293914

‘ওস্তাদে ঘুমায়, আমি গাড়ি পাহারায়’

ভরদুপুর। নীলক্ষেত মোড়ের অদূরে বলাকা সিনেমা হলের সামনে বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও রিকশা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে। ব্যস্ততম এ সড়কের প্রতিটি বাসের আসন ফাঁকা। ভরদুপুরে চালক ও হেলপারকে সটান লম্বা হয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। একটু এগিয়ে যেতেই একটি ট্রাকের পাশে রাস্তার আইল্যান্ডে এক যুবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। যুবকের পরিচয় এবং সে এখানে রোদে দাঁড়িয়ে আছে কেন জানতে চাইলে জানায়, সে ট্রাকের হেলপার। তার ওস্তাদ (চালক) ঘুমাচ্ছেন, তাই সে গাড়ি পাহারা দিচ্ছে। একটু সামনে এগিয়ে গিয়ে দেখা যায় দুজন রিকশাচালক বাস ও ট্রাকের মাঝে আটকা পড়ে বসে আছেন।

সোহায়েল নামের এক রিকশাচালক বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছি। রোদে শরীর পুড়ে যাচ্ছে। মোহাম্মদপুর থেকে যাত্রী লালবাগ নিয়ে যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে আটকা পড়লে যাত্রী চলে গেলেও রিকশা ফেলে আমি কোথাও যেতে পারছি না।’ পাঁচ দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা টানা দ্বিতীয় দিনের মতো অবরোধ কর্মসূচি পালন করায় মিরপুর রোডে শত শত যানবাহন আটকা পড়েছে। যানবাহন না থাকায় মিরপুর রোডে অসংখ্য মানুষকে হেঁটে পথ চলতে দেখা গেছে। নিউমার্কেট থেকে রিকশাচালকরা মিরপুর গাবতলীর যাত্রী খুঁজছিলেন। তবে ভাড়া অনেক বেশি চাওয়ায় অধিকাংশ যাত্রী রাজি হচ্ছিলেন না।

নিউমার্কেটের সামনে আটকে পড়া গাজীপুর টু নারায়ণগঞ্জ রুটের এক বাসচালক বলেন, ‘গতকাল ও আজকের অবরোধে তার মালিকের বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। ব্যাংকঋণ করে গাড়ি কেনার কারণে একদিন গাড়ি বন্ধ থাকলেই ঋনের সুদ বাড়তে থাকে।’ বাস না চললেও তার মজুরি পাবেন কিন্তু মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে আফসোস করেন তিনি। আসাদ নামের এক রিকশাচালক বলেন, ‘দুই ঘণ্টা ধরে এক জায়গায় ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছি। জমার টাকা আইজ কহন উঠবো জানি না।’

ad

পাঠকের মতামত