271873

নির্বাচনের আগে কাদেরকে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে গত বছর ২০ ডিসেম্বরই হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। সোমবার সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের উপাচার্য ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া একথা বলেন। তিনি বলেন, ‘গত ২০ ডিসেম্বর ওবায়দুল কাদের ডাক্তার দেখাতে এখানে এসেছিলেন। সেদিন পরীক্ষা করে দেখা যায় তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নেই। সে সময় আমরা তাকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিলে তিনি বলেছিলেন, ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর এসে ভর্তি হবেন। তবে নির্বাচনের পর তিনি আসেননি।’

ডা. কনক কান্তি বলেন, ‘সোমবার তাকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নেওয়া হবে। এর আগে ভারতের প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী প্রসাদ শেঠি বলেন, ওবায়দুল কাদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা পেয়েছেন। এই চিকিৎসা চালিয়ে গেলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।’শনিবার রাতে নিজ বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন ওবায়দুল কাদের। পরে তাকে বিএসএমএমইউ’র কার্ডিওলজি বিভাগে চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আলী আহসানের অধীনে ভর্তি করা হয়। সেখানে এনজিওগ্রামে তার হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এরমধ্যে একটিতে রিং পরানো হয়।

৬৭ বছর বয়সী ওবায়দুল কাদের ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তার আগে ছয় বছর তিনি দলের সভাপতি মণ্ডলীতে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর আড়াই বছর কারাগারে ছিলেন কাদের। সেখান থেকেই তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। পর পর দুই মেয়াদে তিনি ওই দায়িত্বে ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকোলে কোম্পানীগঞ্জ থানা মুজিব বাহিনীর (বিএলএফ) অধিনায়ক কাদের প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে। মোট চারবার তিনি নোয়াখালী-৫ আসনের ভোটারদের প্রতিনিধি হিসেবে সংসদে এসেছেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন পর সরকার গঠন করলে ওবায়দুল কাদেরকে যুব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন।

পরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরে গেলে ২০০২ সালের সম্মেলনে দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান ওবায়দুল কাদের। ২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ন সরকারের সময়ে জরুরি অবস্থার মধ্যে দেশের বহু রাজনীতিবিদের মত ওবায়দুল কাদেরও গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যান। প্রায় ১৮ মাস কারাগারে কাটানোর পর ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের দুই মাস আগে তিনি জামিনে মুক্তি পান।

ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে আবার ক্ষমতায় ফেরে আওয়ামী লীগ। প্রথমে তাকে তথ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। সরকারের মেয়াদের মাঝামাঝি সময়ে তাকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী করেন প্রধানমন্ত্রী। তখন থেকেই ওই মন্ত্রণালয়ের দেখভাল করছেন ওবায়দুল কাদের। বর্তমানে এ মন্ত্রণালয়ের নাম সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।

ad

পাঠকের মতামত