানান, তারা যুগ যুগ ধরে শুনে আসছেন কবিরাজী চিকিৎসায় বজ্রপাতে নি’হত ব্যাক্তির ম’রদে’হ, কঙ্কাল বা অস্থি অত্যন্ত মূল্যবান। এ কথা তার বিশ্বাস করেন। এজন্য লা’শ চু’রি ঠেকাতে কবরের পাশে তাঁবু টানিয়ে তার নিচে চৌকি বিছিয়ে রাত জেগে পালাক্রমে কবর পাহারা দিচ্ছেন স্বজনরা। এই পাহারা ৩ মাস চলবে।

এ প্রসঙ্গে কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানান, কবর পাহারা দেওয়ার ঘটনাটি শুনেছেন। প্রচলিত যে ধারণায় তারা কবর পাহারা দিচ্ছেন তার কোন ভিত্তি নেই। কুসংস্কার মাত্র।

ad

পাঠকের মতামত