
খালেদার আপিল নিষ্পত্তি নিয়ে ইসিতে যা ঘটেছিল
বিএনপির কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মনোনয়ন প্রশ্নে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বিভক্ত আদেশ দিয়েছে।তবে সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিবেচনায় আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিন আসনেই তার মনোনয়ন অবৈধ বলে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের দেয়া আদেশ বহাল রাখা হয়েছে।খালেদা জিয়া এবার ফেনী-১ এবং বগুড়া-৬ ও ৭ আসনে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন। কিন্তু, দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হওয়ায় তার তিনটি মনোনয়নপত্র বাতিল করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা।শনিবার সন্ধ্যায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে খালেদা জিয়ার আপিল নিষ্পত্তি করে নির্বাচন কমিশন।সেখানে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী মনোনয়ন বৈধতার বিষয়ে যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন।
শুনানিতে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলামের সঙ্গে তর্কযুদ্ধ চলছে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এজে মোহাম্মাদ আলীর।ঠিক তখনই নিজের পরিচয় দিয়ে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার খালেদা জিয়ার নির্বাচনী আসনের (ফেনী-১ এবং বগুড়া-৬ ও ৭) নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘আইনগত বিবেচনায় বেগম খালেদা জিয়ার উক্ত আপিল মঞ্জুর করার পক্ষে আমি রায় প্রদান করছি।’তার এই ঘোষণার পরে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা এজলাসের মধ্যেই উল্লাস করতে থাকেন। ঠিক তখনই নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানাম বলে উঠেন, ‘না, না, এই ডিসিশান সবার না। শুধু একজনের।তখন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলতে থাকেন, ‘একজনের রায় হলেই আপিল মঞ্জুর বলে বিবেচিত হবে।’
এরপর ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘এটা একজনের রায়, ফুল বোর্ডের নয়।’পরে পর্যায়ক্রমে তিন নির্বাচন কমিশনার— শাহাদাত হোসেন, রফিকুল ইসলাম ও কবিতা খানম খালেদা জিয়ার আপিল নামঞ্জুরের পক্ষে রায় দেন।সবার ব্যক্তিগত রায়ের পরে সিইসি কেএম নূরুল হুদা আপিল গ্রহণের বিপক্ষে রায় দেন। ফলে ৪-১ ভোটে খালেদা জিয়ার আপিল নামঞ্জুর হয়।শুনানি শেষে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘কমিশনার মাহবুব তালুকদার মনোনয়ন গ্রহণের পক্ষে রায় দিয়েছেন। আর সিইসিসহ বাকিরা খালেদা জিয়ার বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছেন। সুতরাং সংখ্যাগরিষ্ঠ রায়ে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পাচ্ছেন না।’উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। তবে আপিল বিভাগে তার সাজা বেড়ে ১০ বছর হয়। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালতে খালেদা জিয়ার ৭ বছরের কারাদণ্ড হয়।