
ঘরে এক ছেলের লাশ, আরেক ছেলে কোলে নিয়ে দা হাতে বাবা
মাদকাসক্ত এক বাবা তার আড়াই বছরের ছেলেকে ‘হত্যা করে’ আরেক ছেলেকে কোলে নিয়ে দা হাতে ঘরের ভেতর ঘুরছেন খবর পেয়ে রাজধানীর বাংলামোটরের একটি বাড়ি ঘিরে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান বলছেন, চার বছর বয়সী অন্য ছেলেটির নিরাপত্তার স্বার্থেই তারা ভেতরে ঢুকতে পারছেন না।বাংলামোটর লিংক রোডের ১৬ নম্বর হোল্ডিংয়ে একতলা ওই বাড়ির সামনে বুধবার সকাল থেকে ভিড় করে আছে কয়েকশ উৎসুক মানুষ। তাদের সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে র্যাব ও পুলিশ সদস্যদের।একতলা ওই বাড়ির মালিক নুরুজ্জামান কাজল নামের এক ব্যক্তি, যিনি মাদকাসক্ত বলে স্বজনদের ভাষ্য। তারা বলছেন, কাজলই তার ছোট ছেলে সাফায়াতকে খুন করে এখন বড় ছেলে সুরায়েতকে কোলে নিয়ে বাড়ির ভেতরে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন।
গুলশান থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) মাহবুবর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, “একটি শিশু মারা গেছে এটা নিশ্চিত। তবে কীভাবে মারা গেছে এটা আমরা বলতে পারব না। ময়নাতদন্ত হলে জানা যাবে। তার বাবা আরেকটা বাচ্চাকে কোলে নিয়ে চাপাতি হাতে বাড়ির ভেতরে ঘুরছে।আমরা তাকে দরজা থেকে শান্ত করার চেষ্টা করছি।”ওই বাড়ির পাশেই আরেকটি বাসায় কাজলের বড় ভাই নুরুল হুদা উজ্জ্বলের পরিবার থাকে।তিনিও তার ভাইকে শান্ত করে রায়েতকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছেন, কিন্তু লাভ হয়নি।এর মধ্যে সকালে গোয়েন্দা পুলিশের একজন সদস্য ওই বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করলে কাজলের দায়ের কোপে তিনি হাতে আঘাত পান।উজ্জ্বল বলেন, কাজলের মাদকাসক্তির কারণে পরিবারে অশান্তি দীর্ঘ দিনের। আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে তার সম্পর্কও ভালো নয়।
“ও সারাদিন নেশা করে, খায় আর ঘুমায়। এটা ওর নিজের বাড়ি। চাচার সাথে গত ঈদের আগেও মারামারি করেছে। এত দিন আমরা সহ্য করছি, পুলিশ আনি নাই, শুধু ওই বাচ্চাগুলোর কারণে। এখন বাচ্চাটাকেই মেরে ফেলছে। কাজলের মার খেয়ে ওর বৌ বাপের বাড়ি চলে গেছে। বাসায় দুই বাচ্চা নিয়ে ও থাকতো। আজকে এই কাণ্ড করল।”
শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, “ভেতরের অবস্থা এখনও নিশ্চিত না, বুঝতেই পারছেন। উনি উত্তেজিত অবস্থায় আছেন। ছোটো ছেলেটার কথা চিন্তা করে আমরা একটু সময় নিয়ে অভিযান চালাতে চাই।”