319157

অজ্ঞাত রোগে মারা যাচ্ছে দেশের হাজার হাজার মুরগি!

ডেস্ক রিপোর্ট।। ময়মনসিংহের ত্রিশালে অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে লেয়ার মুরগির খামারে হাজার হাজার মুরগি মরে যাচ্ছে। রোগ নির্ণয় করতে না পারায় খামারে মুরগির মৃত্যু থামছে না। এতে বিপাকে খামারিরা। অনেক খামারে লাখ লাখ টাকার মুরগি মরে যাওয়ায় পথে বসেছেন খামার মালিকরা। এতে ধ্বংসের পথে লেয়ার মুরগির শিল্প। ত্রিশাল উপজেলার মোক্ষপুর, মঠবাড়ী ও সদর ইউনিয়ন এলাকার খামারিরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

উপজেলার মোক্ষপুর ইউপির নিজবাখাইল গ্রামের রূপসী বাংলা এগ্রো কমপ্লেক্সের মালিক ইব্রাহীম খলিল জানান, ২০০৯ সালে ২ হাজার লেয়ার মুরগি নিয়ে খামার শুরু করেছিলেন। প্রথম থেকেই সীমিত লাভ দিয়ে ব্যবসা করে আসলেও ধুকে ধুকে চলে আসছিল। পরের বছর পরিধি বাড়িয়ে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার লেয়ার মুরগির খামার করেন। এর মধ্যে ২ হাজারের অধিক মুরগি ডিম দিচ্ছিল। এভাবেই ২০১৩ সালের দিকে পরিধি আরো বাড়িয়ে আরো দুইটি নতুন সেড নির্মাণ করে ৪টি সেডে প্রায় ৯ হাজারের অধিক লেয়ার মুরগির খামার চালিয়ে আসছিলেন।

চলতি বছরের মাসের প্রথম দিকে অজ্ঞাত রোগের হানায় গত কয়েক দিনে তার প্রায় ৬ হাজার মুরগি মারা গেছে। বর্তমানে তার পুঁজিসহ সব শেষ হয়ে গেছে। লেয়ার মুরগি মরে খামারি ইব্রাহীম খলিলের প্রায় ৪০ লাখ টাকার অধিক ও নজরুল ইসলাম ঢালীর প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তারা। ত্রিশাল উপজেলার সদর ইউনিয়নে চিকনা গ্রামের স্বাধীন পোল্ট্রি খামারের মালিক নজরুল ইসলাম ঢালী ২ হাজারের অধিক লেয়ার মুরিগ পালন করে আসছিলেন। এতে প্রায় ২ হাজার মুরগি ডিম দিচ্ছিল। একই রোগে গত ১৫ দিনে তার প্রায় এক হাজারের অধিক মুরগি মারা গেছে।

ত্রিশাল উপজেলার মোক্ষপুর, মঠবাড়ী ও সদর ইউনিয়নে গত এক মাসে অজ্ঞাত রোগে বেশ কয়েকটি পোলট্রি খামারের সব মুরগি মরে সাফ হয়ে গেছে। প্রতিদিন কোনো না কোনো খামারের মুরগি মারা যাচ্ছে। অথচ কোনো খামারি এবং উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের কর্মকর্তারা মুরগির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলতে পারছেন না।

প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৪৫০টি লেয়ার ও ৫০০টিরও বেশি ব্রয়লার মুরগির খামার রয়েছে। ভাইরাসজনিত কারণে কয়েক দিনের মধ্যে অনেকগুলো খামারের মুরগি মারা গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের মধ্যে মঠবাড়ী ইউপির বাদামীয়া গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ১ হাজারের অধিক, সদর ইউপির চিকনা গ্রামের লিটন মিয়ার ১ হাজার, একই গ্রামের আ. মান্নানেরও ১ হাজারের অধিক, সদর ইউপির পাঁচপাড়া গ্রামের হাবিবুল্লাহ’র দেড় হাজার, মঠবাড়ী ইউপির অলহরি খারহর গ্রামের হারুনুর রশিদের দেড় হাজার, একই গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের ১ হাজার ২০০, একই গ্রামের সুরুজ মিয়ার ১ হাজারের অধিক লেয়ার মুরগি মারা যায়।

এক দিকে অঘোষিত লকডাউনে মুরগির ডিমের বাজার ছিল মন্দা, অপরদিকে খাদ্যেরও ছিল তীব্র সংকট। তার ওপরে আবার অজ্ঞাত ভাইরাসের হানায় খামারিরা আজ পুঁজি হারিয়েছেন। ব্যাংক, এনজিও থেকে অনেক খামারি লোন নিয়ে ব্যবসা করলেও এখন ঋণ শোধের চিন্তায় কাটছে তাদের দিন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হারুনুর রশিদ বলেন, খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে, খামারিদেরকে বিভিন্নভাবে পরামর্শও দেয়া হচ্ছে। তবে উপজেলার সব খামারিদের ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছে। প্রান্তিক পর্যন্ত সেবা পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছি। উৎস: বাংলাদেশ টুডে।

ad

পাঠকের মতামত