298625

কোনো দুধেই আর বাধা থাকলো না

মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান থাকায় বিএসটিআইয়ের লাইসেন্সপ্রাপ্ত পাস্তুরিত তরল দুধের ১১ কোম্পানি বিষয়ে হাইকোর্ট যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল তা বাতিল করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।বুধবার (৩১ জুলাই) চেম্বার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানের আদালত ‍হাইকোর্টের দেয়া ৫ সপ্তাহের উৎপাদন ও বিক্রির নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করেন। আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান থাকায় ২৮ জুলাই বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ১৪ কোম্পানির পাস্তুরিত দুধের উৎপাদন, বিপণন পাঁচ সপ্তাহের জন্য বন্ধে আদেশ দিয়েছিলেন।

এ আদেশ স্থগিত চেয়ে ২৯ জুলাই চেম্বার বিচারপতির আদালতে মিল্ক ভিটার আবেদনের পর হাইকোর্টের আদেশ আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন আদালত। আর ৩০ জুলাই ফার্ম ফ্রেশ ও প্রাণ মিল্কের আবেদনের পর হাইকোর্টের আদেশ পাঁচ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।এ আদেশের ফলে ১৪টি ব্র্যান্ডের দুধ উৎপাদন ও বিপণনে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

লাইসেন্সধারী সব ব্র্যান্ডের পাস্তুরিত দুধে অ্যান্টিবায়োটিক ও ডিটারজেন্টসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান আছে কিনা সে বিষয়ে চারটি প্রতিষ্ঠানের ল্যাবের পরীক্ষা প্রতিবেদন নিয়ে শুনানি শেষে ২৮ জুলাই হাইকোর্ট ওই আদেশ দেন।হাইকোর্টে বিএসটিআইর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার সরকার এম আর হাসান। এ বিষয়ে রিট আবেদনকারীর পক্ষে ব্যারিস্টার অনীক আর হক, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে ব্যারিস্টার মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম শুনানি করেন।

গত ১৪ জুলাই এক আদেশে বিএসটিআইয়ের লাইসেন্সধারী সব ব্র্যান্ডের পাস্তুরিত দুধে অ্যান্টিবায়োটিক ও ডিটারজেন্টসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান আছে কিনা, তা এক সপ্তাহের মধ্যে পরীক্ষা করতে চারটি ল্যাবকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।চারটি ল্যাব হলো- ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ, ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) ও সাভারের বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণাগার।

এরপর চার সংস্থার প্রতিবেদন হাতে পায় বিএসটিআই। এগুলো আদালতে জমা দেয় সরকারি সংস্থাটি।এছাড়া নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের তৈরি করা (বিসিএসআইআর ও পরমাণু শক্তি কমিশনের ল্যাবে পরীক্ষা করা) ১১ কোম্পানির দুধ পরীক্ষার প্রতিবেদনও আদালতে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে উপস্থাপন করা হয় ঢাবি অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের প্রতিবেদনও।

গত বছরের ১৬ মে বাণিজ্যিকভাবে পাস্তুরিত দুধ সম্পর্কে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিস রিসার্চ, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) একটি গবেষণা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।গণমাধ্যমে প্রকাশিত ওইসব প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. তানভীর আহমেদ।

এই রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর ২১ মে এক আদেশে বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের নিয়ে কমিটি গঠন করে বাজারে থাকা পাস্তুরিত দুধ পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দিতে খাদ্য ও স্বাস্থ্যসচিব এবং বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ আদেশের পর গত ২৫ জুন বিএসটিআইয়ের আইনজীবী আদালতে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

ad

পাঠকের মতামত