315494

উদ্বিগ্ন খালেদা জিয়া

নিউজ ডেস্ক।। পারিবারিক পরিবেশে মানসিকভাবে স্বস্তি বোধ করছেন খালেদা জিয়া। তার শারীরিক সুস্থতা বেশ ধীরগতি। তবে খালেদা জিয়া দেশে ক’রো’না ভাইরাস সংক্রমণের খবরে মানুষের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন তার এক চিকিৎসক। ওই চিকিৎসক জানান, রাজধানীর গুলশানের ভাড়াবাড়ি ফিরোজায় চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসনের এ উদ্বেগ তার মনের ওপর প্রভাব পড়েছে।

খালেদা জিয়ার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের তত্ত্বাবধানে ছয় সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড চিকিৎসা দিচ্ছে। এরা হলেনÑ অধ্যাপক ডা. এফএফ সিদ্দিকুর রহমান, অধ্যাপক ডা. রাজিবুল আলম, অধ্যাপক ডা. আবদুল কুদ্দুস, অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান, অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন ও ডা. মামুন।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ম্যাডাম এখন কোয়ারেন্টিনে আছেন। এখন প্রধান কাজ হলো তাকে একা থাকতে দেওয়া। উনি আগের চেয়ে মানসিকভাবে ভালো আছেন। তবে দীর্ঘদিন ধরে যথাযথ চিকিৎসা না পাওয়ায় তার পুরনো রোগগুলো জটিল আকার ধারণ করেছে।

লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ম্যাডামের চিকিৎসা চলছে। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে। ম্যাডামকে পূর্ণাঙ্গ সুস্থ করতে দীর্ঘ সময় লাঘবে এবং আধুনিক চিকিৎসার প্রয়োজন হবে বলে জানান এই চিকিৎসক।

গত ২৫ মার্চ বিকালে সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গুলশানে ‘ফিরোজা’য় আসেন খালেদা জিয়া। বাসায় আসার পর ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে কোয়ারেন্টিনে তার চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়। তার সাথে নার্সসহ সেবা প্রদানকারী কয়েকজন সদস্যও সেলফ কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন।

৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়া রিউমাটিজ আর্থরাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখ ও দাঁতের নানা রোগে আক্রান্ত। ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমের একাধিক সদস্যের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার হাত-পায়ের ব্যথাটা বেশি। তিনি হাঁটতে পারেন না। ব্যথা উপশমের জন্য গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে থেরাপি দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এতে উনি আরাম অনুভব করছেন।

একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জানান, ক’রো’না ভা’ইরা’সের সংক্রমণে দেশের এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খবর পত্রিকা-পত্রিকা দেখে ওনার (খালেদা জিয়া) মন খারাপ হয়ে যায়। দেশের মানুষ কীভাবে বাঁচবে, গরিবদের কী হবে, তাদের চাকরি থাকবে কিনা ইত্যাদি বিষয়ে উনি উদ্বিগ্ন। এতে ওনার মনের ওপর চাপও পড়ছে। তবে কারাবন্দি অবস্থা থেকে মুক্ত বাতাস এবং পরিবারের সদস্যদের সান্নিধ্যে মানসিকভাবে সুস্থ হয়ে উঠছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। কোয়ারেন্টিন শেষ হলে বিএনপি চেয়ারপারসনের পুরোদমে চিকিৎসা শুরু হবে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গৃহকর্মী ফাতেমা ছাড়াও একজন নার্সকে তার দেখভালের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা নিয়মিত তার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর রাখছেন। তাদের পরামর্শে নেতাকর্মীসহ কারও সঙ্গে এই মুহূর্তে দেখা-সাক্ষাৎ করছেন না। পরিবারের দু-একজন সদস্য তার সঙ্গে দেখা করতে পারেন। সেটাও নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে।

খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব আবদুস সাত্তার বলেন, কোয়ারেন্টিনে থাকলেও টিভি ও সংবাদপত্রের মাধ্যমে তিনি দেশের সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর রাখছেন। দেশের এই মহাসংকটের সময়ে দেশবাসী ও দলের নেতাকর্মীদের সচেতন সতর্ক থাকার পাশাপাশি অসহায়, গরিব, দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

ঢাকায় থাকা ভাইবোন, তাদের ছেলেমেয়ের সান্নিধ্যও পাচ্ছেন খালেদা জিয়া। ফলমূল ছাড়া বাইরের কোনো খাবার খাচ্ছেন না। যেটুকু খাবার তিনি খাচ্ছেন তা বাসায় রান্না হচ্ছে। বোনের বাসা থেকেও আসে পছন্দের খাবার। খালেদা জিয়ার বাড়ির কাজকর্ম পুরোটাই করছেন গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম, যিনি খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারে ছিলেন। উৎস: দৈনিক আমাদের সময়।

ad

পাঠকের মতামত