324881

ছেলে ও পর’কিয়া প্রেমিকের সহায়তায় স্বামীকে হ’ত্যা করেছিলেন স্ত্রী

নিউজ ডেস্ক।। বগুড়ার সোনাতলায় মরিচ ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামকে (৫০) শ্বা’সরো’ধে হ’ত্যা’র দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন গৃহবধূ রেহেনা বেগম, তার প’রকী’য়া প্রেমিক মহিদুল ইসলাম, ছেলে জসিমসহ আরও এক আ’সা’মি। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আ’দালতে’র ‘বিচা’রক আছমা মাহমুদ তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবাববন্দি গ্রহণ করেন।

এ তথ্য নিশ্চিত করেন মা’মলা’র তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সোনাতলা থানার পুলিশ পরিদর্শক (ত’দন্ত) জাহিদ হোসেন মন্ডল। তিনি বলেন, গতকাল শনিবার দুপুরে আ’সামি’দের আ’দাল’তে হাজির করলে তারা হ’ত্যাকা’ণ্ডের বর্ণনা দিয়ে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

আ’দাল’তে পৃথকভাবে জবানবন্দি প্রদান করেছেন নি’হ’ত রফিকুল ইসলামের স্ত্রী রেহেনা খাতুন (৩৭), তার প’রকী’য়া প্রেমিক একই গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে মহিদুল ইসলাম (৪৭), ছেলে জসিম (১৮) ও ভাগ্নে তেকানিচুকাইনগর গ্রামের করিম আকন্দের ছেলে শাকিলকে (২১)।

জবানবন্দিতে রেহেনা বলেন,প’রকী’য়া প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বাঁধতেই রফিকুল ইসলামকে হ’ত্যা’র পরিকল্পনা করেন তিনি। আর এ কাজে তিনি প্রেমিক মহিদুল ইসলাম, নিজের ছেলে জসিম এবং বোনের ছেলে শাকিলকে ব্যবহার করেন।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার নিখোঁজের ১১ মাস পর মরিচ ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামের বস্তাবন্দী লা’শ উ’দ্ধার করে পুলিশ। তার বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে নয়াপাড়া পুলের ভাটি নামক স্থানে রেল সড়ক সংলগ্ন ধানের জমি খুঁড়ে তার লা’শ উ’দ্ধার করা হয়।

যেভাবে ঘটে হ’ত্যার ঘটনা : গত বছরের ১৪ জুন হাট থেকে মরিচ বিক্রি করে রাতে বাড়ি ফেরে রফিকুল ইসলাম। পরিকল্পনা মতো খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে রাতে খেতে দেয় স্ত্রী রেহেনা বেগম। এরপর রফিকুল খাবার খেয়ে শুয়ে পড়লে স্ত্রী রেহেনা বেগম, তার বোনের ছেলে শাকিল হোসেন, প্রেমিক মহিদুল ইসলাম ও তা ছেলে জসিম মিলে শ্বা’সরোধ করে তাকে হ’ত্যা করে। লেখাপড়া নিয়ে বকা খাওয়ায় জসিম বাবার ওপর বি’রক্ত ছিল। সে সুযোগ নিয়েই মা তাকে নিজের দলে নেয়।

এরপর গভীর রাতে রফিকুল ইসলামের লা’শ বস্তাবন্দী করে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে নয়াপাড়া পুলের ভাটি নামক স্থানে রেল সড়ক সং’লগ্ন নিজের ধানের জমিতে নিয়ে গিয়ে পুঁতে রাখে প’রকী’য়া প্রেমিক মহিদুল ইসলাম, জসিম ও শাকিল।

পরের দিন অর্থাৎ গত ২০১৯ সালের ১৫ জুন মরিচ ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম নিখোঁজ হিসেবে সোনাতলা থানায় জিডি করেন তার ভাই শফিকুল ইসলাম। বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। কিন্তু কোনো কুল কিনারা করতে পারছিল না।

সম্প্রতি রেহেনা বেগমের বাড়িতে তার বোন ফতে বেগম বেড়াতে আসেন। এসময় তার ভ্যানিটি ব্যাগের মধ্যে নিখোঁজ রফিকুল ইসলামের মোবাইল দেখতে পায় তার ছোট ছেলে ওয়াসিম। বিষয়টি নিয়ে চাচাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। বিষয়টি জানতে পেয়ে বোনের বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় বড় বোন ফতে বেগম। এতে আরও স’ন্দেহের সৃষ্টি হয় রফিকুল ইসলামের ছেলে ও তার চাচাদের মধ্যে। এরপর বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য ও থানা পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ প্রেমিক মহিদুল ইসলামকে আ’টক করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে রফিকুল ইসলাম হ’ত্যার চা’ঞ্চল্য’কর তথ্য বেরিয়ে আসে।

শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে আ’ট’ক মহিদুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে লা’শ উ’দ্ধারে নামে পুলিশ।

বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টা ধরে খোঁড়াখুড়ির পর দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে রফিকুলের পঁচে যাওয়া লা’শে’র সন্ধান মেলে। এ সময় রাণীরপাড়াসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের হাজার হাজার লোক সেখানে জড়ো হন। লা’শ’টি উদ্ধারের পর ম’য়না’তদন্তের জন্য সেটি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

শিবগঞ্জ ও সোনাতলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার কুদরত-ই খুদা শুভ জানান, রফিকুল ইসলামের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার জিডিটি এখন হত্যা মা’মলা’য় রূপান্তর করা হবে। বড় ভাই শফিকুল ইসলামকে বাদী করে মা’মলা’টি দা’য়ের করা হবে।

মা’মলা’র তদ’ন্তকারী কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন মন্ডল জানান, আদালতে জবানবন্দি প্রদানের পর আ’সামিদের জেল হা’জতে প্রেরণ করা হয়েছে। উৎস: দৈনিক আমাদের সময়।

ad

পাঠকের মতামত