271372

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশও মানছেন না দলের নেতা-কর্মীরা

হৃদরোগ সংক্রান্ত জটিলতায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অসুস্থ হওয়ার খবরের পরপরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতাকর্মীদের অহেতুক হাসপাতালে ভিড় করতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু সারাদিন সে নির্দেশ অমান্য করতে দেখা গেছে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের।রোববার (৩ মার্চ) সকাল থেকেই দলে দলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ডি-ব্লকের সামনে অবস্থান করতে দেখা গেছে তাদের। তাছাড়া এ অহেতুক ভিড় না করে চিকিৎসাকাজে সহযোগিতার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।

সন্ধ্যায় বিএসএমএমইউতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সকালেই প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আমিও যদি আসি তাহলেও ঢুকতে দেবে না। কিন্তু নেতাকর্মীরা কেউ তা মানেননি। আমরা নিচে একটা খাতা রেখেছিলাম। যারা আসছেন তারা যেন স্বাক্ষর করে চলে যান। কিন্তু কেউ তা শুনছে না। সবাই নিরাপত্তাকর্মীদের ঠেলে ভিতরে ঢুকে পড়ছেন। সিসিইউতে তো অন্য হৃদরোগীও আছেন। তাদের চিকিৎসায় ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে এ কারণে। গেটে তালা ঝুলানোর পরও তা ভেঙে ফেলা হয়েছে।

‘এছাড়া বাইরে যারা ভিড় করছেন তাদের জন্যেও অন্য রোগীদের আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। সর্বোপরি হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। তাই আমি অনুরোধ করছি, আপনারা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে চলুন।

পুলিশকেও হিমশিম খেতে হয় ভিড় সামলাতেএদিকে সকাল থেকেই ডি-ব্লকের সামনেসহ পুরো বিএসএমএমইউ জুড়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অত্যাধিক ভিড় লক্ষ্য করা যায়। যারা হাসপাতাল গ্রাউন্ডে দীর্ঘক্ষণ অকারণ অপেক্ষাসহ সেলফি তোলা, গ্রুপ ছবি তোলা এমনকি টিভি সাংবাদিকদের বলতে শোনা গেছে, ভালোমতো ভিডিও করেন। এছাড়া অসংখ্য নেতাকর্মীকে ডি-ব্লকের গেটের অংশ (যেটা রাস্তা থেকে সিঁড়ির কারণে অপেক্ষাকৃত উঁচু) সেখানে অকারণ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। যাদের মূল লক্ষ্য ছিল সাংবাদিকদের ক্যামেরা।

এমন পরিস্থিতিতে একাধিক অকারণ অপেক্ষারত আওয়ামী লীগকর্মীদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, আমাদের নেতা অসুস্থ তাই আমরা এসেছি।কেনো তাদের অপেক্ষা করতে হবে হাসপাতালে- তা জানতে চাইলে কেউই সদুত্তর দিতে পারেননি।

বাইরে নেতাকর্মীদের ভিড়এছাড়া লক্ষ্যণীয় বিষয়, সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের প্রশাসনিক ভবনের মিল্টন হলে প্রেসব্রিফিং করার সময় ডি-ব্লকের সামনে আওয়ামী নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি কমতে শুরু করে। এছাড়া সন্ধ্যার পর সেখানে তাদের উপস্থিতি একেবারে কম লক্ষ্য করা গেছে, যখন বেশিরভাগ সাংবাদিকদের বিশেষ করে টিভি সাংবাদিকদের উপস্থিতি ছিল না।

এদিকে চিকিৎসকদের মতে, হাসপাতালের সুন্দর পরিবেশ রোগীদের সুস্থ হয়ে ওঠার পেছনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা শব্দদূষণ একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হাসপাতালের পাশেই মূল সড়কের কারণে শব্দদূষণের প্রকোপ থাকলেও ভবনের ভেতরে তা প্রবেশ করে না। কিন্তু ভিতরে এত মানুষ থাকায় পুলিশেরও বারবার বাঁশি বাজিয়ে তাদের সরানো লাগছে। এতে আমরাই বিরক্ত হচ্ছি। রোগীদের তাহলে কি অবস্থা ভেবে দেখুন। এই নেতাকর্মীদের এটা একটু ভাবা উচিত। আশাকরি এ পরিস্থিতির আর পুনরাবৃত্তি ঘটবে না।

ad

পাঠকের মতামত