
‘জয়কে মাঝে মাঝে দেখতে আসে শাকিব, ফোনে কথাও হয় সপ্তাহে দু-একবার’
বিনোদন ডেস্ক।। এক সপ্তাহ আগের কথা। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা দিয়ে যাওয়ার পথে হঠাৎ অপু বিশ্বাসের ফোন। কল রিসিভ করতেই জানালেন, তিনি পেছনের রিকশায়। তাঁর পরনে বোরকা। ফিরে তাকাতেই মিলল অপুর দেখা। চেনার কোনো উপায় নেই। চোখ দুটি ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না। হাত নেড়ে ইশারা করলেন। সঙ্গে তাঁর সহকারী মেয়েটি। তার হাতে ইয়া বড় ব্যাগ। যাবেন যমুনা ফিউচার পার্কে। সেখানে নিয়মিত জিম করেন অপু। গ্রামীণফোনের অফিসের সামনে জ্যাম দেখে নামলেন রিকশা থেকে। জোর করলেন তাঁর সঙ্গে যমুনায় যেতে। এক কাপ কফি খেতেই হবে! শেষ পর্যন্ত ফুডকোর্টে গিয়ে জানা গেল অপুর বর্তমান দিনকালের খবর। শুরুতেই অভিমানের কথা,
‘আর অভিনয় করব না। কী হবে অভিনয় করে! ব্যবসা করব। কী ব্যবসা করা যায় বলুন তো! লাভ কোনটায় বেশি? অল্প পরিশ্রমে বেশি টাকা পাওয়া যায় এমন একটা ব্যবসার নাম বলেন শিগগির’—একদমে বলে গেলেন অপু।
সত্যিই কি অভিনয় ছেড়ে দেবেন ‘ঢালিউড কুইন’? জানতে চাইলে হো হো করে হেসে উঠলেন, ‘আরে বলবেন না। সবাই ফোন করে জানতে চায় নতুন ছবির খবর। এখন শুটিং করছি না কেন? আপনি কি অভিনয় ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? ইত্যাদি ইত্যাদি। বলেন তো, এখন কি আগের মতো ছবি নির্মিত হচ্ছে? কজন পরিচালকের হাতে ছবি আছে? ঢালিউডের বড় সুপারস্টার শাকিব খানই বা এখন বছরে কয়টা ছবি করছেন? আমাকে এসব প্রশ্ন করে কী লাভ!’
মিডিয়ায় চাউর হয়েছে, আবার নাকি অপু আর শাকিবের মধ্যে মিল হয়েছে। গলেছে বরফ। প্রসঙ্গটা তুলতেই খানিকটা বিব্রত বোধ করলেন মনে হলো। তবে সু-অভিনেত্রীর মতো নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন, ‘জয়কে মাঝে মাঝে দেখতে আসে শাকিব। ফোনে কথাও হয় সপ্তাহে দু-একবার। সেটা জয়ের কারণেই। এত সহজেই কি বরফ গলে? এটাকে কি মিলে যাওয়া বলে?’
এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি পাণ্ডুলিপি হাতে পেয়েছেন। পড়েছেনও কয়েকটি। তবে নতুন ছবির খবর পেতে নাকি আরো অপেক্ষা করতে হবে। আপাতত ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২’ আর কলকাতার ‘শর্টকাট’ নিয়েই থাকতে হবে ভক্তদের। দুটি ছবিরই শুটিং শেষ। দুই সপ্তাহ আগে করেছেন ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ ২’-এর ডাবিং। তাঁর কাছে মনে হয়েছে, ছবিটা দারুণ হয়েছে। বলেন, ‘অনেক দিন পর দর্শক আমাকে পর্দায় দেখবে। এটাই তো বড় চমক। তা ছাড়া বাপ্পীর সঙ্গে পর্দা রসায়ন জমবে বলেই বিশ্বাস। কমেডি ছবিতে আগে দর্শক আমাকে পায়নি বললেই চলে।’ বললেন ‘শর্টকাট’ নিয়েও, ‘গায়ক নচিকেতা চক্রবর্তী প্রথমবার সিনেমার জন্য গল্প লিখেছেন। ব্যতিক্রম তো হবেই। শুটিংটাও বেশ উপভোগ করেছি। শুনেছি শিগগিরই মুক্তি পাবে। টালিগঞ্জের আরো কয়েকটি ছবির ব্যাপারে কথা হচ্ছে। চূড়ান্ত কিছু হলে জানাব।’
শুটিং-ডাবিং নেই, তাই বলে যে অলস সময় পার করছেন তা কিন্তু নয়। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই জয়কে রেডি করে স্কুলে নিয়ে যান, আবার সময়মতো নিয়ে আসেন। ছেলে আবার মায়ের হাতের রান্না খুব পছন্দ করে। মা ছাড়া তার চলেই না। সন্ধ্যায় জিম থেকে ফিরে জয়কে পড়াতে বসেন অপু। রাত ১০টায় ডিনার। এভাবেই দিন কাটছে অপুর। প্রশংসা করলেন ছেলের, ‘ও এখন ল্যাপটপ চালু করা শিখে গেছে। ছবি আঁকায়ও দারুণ মনোযোগ। ওর ব্রেন খুব শার্প।’
আজকাল এফডিসিতে যাওয়া হয় না বললেই চলে। চলচ্চিত্র দিবস কি পিকনিক— কোথাও না। কেন? ‘কাজের বাইরে কোথাও একদণ্ড আড্ডা দিয়েছি বলে মনে পড়ে না। এখন হাতে ছবি নেই, শুধু শুধু এফডিসিতে গিয়ে সময় কাটানোর ইচ্ছা নেই।’ উৎস: কালের কণ্ঠ।