292418

‘সৌদি আরবে আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা’

বিনোদন ডেস্ক।। শখ হলো মানুষের মধ্যে লুকিয়ে থাকা শৌখিন মনের প্রতিবিম্ব। শখের বশবর্তী হয়ে মানুষ কত রকমের উদ্দেশ্যহীন কাজই না করে! কোনো শখ আবার কারও নেশায় পরিণত হয়। বুঁদ হয়ে থাকে সেই নির্দিষ্ট বিষয়ের মধ্যে। শখ আসলে মানুষের নিজস্ব চিন্তাকর্ম, নির্মল বিনোদনের খোরাকও বটে। ঢালাওভাবে সব শখকে উদ্দেশ্যহীন বলাও বোধ হয় ভুল। অন্যের কাছে উদ্দেশ্যহীন হলেও যার শখ সে-ই বোঝে তার মর্ম। তবে শখেরও মনে হয় একটা বয়স থাকে। সব বয়সে সব শখ থাকে না। শখ নিয়ে লিখতে বসামাত্র কত রকমের শখের কথা মনে পড়েছে! স্মৃতির পাতা উল্টিয়ে দেখে নিলাম শখগুলোকে।

আমার জন্ম আর বেড়ে ওঠা সৌদি আরবে। বাবা লুৎফর রহমান সেখানে একটি বেসরকারি ফার্মে একজন নিরীক্ষণ কর্মকর্তা ছিলেন। সেই সুবাদে পড়াশোনা জেদ্দায়, সেখানকার বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে। ছোটবেলায় বিভিন্ন ধরনের পুতুল জমানো ছিল আমার শখ। নানা রঙের পুতুল জমিয়ে রেখে একটি সংগ্রহের পাহাড় গড়েছিলাম। সেগুলো আজও আছে। মাঝেমধ্যে পুতুলগুলো দেখে শৈশবের স্মৃতি হাতড়ে বেড়াই। স্মৃতির জানালায় মাঝেমধ্যে কত শত সুখস্মৃতি উঁকি মারে! জেদ্দায় মাধ্যমিক পর্বের পাট চুকিয়ে ঢাকায় চলে আসি এবং নিজ দেশের সঙ্গে মানিয়ে চলা শুরু করি। পরিচয় হয় ঢাকাই শাড়ির সঙ্গে। তখন সবেমাত্র শাড়ি পরা শিখেছি। শুরু হলো শাড়ির শখ। বিশেষ করে সুতি শাড়ি। আমার আলমারি ভর্তি রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সুতি শাড়িতে।

মানুষ চির যাযাবর। আমাদের সবার ধমনীতে আছে ভ্রমণের নেশা, অজানাকে জানার অনন্ত জিজ্ঞাসা। স্বভাবতই মানুষ ভ্রমণবিলাসী। বিপুল এই পৃথিবীর বিশাল তার আয়োজন। কত বৈচিত্র্যময় দেশ-দেশান্তর! কত নদী নির্ঝর, কত গিরি-পর্বত, কত অরণ্য-প্রান্তর সৌন্দর্যের অপরূপ ডালি সাজিয়ে পৃথিবীর বুকজুড়ে রয়েছে! পৃথিবীর কত অজস্র কোণে কত বিচিত্র জনপদ তাদের বিচিত্র জীবনাচরণ নিয়ে বসবাস করছে! নদী, সমুদ্র, মরু-পর্বত, বন-উপবন শোভিত এই বিপুল বিশ্ব প্রতি মুহূর্তে আমায় হাতছানি দিয়ে ডাকে। ভ্রমণের নেশা মানেই গতির নেশা। এই গতির নেশা আমার রক্তে দোলা দিয়েছে। যারা স্মরণীয় পরিব্রাজক তারা এই গতির নেশায় তুচ্ছ করেছেন জীবনকে। ফা হিয়েন, হিউয়েন সাং, ইবনে বতুতাসহ অনেকেই দেশ-দেশান্তরে সভ্যতা-সংস্কৃতির সম্যক পরিচয় লাভে জীবন বাজি রেখে পাড়ি দিয়েছেন দূর অজানায়।

তাদের মতো আমিও পাড়ি দিয়েছি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। আগে ঘুরতাম একা। এখন সঙ্গী হয়েছে আমার স্বামী। এই তো পরপর কয়েকটি দেশ ঘুরেছি। আমার প্রিয় স্থানগুলোতে মাঝেমধ্যে যেতে ভালো লাগে। নানা দেশের হরেক রকম ঐতিহ্যবাহী জিনিস সংগ্রহ করে শখের আলমারিতে পুরতে অন্য রকম আনন্দ পাই। রান্নাবান্না আমি দারুণ উপভোগ করি। যদিও মিডিয়ার নানামুখী ব্যস্ততায় রান্নার সুযোগ খুবই কম হয়। তবে সময়-সুযোগ পেলেই রান্নায় বসে যাই। নিজের রান্না করা খাবার পরিবারের সবাইকে নিয়ে খেতে, একসঙ্গে খাবার টেবিলে গল্প করতে খুবই ভালো লাগে। উৎস: সমকাল।

ad

পাঠকের মতামত