239638

আওয়ামী লীগের একটি ভয়ানক দিক দেখেছি: বৃটিশ এমপি রূপা হক

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটেনের ইয়েলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাক্টন আসন থেকে নির্বাচিত বিরোধী লেবার দলের এমপি ড. রূপা হক বলেছেন, এত বছর ধরে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ও বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদ হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর আমি বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের একটি ভয়ানক দিক দেখতে পেয়েছি। সোমবার বৃটেনের অনলাইন পলিটিক্স হোম ডট কমে তিনি একথা লিখেছেন।

ড. রূপা হকের ভাষায়, বর্তমান সরকার কণ্ঠরোধের মাধ্যমে সমালোচনার সব ধরনের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। গত বছর সংসদীয় প্রতিনিধিদলের অংশ হয়ে বাংলাদেশে গিয়ে আমরা দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছিলাম। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো তিনিও গত চার দশক ধরে বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। গত বছর তিনি গৃহবন্দি হয়েছিলেন। এ বছর স্পষ্টতই তিনি জেলবন্দি। শুধু তিনি একাই নন। দলীয় রাজনীতি ছাড়াও আপনি সেখানে সরকারের নির্যাতনের শিকার হতে পারেন।

‘গত সপ্তাহে, ১০০ দিন পর সুখবর আসে যে খ্যাতনামা ফটো-সাংবাদিক শহিদুল আলম জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। গ্রেপ্তারের পর অভিনেত্রী শ্যারোন স্টোনসহ ১০ জন নোবেলজয়ীর সমর্থন পেয়েছেন তিনি। তার পরিবারের সদস্যরা আমার সংসদীয় আসনের। তারা গ্রীষ্ম থেকে নির্যাতনসহ শহিদুল আলমের ভয়াবহ অবস্থা সম্পর্কে আমাকে অবগত করেছেন। এখন মনে হচ্ছে, বিশ্বের চোখ রোহিঙ্গা সংকটের কারণে সরে গেছে। ২০১৭ সালে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র মিয়ানমার থেকে আসা সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন। কিন্তু নিজের ঘরেই ভয়াবহ ঘটনা ঘটে চলেছে। তাছাড়া, বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের শরণার্থী স্বীকৃতি দেয়নি। তাই রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে থাকার অধিকারের জন্য আবেদনও করতে পারছে না।’

রুপা আরো লিখেছেন, জুলাই মাসে, দ্রুতগামী বাসের ধাক্কায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের প্রতিবাদে হাজার হাজার শিক্ষার্থী ঢাকার রাস্তায় শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নামে। দেশটিতে সড়ক দুর্ঘটনা একটি বড় সমস্যা হওয়ায় আন্দোলনটি ব্যাপক জনসমর্থন পায়। আন্দোলন থামাতে কর্তৃপক্ষ তখন জলকামান ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে। যারা তরুণদের আন্দোলনের খবর সংগ্রহ করছিলেন তাদেরকে লোহার দণ্ড দিয়ে মেরে আহত করা হয়েছে, গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শহিদুল আলমও ছিলেন তাদের একজন।

‘দুঃখজনক হলেও এটি বাংলাদেশে অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। এ বছরের মার্চ মাসে, থিংক ট্যাংক বেরটেলসম্যান স্টিফটুইং বাংলাদেশকে স্বৈরশাসনের অধীন একটি রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জোরপূর্বক গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অসংখ্য উদাহরণ তুলে ধরেছে। প্রায়ই বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীরাই টার্গেট হয়ে থাকেন। বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো কঠিন আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হ্রাস পাচ্ছে এবং শাস্তিস্বরূপ কারাদণ্ড দেয়া হচ্ছে।’

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই এমপি মনে করেন, রোহিঙ্গাদের সাহায্য নিয়ে প্রশংসা ব্যতীত বর্তমান শাসক দলের বৈধতা ও ক্ষমতা নিয়ে কেউ চ্যালেঞ্জ ছুড়লে তাকে নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এটা বলা হয়ে থাকে যে, গত সরকারের কোনো ভালো দিক ছিল না। কিন্তু দুটি খারাপ কাজ কখনো একটি ভালো কাজ হতে পারে না। সমালোচকদের কণ্ঠরোধ করা হলে দেশটি কেঁপে উঠবে। উৎস: আমাদের সময়.কম।

ad

পাঠকের মতামত