297765

‘সিনেমা-নাটক বানিয়ে নুসরাতকে দয়া করে দোজখে নেবেন না’

ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যার ঘটনা নিয়ে সিনেমা বানানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন দেশের খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতা দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। সিনেমার নামও তিনি রেখেছেন ‘নুসরাত’। কিন্তু নুসরাতের পরিবারের পক্ষ থেকে নিষেধ করা হয়েছে।

নুসরাত জাহান রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান জানান, আমাদের পরিবারের সাথে কয়েকজন চলচিত্র পরিচালক ও নাট্য পরিচালক যোগাযোগ করেছেন। আমাদের বাপ, দাদা, চাচা ও ভাইয়েরা সবাই আলেম উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা এতে রাজি নই।

নুসরাত জাহান রাফির মা শিরিন আক্তার বলেন,’আমার মেয়ে আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়েছেন। শুনতেছি কেউ কেউ নাকি আমার মেয়েকে নিয়ে নাটক ও সিনেমা বানানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন। দয়া করে আমার মেয়েকে নিয়ে কেউ সিনেমা বা নাটক বানাবেন না।’

তিনি বরেল, ‘আমার মেয়েকে নিয়ে অনেকে ওয়াজ ও গজল বানিয়েছেন। আরও বানাতে পারেন। কিন্তু কোনো সিনেমা বা নাটক বানিয়ে আমার মেয়ের আত্মাকে কষ্ট দেবেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘নুসরাত শহীদ হয়ে গোটা বিশ্বের মানুষের মনে দাগ কেটেছে। সে কবরে চিরনিন্দ্রায় শায়িত আছে। সিনেমা-নাটক বানিয়ে তাকে দয়া করে দোজখে নেবেন না। তাকে নিয়ে সিনেমা ও নাটক বানালে তার আত্মা কষ্ট পাবে। আমরা আখেরাতে তার কাছে জবাব দিতে পারব না। আমার মেয়ে একটি নিষ্পাপ ফুল’।

তিনি বলেন, ‘আমরা অর্থের দিক দিয়ে গরিব হতে পারি। কিন্তু ধর্মের দিক দিয়ে আমরা গরিব নই। আমার মেয়েকে প্রথমে নূরানী মাদ্রাসায়, পরে মহিলা মাদ্রাসায় এবং সেখান থেকে দাখিল পাস করার পর সোনাগাজী মাদ্রাসায় ভর্তি করাই।

‘দুনিয়াতে কিছু না পেলেও আখিরাতে আমার মেয়ে শহীদি মর্যাদা পাবে। পবিত্র রমজান মাস যাচ্ছে। আমার কাছে যেন কেয়ামত যাচ্ছে। কারণ সাহরি ও ইফতারের সময় আমার মেয়ে নুসরাত আমার সঙ্গে খেতে বসত। গল্প করত। গরম পানি করত। আজকে আমার মেয়ে নেই। সবই আছে। রোজাও আছে’।

নুসরাতের মা আরও বলেন, ‘আমরা জীবিত অবস্থায় নুসরাতের খুনিদের বিচার দেখে যেতে চাই। তাহলে আমার মেয়েটির আত্মা শান্তি পাবে।’

উল্লেখ্য, ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার মামলা করায় গত ৬ এপ্রিল নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে তার শরীরের ৭৫/৮০ ভাগ পুড়ে যায়। ঢাকা মেডিকেল হাসাপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন থাকা নুসরাত গত ১০ এপ্রিল মারা যান।

ad

পাঠকের মতামত