
লাগামহীন ভাবে বাড়ছে গরুর মাংসের দাম
নিউজ ডেস্ক।। প্রতি বছর রমজানের শুরুতে সিটি করপোরেশন ও ব্যবসায়ীরা বৈঠক করে গরুর মাংসের দাম নির্ধারণ করা হলেও্ চলতি বছর তার ব্যত্যয় ঘটেছে। ফলে লাগামহীন বাড়ছে গরুর মাংসের দাম।
রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গরু ও মহিষের মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫৭০ থেকে ৫৮০ টাকা।
খাসির মাংস কেজি ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে ৭৫০ থেকে ৭৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ছাগলের মাংস কেজি ৭৫০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭২০ টাকা।
সব মিলিয়ে এখন আর সীমিত আয়ের পরিবারে গরুর মাংস কেনার সাধ্য নেই। যদিও অনেকে গরুর মাংস পছন্দ করেন। অতিথি আপ্যায়নে অনেক পরিবারকে সাধ্য না থাকলেও মাংস কিনতে হয়।
চার-পাঁচ বছর আগেও নাগালের মধ্যেই ছিল গরুর মাংসের দাম। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ সালে দেশে গরুর মাংসের কেজিপ্রতি গড় দাম ২৭৫ টাকা ছিল। তখন ফার্মের ব্রয়লার মুরগির গড় দাম ছিল কেজিপ্রতি ১৩৭ টাকা। ২০১৮ সালে গরুর মাংসের গড় দাম বেড়ে কেজিপ্রতি ৪৩০ টাকা হয়। আর মুরগির দাম কমে হয় কেজিপ্রতি ১৩১ টাকা। এখন বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৬০০ টাকা। আর ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৩০ টাকা।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে ৭৫ লাখ ১৪ হাজার টন মাংস উৎপাদিত হয়েছে, যা মোট চাহিদার চেয়েও বেশি।
খামারমালিকদের সমিতি দাবি করে, দেশে এখন চাহিদা অনুযায়ী গরুর মাংস উৎপাদিত হচ্ছে। এ কারণ দেখিয়ে হিমায়িত মাংস আমদানির উদ্যোগের বিরোধিতা করেছে তারা। সরকারও আমদানিতে আগ্রহ দেখায়নি। কিন্তু গরুর মাংসের দাম আর কমছে না।
প্রতিবছর রোজা শুরুর আগে সিটি করপোরেশন ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে বৈঠকে গরুর মাংসের দাম ঠিক করে দেওয়া হয়। গত বছর প্রতি কেজি মাংসের দাম ঠিক হয়েছিল ৫২৫ টাকা। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এবারও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল। তবে দাম নির্ধারণ হয়নি।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান বলেন, ‘গরুর মাংসের দাম নির্ধারণ প্রক্রিয়াধীন আছে। কারণ এখন যে অবস্থা তাতে মাংস ব্যবসায়ী ও সংবাদকর্মীদের সঙ্গে উন্মুক্ত আলোচনা করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। এসব বিষয়ে ২২ এপ্রিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বরাবর একটি চিঠি পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় থেকে যেভাবে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে তা মানা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবছর দাম নির্ধারণের বিষয়টি দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে করা হতো। উত্তরেও আমরা সেভাবে কাজ করতাম। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তা সম্ভব হয়নি।’