
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট অবমাননার শাস্তি এক রুপি!
আদালত অবমাননার দায়ে ভারতীয় আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণকে এক টাকা জরিমানা করেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার (৩১ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্রের বেঞ্চ জানায়, আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণকে আদালত অবমাননার দায়ে শাস্তি হিসাবে এক টাকা জরিমানা দিতে হবে। যদি সেই টাকা আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রির কাছে জমা না দেন, তাহলে প্রশান্ত ভূষণের ৩ মাসের কারাদণ্ড হবে। এর সঙ্গে ৩ বছরের জন্য ওকালতিও নিষিদ্ধ হওয়ার রায় শোনান বিচারপতিরা। এদিকে এই রায় শোনার পর প্রশান্ত ভূষণ জানান, সবার মত নিয়েই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।
উল্লেখ্য, প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে টুইট করেছিলেন প্রশান্ত ভূষণ। সম্প্রতি প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে নাগপুরে একটি বাইকে চড়ার ছবি সোশ্যাল মিডিয়া ভাইরাল হয়। এই ছবি নিয়ে কটাক্ষ করেন প্রশান্ত ভূষণ। পাশাপাশি, মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে আদালতের কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
এরপর ভারতের সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে প্রশান্ত ভূষণের বিরুদ্ধে। আদালত অবমাননা মামলায় গত ১৫ আগস্ট প্রশান্ত ভূষণকে দোষী সাব্যস্ত করে সুপ্রিম কোর্ট। ক্ষমা চাওয়ার জন্য তাকে সময় দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশান্ত ভূষণ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ক্ষমা অন্তর থেকে চাওয়া উচিত। যদি আন্তরিক না হয়ে ক্ষমা চাই তাহলে অন্তরাত্মার অবমাননা হবে। সুপ্রিম কোর্টের অবমাননা হবে।
তিনি বলেন, তিনি বিচার ব্যবস্থার উন্নতির জন্যই এই মন্তব্য করেছিলেন। যদি তার মন্তব্যকে আদালত অবমাননা হিসাবে ধরা হয়, তাহলে ব্যক্তি স্বাধীনতা খর্ব হয় বলে জানান প্রশান্ত ভূষণ।
এই পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টেরও পর্যবেক্ষণ, বাক স্বাধীনতা সুপ্রিম নয়। এ দিন গান্ধীজির উক্তি তুলে বিচারপতি মিশ্র জানান, ক্ষমা চাওয়া কোনও অপরাধ নয়। যদি আপনি গান্ধীর পথ অনুসরণ করেন, তিনি বরাবরই ক্ষমা চাওয়ার পক্ষে। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, কাউকে যদি তুমি আঘাত করো, অবশ্যই ক্ষমা চাওয়া উচিত। তাতে তিনি কখনও ছোটো হয়ে যান না।
বিচারপতি অরুণ মিশ্রের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, শুধুই প্রশান্ত ভূষণকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য সময় দেওয়া হয়নি, তাকে দুঃখপ্রকাশ করানোর জন্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু তিনি ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন, সে ক্ষেত্রে আদালতের মর্যাদা হানি হয়েছে।