নবীজি সা. শাবান মাসে বেশি রোজা রাখতেন
নিউজ ডেস্ক।। শাবান মাস রাসুলুল্লাহ (সা) এর একটি প্রিয় মাস৷ তিনি নিজে গুরুত্বের সাথে এ মাসের চাঁদের হিসাব রাখতেন এবং সাহাবায়ে কিরাম (রা) কেও এ মাসের হিসাব রাখার ব্যাপারে নির্দেশ দিতেন৷ রাসুলুল্লাহ (সা) এ মাসে এতো বেশি নফল রোজা রাখতেন যা অন্য কোন মাসে রাখতেন না৷ রমজানের পর শাবান মাসেই প্রিয় নবি হযরত মুহাম্মদ (সা.) সবচেয়ে বেশি রোজা রাখতেন৷ এ সম্পর্কে হজরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘নবী (সা) শাবান মাসের চাইতে বেশি নফল রোজা অন্য কোন মাসে রাখতেন না। নিঃসন্দেহে তিনি পূর্ণ শাবান মাস রোজা রাখতেন।’ মুসলিম শরিফের এক বর্ণনায় আছে, ‘অল্প কিছুদিন ছাড়া তিনি পূর্ণ শাবান মাস রোজা রাখতেন।’ (বুখারিঃ ১৯৭৹, মুসলিমঃ ১১৫৬)
শাবান মাসের একটি বিশেষ ফজিলতপূর্ণ রাত হলো ‘লাইলাতুল বারাআত’ যা আমাদের দেশে ‘শবে বরাত’ নামে প্রসিদ্ধ৷ হাদিসে এ রাতে নফল নামাজ আদায় করার ব্যাপারে এবং দিনে রোজা রাখার ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷ হজরত আলী রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘যখন মধ্য শাবানের রাত আসে তখন তোমরা এ রাতে দাঁড়িয়ে নামাজ পড় এবং এর দিনে রোজা রাখ। কেননা এ দিন সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীর নিকটতম আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আছো আমার নিকট ক্ষমাপ্রার্থী, আমি তাকে ক্ষমা করবো। কে আছো রিজিকপ্রার্থী আমি তাকে রিজিক দান করবো। কে আছো রোগমুক্তি প্রার্থনাকারী, আমি তাকে নিরাময় দান করবো। কে আছ এই প্রার্থনাকারী। ফজরের সময় হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত (তিনি এভাবে আহবান করেন)।’ (সুনানে ইবনে মাজাঃ ১৩৮৮)। শাবান মাসে আমলনামা আল্লাহ তায়ালার দরবারে পেশ করা হয়৷ এ কারণে রাসুলুল্লাহ (সা) এ মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখতেন৷ তাই রাসুলুলুল্লাহ (সা) এর উম্মত হিসেবে তার অনুসরণে আমাদেরও এ মাসে সাধ্যমত বেশি নফল রোজা রাখা উচিত৷
হজরত উসামা বিন যায়েদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, ‘একদিন তিনি রাসুলুল্লাহ (সা) কে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি শাবান মাসে আপনাকে এতো রোজা রাখতে দেখেছি যা অন্য মাসে রাখেন না৷ এর কারণ কি?’ তিনি বললেন, ‘এটা তো সেই মাস, যে মাস সম্বন্ধে মানুষ উদাসীন, যা হল রজব ও রমজানের মাঝে। আর এটা তো সেই মাস; যাতে বিশ্ব জাহানের প্রতিপালকের নিকট আমলসমূহ পেশ করা হয়। তাই আমি পছন্দ করি যে, রোজা রাখা অবস্থায় আমার আমল (আল্লাহর নিকট) পেশ করা হোক।’ (মুসনাদে আহমাদঃ ২১৭৫৩, সুনানে নাসাঈঃ ২৩৫৭)