281808

জড়িয়ে ধরার ছবি ভাইরাল, যা বললেন সেই বিএনপি চেয়ারম্যান

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বান্দরবানের আলী কদম উপজেলায় ম্রো ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির এক বিধবা নারীকে সেখানকার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের জড়িয়ে ধরার ছবি ভাইরাল হয়ে পড়েছে।রবিবার বিকেলে ছবিটি শেয়ার দিয়ে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা চেয়ারম্যানের আচরণ নিয়ে বিরূপ সব মন্তব্য করেছেন। যদিও চেয়ারম্যানের দাবি তিনি ওই নারীকে সান্তনা দিচ্ছিলেন।গত ১০ মার্চ অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে বান্দরবানের আলীকদমে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মো. আবুল কালাম। এরপর ২২ মার্চ স্থানীয় নোয়াপাড়া ইউনিয়নের মেরিনচর পাড়ায় সংবর্ধনা নিতে যান তিনি। ওই পাড়াটিতে ম্রো ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মানুষদের বসবাস।

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া কয়েকটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ম্রো নৃগোষ্ঠির এক নারীকে জনসম্মুখে জড়িয়ে ধরে আছেন চেয়ারম্যান। ওই নারীর অভিব্যক্তিতে মনে হচ্ছে, তিনি চেয়ারম্যানের এমন কাণ্ডে অস্বস্তি বোধ করছিলেন।এদিকে ফেসবুকে ছবিগুলো ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকেই চেয়ারম্যানের সমালোচনা করছেন। সংবর্ধনা নেয়ার সময় আবুল কালাম ওই বিধবা নারীর সাথে বেশ আপত্তিকর আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এভাবে প্রকাশ্যে হেনস্তা করার দায়ে চেয়ারম্যানের বিচারও চেয়েছেন অনেকে।

ছবিগুলো শেয়ার করে কুঙ্গ থাঙ নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘নতুন চেয়ারম্যান সাবে সরলসিধা আদিবাসী নারী সামনে পেয়ে জাপ্টায়া ধরছে এ আর এমন কি।এইরকম অশোভন একটা ঘটনায় নারীটি অপ্রস্তুত হইলে তাতে কি আসে যায়, আড়ালে-আবডালে-সুযোগে-সুবিধায় কত পাহাড়ি নারী লাশ হয়ে পড়ে থাকেন এইখানে তো তা হয় নাই। আসেন দাঁত কেলাই!’

বিচারের দাবি জানিয়ে আকাশ লীনা নামে একজন ছবিগুলো শেয়ার করে লিখেছেন, ‘লোকটার নাম মো. আবুল কালাম। বান্দরবানের আলী কদমের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান। সাধাসিধা এবং অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল আদিবাসী ম্রো পাড়ায় জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরে এটা কোন জাতীয় সংবর্ধনা নিচ্ছেন সেটা আপনারাই বোঝেন…প্রাপ্তবয়স্ক একজন নারীকে তিনি যেভাবে জড়িয়ে ধরে এবং কোলে বসিয়ে শ্লীলতাহানি করছেন তার বিচার কে চাইবে?

ম্রো’রা খুব খুব নিরীহ এবং সরল। ছবিটার দিকে তাকান, একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যদি প্রকাশ্যেই এভাবে শ্লীলতাহানি করতে পারে, হেনস্থা করতে পারে তবে রাতের আঁধারে পাহাড়িরা কতটা নিরাপদ…’‘আমাদের প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবারে আদালত বসিয়ে সুবর্নচরের ধর্ষক রুহুল আমিনের জামিন নামঞ্জুর হয়েছে, আমাদের প্রতিক্রিয়াতেই আলী কদমের সম্ভাব্য ধর্ষকের বিচার হতেই পারে…আলী কদমের চেয়ারম্যান মো. আবুল কালামকে দ্রুত বিচারের সম্মুখীন করার জোর দাবী জানাই….’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, ‘ওই নারীর ভাই স্থানীয় এমএনপি কমান্ডার। তার সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হওয়ার সুবাদে আমি ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম। সংবর্ধনা নেওয়ার সময় ওই নারী কান্নায় ভেঙে পড়লে আমি তাকে সান্তনা দিচ্ছিলাম, সেখানে আপত্তিকর আচরণের কিছু ছিল না।আর ঘটনার স্থানে ওই নারীর বাবা, মা, ভাইসহ পরিবারের সব সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তেমন কিছু হলে তো সেখানে তারা প্রতিবাদ করতেন।’ এ ব্যাপারে তার পরিবারের কোনো অভিযোগ নেই বলেও দাবি করেন তিনি।

ওই নারীর অভিব্যক্তিতে অস্বস্তি বোধের বিষয়টি জানালে নবনির্বাচিত এ চেয়ারম্যান বলেন, ‘তিনি কান্নাকাটি করছিলেন, আমি শুধু তাকে সান্তনা দিচ্ছিলাম। আর সেই ছবি আমি নিজেই আমার ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করেছি। তেমন কিছু হলে তো আমি ছবিগুলো শেয়ার দিতাম না।’এ ব্যাপারে জানতে ওই নারীর ভাইয়ের মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

ad

পাঠকের মতামত