
এরশাদ সিএমইএইচে
অসুস্থ হয়ে পড়ায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সোমবার মধ্যরাতে তাকে সিএমইএইচে ভর্তি করা হয়। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, রাত ১টার দিকে পার্টির চেয়ারম্যানকে সিএমইএইচ এ ভর্তি করা হয়েছে। অসুস্থ্যতা নাকি শারিরিক চেক আপ সেটা নিশ্চিত করতে পারেননি আসুদ।সিএমইএইচে ভর্তি করা হলেও পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ শতভাগ ভালো আছেন, সুস্থ আছেন বলে দাবি জানিয়েছেন পার্টির নতুন মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা। তিনি বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান সুস্থ আছেন। সকালে তিনি পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, ছেলে সাদসহ পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেছেন। আমি নিজেই কথা বলেছি।
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী অফিসে সম্মিলিত জাতীয় জোটের নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। সমবায় প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, শারিরিক চেকআপের জন্য পার্টির চেয়ারম্যানের সিঙ্গাপুরে যাওয়ার প্রয়োজন আছে, কিন্তু দলের স্বার্থেই ১০ ডিসেম্বর আগেই সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন না তিনি।হাওলাদারের পদত্যাগ প্রসঙ্গে নতুন মহাসচিব বলেন, শারিরিক অসুস্থতার জন্য এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার নিজেই পার্টি চেয়ারম্যানের কাছে পদত্যাগ করেছেন। তিনি এখনো আমাদের পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য। মনোনয়ন নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় তার মন কিছুটা খারাপ।’ প্রাক্তণ এই মহাসচিবসহ সবার সহযোগিতায় জাতীয় পার্টিকে শক্তিশালী করার কথা জানান রাঙ্গা।
মনোনয়ন বাণিজ্যে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা- জানতে চাইলে জাপার নতুন মহাসচিব বলেন, দু একদিনের মধ্যে একটি কমিটি করে দেওয়া হবে। সেই কমিটি এ বিষয়ে তদন্ত করবে। যারা টাকা পয়সা দিয় হয়রানির শিকার হয়েছেন তারা যদি অভিযোগ দেন তদন্ত হবে। তদন্ত শেষে প্রমাণ হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।প্রাক্তণ মহাসচিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে সেটাও তদন্ত হবে। কারণ এসব অভিযোগ সত্যতা অসত্যতা নিয়ে নানা বক্তব্য রয়েছে। তদন্ত কমিটি খতিয়ে দেখবে এবং প্রেসিডিয়াম সভায় আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, সারাদেশে যারা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তারা নিজেরাও জানেন না যে তারা মহাজোটে মনোনয়ন পাচ্ছেন কিনা। আমি নিজেই জানি না মনোনয়ন পাবো কিনা। তাহলে কি করণে নির্বাচনের জন্য অহেতুক টাকা পয়সা খরচ করে তাদের মাঠে নামিয়ে ক্ষতি করা হলো। আমরা চাই মহাজোট থেকে আসন চূড়ান্ত করবো। তারপর আসনের বিষয়টি একসঙ্গে ঘোষণা দেবো। যাতে আসন নিয়ে বিভ্রান্তি না থাকে। সেটা যদি ১০টি হয় ১০টি, ১শটি হলে ১শটি।রাঙ্গা বলেন, মহাজোটের চুড়ান্ত প্রার্থী তালিকা সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ নির্বাচন করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মহাজোটের সঙ্গে জাতীয় পার্টি নির্বাচন করবে জানিয়ে রাঙ্গা বলেন, ৯ ডিসেস্বরের মধ্যেই মহাজোটের প্রার্থী তালিকা চুড়ান্ত করা হবে। যারা নির্বাচনে জিততে পারবে এবং মাঠ পর্যায়ে গ্রহণযোগ্যতা আছে তাদেরই মনোনয়ন দেওয়া হবে।তিনি বলেন, মহাজোটের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই চুড়ান্ত হবে মহাজোটের প্রার্থী তালিকা। তবে, জাতীয় পার্টি ৫৪ থেকে ৫৫টি আসন প্রত্যাশা করছে, যেখানে জাতীয় পার্টি জিতে আসতে পারবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়, এস.এম. ফয়সল চিশতী, মো. হাফিজ উদ্দিন, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, এটিইউ তাজ রহমান, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সম্মিলিত জাতীয় জোটের শরিকদল বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব- এম.এ. মতিন, জাতীয় ইসলামী মহাজোটের চেয়ারম্যান আবু নাসের ওয়াহেদ ফারুক, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালাল আহমেদ, বিএনএ-এর চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলী মনি, ইসলামী ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসলাম উদ্দিন দুলাল, মাইনুদ্দিন মোল্লা, জাতীয় পার্টির দিদার বখত, মো. নোমান, সোমনাথ দে, জিয়াউল হক মৃধা, শওকত চৌধুরী, অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম মিলন, নুরুল ইসলাম ওমর, আমির হোসেন ভূঁইয়া, শওকত চৌধুরী, মো. শাহজাদা, মো. হেলাল উদ্দিন, মো. বেলাল হোসেন, এম.এ. রাজ্জাক খান, কাজী আবুল খায়ের প্রমুখ।
জাপার মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা বিকালে দলের কাকরাইল কার্যালয়ে আসলে নেতাকর্মীরা তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। দায়িত্ব নেওয়ার পর দ্বিতীয় দিন তিনি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসেন এবং মহাসচিবের দপ্তরে বসেন।পরে তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় জাপার মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা নেতাকর্মীদের সহযোগিতা কামনা করেন। দলকে ঢাকায় শক্তিশালী করতে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান।মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি জহিরুল আলম রুবেলের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন মহানগর উত্তর সভাপতি এস এম ফয়সল চিশতী, সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম সেন্টু, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন রাজু, জহিরুল ইসলাম জহির, আরিফ খান, সরদার শাজাহান, গোলাম মোহাম্মদ রাজু, আমির উদ্দিন আহমেদ ডালুসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।