297867

বালিশ কেনা-তোলার খরচ শুনে হাসলেন দুই বিচারপতি

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের গ্রিন সিটি আবাসিক পল্লীর আসবাব কেনা ও তোলায় দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন চেয়েছে হাইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটি শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে হবে। অবকাশকালীন ছুটি ২৩ মে শুরু হয়ে শেষ হবে ১৫ জুন।

ওই ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের আবেদন জানিয়ে করা এক রিটের শুনানিতে সোমবার বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর যুগ্ম-বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছে। আদালত বলেছেন, “যেহেতু এ ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, আমরা ওই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দেখতে চাই। এরপরই এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশ দেব।”

রিটের পক্ষে শুনানি করেন সৈয়দ সাইয়্যেদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রিটকারী আইনজীবী যখন দেশ রূপান্তর পত্রিকার প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে বালিশসহ আসবাব কেনা এবং ফ্ল্যাটে তোলার খরচের বিষয়টি তুলে ধরছিলেন, সেটা শুনে হাসতে থাকেন দুই বিচারপতি।

প্রসঙ্গত, গ্রিন সিটি আবাসন পল্লীর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনা ও তা ভবনে তোলায় অনিয়ম নিয়ে গত ১৬ মে দৈনিক দেশ রূপান্তরে ‘কেনা-তোলায় এত ঝাঁজ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে রোববার রিট আবেদনটি করেন আইনজীবী সুমন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের থাকার জন্য গ্রিন সিটি আবাসন পল্লীতে ২০ তলা ১১টি ও ১৬ তলা আটটি ভবন হচ্ছে। এরই মধ্যে ২০ তলা আটটি ও ১৬ তলা একটি ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। ২০ তলা ভবনের প্রতিটি ফ্ল্যাটের জন্য প্রতিটি বালিশ কিনতে খরচ দেখানো হয়েছে পাঁচ হাজার ৯৫৭ টাকা। আর ভবনে বালিশ ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ৭৬০ টাকা।

প্রতিটি রেফ্রিজারেটর কেনার খরচ দেখানো হয়েছে ৯৪ হাজার ২৫০ টাকা। রেফ্রিজারেটর ভবনে ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ১২ হাজার ৫২১ টাকা। একেকটি খাট কেনা দেখানো হয়েছে ৪৩ হাজার ৩৫৭ টাকা। আর খাট ওপরে ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ১০ হাজার ৭৭৩ টাকা। প্রতিটি টেলিভিশন কেনায় খরচ দেখানো হয়েছে ৮৬ হাজার ৯৭০ টাকা। আর টেলিভিশন ওপরে ওঠাতে দেখানো হয়েছে ৭ হাজার ৬৩৮ টাকার খরচ।

বিছানার খরচ ৫ হাজার ৯৮৬ টাকা দেখানো হয়েছে; তা ভবনে তুলতে খরচ দেখানো হয়েছে ৯৩১ টাকা। প্রতিটি ওয়ারড্রোব কিনতে খরচ দেখানো হয়েছে ৫৯ হাজার ৮৫৮ টাকা। আর তা ওঠাতে দেখানো হয়েছে ১৭ হাজার ৪৯৯ টাকার খরচ। এরকম বৈদ্যুতিক চুলা, বৈদ্যুতিক কেটলি, রুম পরিষ্কারের মেশিন, ইলেকট্রিক আয়রন, মাইক্রোওয়েভ ইত্যাদি কেনাকাটা ও ভবনে তুলতে অস্বাভাবিক খরচ দেখানো হয়েছে।

এদিকে বিষয়টি তদন্তে উচ্চপর্যায়ের পৃথক দুটি কমিটি গঠন করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও গণপূর্ত অধিদপ্তর। কমিটি দুটিকে আগামী সাত কার্যদিবসে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। মন্ত্রণালয় রূপপুরের আসবাবপত্র সরবরাহের সঙ্গে জড়িত ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ থেকে বিরত থাকার নির্দেশনাও দিয়েছে। সূত্রঃ দেশ রূপান্তর

ad

পাঠকের মতামত