235896

জিয়ার মরণোত্তর বিচার চাইলেন বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ভাগ্নে ও বরিশাল-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি পুনরায় আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত হয়েছেন। একইসঙ্গে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটিরও সভাপতি তিনি।বুধবার সন্ধ্যায় নিজ আসনে বিজয় দিবসের প্রস্তুতি সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য এই দাবি করেন আবুল হাসানাত। তিনি বলেন, ‘বিএনপি ও জামায়াত সব সময়ই দেশে হত্যা আর ক্যু’র রাজনীতিতে করে আসছিল, যার ধারাবাহিকতায় জাতির পিতাসহ আমার পরিবার সদস্যদের হত্যা করে। হত্যা করে দেশের চার বুদ্ধিজীবিকে। ৭৫ পরবর্তী সময়ে সকল হত্যার ঘটনায় জিয়াউর রহমান গংদের হাত ছিল। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমি জিয়ার মরণোত্তর বিচার দাবি করছি।’

সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা ও পানিসম্পদ মন্ত্রী আবদুর রউফ সেরনিয়াবাতের এই সন্তান বলেন, ‘এ সকল হত্যার পর স্বাধীনতা বিরোধীরা ক্ষমতায় এসে সেই সকল হত্যার বিচার বন্ধ করতে কালো আইন “ইনডিমিটি অধ্যাদেশ” জারি করে হত্যার বিচার বন্ধ করে দেয়। হত্যাকারীদের সম্মানজনক পূণর্বাসন করেছে বিএনপি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে অনেক প্রতিকুল অবস্থার মধ্যেও অনড় থেকে ওই সকল হত্যার বিচার কাজ করেছেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ওই স্বাধীনতা বিরোধীরা ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করেছে।’২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলার বর্বরতার ঘটনা উল্লেখ করে হাসনাত আরও বলেন, ‘হামলার পরও আল্লাহর রহমতে মানুষের দোয়ায় আজও শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন। তারা ঝালকাঠিতে দুই বিচারককে হত্যা করে দেশ অস্থিতিশীল করতে ৬৪ জেলায় একযোগে সিরিজ বোমা হামলা করেছে। বাংলা ভাইয়ের মতো সন্ত্রাসীর জন্ম দিয়েছিল। আজ জিয়া বেঁচে থাকলে তাকে বিচারে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলতে হতো। তারপরও আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে জিয়ার মরোনোত্তর বিচার দাবি করছি।’

আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না মন্তব্য করে শেখ হাসিনার ফুপাতো ভাই বলেন, ‘জামায়াত-বিএনপির ক্ষমতায় থাকার সময় যে অত্যাচার, নির্যাতন, হত্যা আর ধর্ষণ করেছিল তার কোনো সমুচিত জবাব আমরা দেইনি। ২০১৪ সালে নির্বাচনোত্তর সহিংসতা ও পেট্রোল বোমায় অগনিত মানুষ হত্যা করে ওই স্বাধীনতা বিরোধীরা। আমি দক্ষিণাঞ্চলে মুজিব বাহিনীর প্রধান হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছি, কোনো অংশে তাদের চেয়ে আমাদের জনবল, ক্ষমতা কোনোটারই কমতি নেই। কিন্তু না, দলীয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিহিংসার রাজনীতি বিশ্বাস করে না বলেই দশ বছর ক্ষমতায় থেকেও আমরা কারো ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করিনি। ওদের নির্যাতনে ২০০১ সালে হত্যা, ধর্ষণ আর নির্যাতনের শিকার হয়ে আপনারা এলাকা ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। ওরা সন্ত্রাসী, জঙ্গি হামলাকারী আর যেন কোনো সন্ত্রাসী দল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে না পারে সেদিকে আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে।’

বরিশাল-১ আসনের বাকাল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মৃণাল চন্দ্র জয়ধরের সভাপতিত্বে আয়োজন করা এই সভাটির। এতে আরও বক্তব্য দেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস, উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন সেরনিয়াবাত, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রইস সেরনিয়াবাত, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা খান, গৌরনদী পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারিছুর রহমান হারিছ, বাকাল ইউপি চেয়ারম্যান ও শ্রমিকলীগ নেতা বিপুল দাস, উপজেলা আওয়ামী লীগের সমন্বয়ক আবু সালেহ লিটন, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি সাইদুল সরদার, সাধারণ সম্পাদক অনিমেষ মণ্ডল প্রমুখ।

ad

পাঠকের মতামত