281847

দুর্ঘটনায় পা হারানো সেই নিপা ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে

মেফতাহুল জান্নাত নিপা। ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। এক পা হারিয়ে হাসপাতালের শয্যায় যন্ত্রণায় কাতর। স্কুলের সামনে পিকআপ চাপায় এই করুণ পরিণতি হয়েছে।দুর্ঘটনার দিন চিকিৎসকরা একটি পা কেটে ফেললেও অপর একটি পা ও হাত ভেঙে গেছে। সেখানে অপারেশন করা হয়েছে। দুর্বিসহ যন্ত্রণা তাকে একটুও স্বস্তি দিচ্ছে না। যন্ত্রণায় আর্তনাদ করছে যশোর জেনারেল হাসপাতালে।রোববার বিকাল সাড়ে ৫টায় হাসপাতালে খবর পৌঁছায় নিপা ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। বৃত্তির সুখবরও তাকে আন্দোলিত করেনি।মেয়ের এমন সাফল্যে বাবা মায়ের মন ভাল নেই। বরং মেয়ের ভবিষৎ নিয়েই তার শংকিত।

গত ২০ মার্চ যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের শার্শা উপজেলার বুরুজবাগান পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে পিকআপ চাপায় গুরুতর আহত হয় ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী মেফতাহুল জান্নাত নিপা। সে শার্শা উপজেলার দক্ষিণ বুরুজবাগান এলাকার রফিকুল ইসলামের মেয়ে।২০১৮ সালে সবুজকুঁড়ি প্রি-ক্যাডেট থেকে প্রাথমিক সমাপনীতে জিপিএ-৫ পেয়েছে। ৬০০ এর মধ্যে তার মোট নম্বর ৫৬৯। রোববার প্রকাশিত ফলাফলে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে নিপা।

মেয়ের এমন সাফল্যে খুশি হওয়ার কথা থাকলেও ভবিষৎ নিয়ে শংকিত নিপার বাবা রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে দিয়ে গ্রামে চলে এসেছিলাম। মেয়েকে মানুষের মত মানুষ করবো। ও ডাক্তার হবে। আমি নিজেই ওকে পড়াই।তিনি বলেন, প্রাথমিক সমাপনীতে জিপিএ-৫ পেয়েছিল। আজ (রোববার) বৃত্তির ফল প্রকাশ হয়েছে। নিপা ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে খবর পেয়েছি। মেয়ের সাফল্যে আনন্দিত হওয়ার কথা। কিন্তু মোটেও আনন্দিত হতে পারিনি। মেয়ে হাত ও পায়ে আজ অপারেশন হয়েছে। খুব যন্ত্রণা করছে। ওর আর্তনাদে আমারাও কষ্ট পাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে কি না সংশয়ে রয়েছে। এক পা হারিয়েছে। কীভাবে লেখাপড়া করবো বুঝতে পারছি না।রফিকুল ইসলামবলেন, মেয়ের স্বপ্ন পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতা চাই। আমার মেয়ের মতো যেন আর কেউ দুর্ঘটনার শিকার না হয়। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।সবুজকুঁড়ি প্রি-ক্যাডেটের প্রধান শিক্ষক সোহরাব হোসেন বলেন, নিপা মেধাবী ছাত্রী ছিল। সে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। কষ্টের মধ্যেও একটি সুখবর পেয়েছি আমরা। একটি দুর্ঘটনা তার জীবনে অন্ধকার বয়ে এনেছে।

ad

পাঠকের মতামত