254610

এলাচের এই জাদুকরী গুণ সম্পর্কে জানলে আজ থেকেই খাওয়া শুরু করবেন আপনিও

নিউজ ডেস্ক।। এলাচ রান্নায় না দিলে যে রান্নার স্বাদটাই খোলে না এ আপনারা সবাই জানেন। ভারতীয় বা এশিয়ার রান্নায় যে গরম মশলা ব্যবহার করা হয়, তার একটা প্রধান ও অত্যাবশ্যকীয় উপাদানই এলাচ। যেকোনো রান্না, এমনকি পায়েস বা মিষ্টিতেও এলাচ দিলে তার স্বাদই বদলে যায়। কিন্তু আপনি কি জানেন এলাচ কেবল রান্নায় স্বাদ ও গন্ধই যোগ করে না, এলাচের আরও অনেক আশ্চর্য গুণই আছে যা আমাদের অজানা। এলাচে প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনীয় খাদ্য পরিপোষক যেমন ভিটামিন ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট মজুত থাকে। নিয়াসিন, রাইবোফ্ল্যাভিন, থিয়ামিন, ভিটামিন এ, সি ছাড়াও সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, লোহা, তামা, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেশিয়াম প্রভৃতি এলাচে থাকে। প্রতিদিন একটা বা দুটো করে এলাচ নিয়ম করে খেলে অনেক সমস্যা ও রোগের হাত থেকে সহজ সমাধান মিলতে পারে। আসুন আজ জেনে নেওয়া যাক এলাচ খেলে কি কি রোগের হাত থেকে মুক্তি মিলতে পারে।

এলাচ হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে :খাবার পর এলাচ খেলে তা গ্যাসের সম্ভাবনাকে কমায় ও হজমশক্তি বাড়ায়। পেটে প্রদাহ, বমিভাব দূর করতেও এলাচের জুড়ি নেই। এছাড়া এলাচ আমাদের মিউকাস মেমব্রেনকে আরাম দেয় ফলে অ্যাসিডিটি ও পেট খারাপের প্রবণতা কমে। এক কাপ হালকা গরম জলে একটি এলাচ থেঁতো করে ফেলে নিয়ম করে খান। দেখবেন পেটের যাবতীয় সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। এছাড়া খিদে বাড়াতেও এলাচের জুড়ি নেই।

এলাচ মুখের দুর্গন্ধ দূর করে : বড় এলাচ যে মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে এ আমরা সবাই প্রায় জানি। এলাচের মধ্যে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণাবলী থাকায় তা মুখের মধ্যেকার ব্যাকটেরিয়াকে দূর করে ও দুর্গন্ধ নাশ করে। খাবারের ঠিকমতো হজম না হওয়াও মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার অন্যতম কারণ। এলাচ হজমের গোলমাল তো কমায়ই। তাছাড়া কাঁচা এলাচ খেলে বা এলাচ দিয়ে চা তৈরি করে খেলে এই সমস্যার থেকে সহজে সমাধান মিলতে পারে।

এলাচ শরীরকে ডি-টক্সিফাই করে : এলাচে থাকা ভিটামিন এ, বি, সি, নিয়াসিন, রাইবোফ্ল্যাভিন রক্তকে পরিশুদ্ধ করতে সাহায্য করে। শরীরের যাবতীয় বর্জ্য পদার্থ, যেমন বাড়তি ক্যালশিয়াম, ইউরিয়া ও অন্যান্য টক্সিনকে কিডনির মাধ্যমে বের করে দিয়ে শরীরকে পরিষ্কার করে ডি-টক্সিফাই করতেও এলাচ সাহায্য করে। ফলে এলাচ নিয়ম করে খেলে তা চোখেমুখে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। এছাড়া এলাচ আমাদের শরীরে অনাক্রম্যতাকেও বাড়ায়।

এলাচ হার্টরেটকে নিয়ন্ত্রণ করে : আমাদের রক্তের, কোষের ও শরীরের ফ্লুইডে উপস্থিত একটি অন্যতম জরুরি উপাদান হল পটাশিয়াম। এলাচে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে যা আমাদের হার্টরেটকে নিয়ন্ত্রণে রাখে ও রক্তচাপকেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। রক্তবাহে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতেও এলাচ সাহায্য করে।

অ্যানিমিয়া দূর করে এলাচ : মেয়েদের একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা হল অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা। নানা কারণে ভারতীয় মেয়েরা কম বয়স থেকেই অ্যানিমিয়াতে ভোগেন। এলাচে প্রচুর পরিমাণে লোহা মাইক্রো-নিউট্রিয়েন্ট হিসেবে মজুত থাকে, যা অ্যানিমিয়াতে উপকার দেয়। আপনার যদি অ্যানিমিয়ার সমস্যা থেকে থাকে, তাহলে নিয়ম করে এলাচ খান, দেখবেন উপকার পাচ্ছেন।

সুস্থ্য যৌন জীবনের জন্য উপকারি : এলাচ কিন্তু টনিক ও উত্তেজক স্টিমুল্যান্ট হিসেবে কাজ করে। তাই নিয়ম করে এলাচ খাওয়া শরীরকে শক্তিশালী তো করেই, তাছাড়া বন্ধ্যাত্ব, যৌন জীবনে অনীহা ইত্যাদির ওষুধ হিসেবেও এলাচ কাজ করে।

সর্দিকাশি নিরাময়ে : সর্দিকাশি হলে আপনি ঘরোয়া টোটকা হিসেবে এলাচ বা এলাচ দেওয়া চা খেতে পারেন। দেখবেন উপকার পাচ্ছেন। এছাড়া নিয়ম করে এলাচ খেলে তা সর্দিকাশির ধাতকে কমায় ও মাথা ধরা কমাতেও সাহায্য করে।

এলাচ ত্বকের যত্নে : এলাচ যেহেতু শরীরকে ডি-টক্সিফাই করে, তাই আমাদের ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার রাখতেও এলাচ কাজে লাগে। বড় এলাচ চিবিয়ে খেলে তা ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় উপকার দেয়। এছাড়া এলাচে থাকা এসেনশিয়াল অয়েল বিভিন্ন কসমেটিক্স সামগ্রীতে ব্যবহার করা হয়। ঠোঁটকে মসৃণ ও নরম রাখতেও এলাচের এসেনশিয়াল অয়েল কাজে লাগে। তাহলে আজ আপনারা জেনে নিলেন এলাচ খাবার উপকারিতা। এলাচের এই বিপুল উপকারিতার জন্য এলাচকে বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক ওষুধেও অন্যতম উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তাই এবার সুস্থ থাকতে নিয়ম করে এলাচ খাওয়া অভ্যেস করুন।

ad

পাঠকের মতামত