235185

এরশাদের স্থলে রওশন!

গত দুই দিনের জাতীয় পার্টিতে রীতিমতো যেন ঝড় বয়ে গেল। হঠাৎ করেই রদবদল এলো নেতৃত্বে। রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরিয়ে নতুন মহাসচিব হলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মশিউর রহমান রাঙ্গা। গুঞ্জন রয়েছে , চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্থলে আসতে পারেন দলটির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ।একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, আগামী সপ্তাহে চিকিৎসার জন্য জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সিঙ্গাপুর চলে যেতে পারেন। এমন ইঙ্গিত দিয়েছে দলটির নবনিযুক্ত মাহসচিব মশিউর রহমান রাঙাও। মঙ্গলবার তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত ১০ ডিসেম্বরের পর নেওয়া হবে।

অসুস্থতা নিয়ে কয়েক দিন আগেও ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি হন এরশাদ। দলীয় সূত্রগুলো তখনো জানিয়েছিল, চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যাওয়া প্রয়োজন এরশাদের।একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগমুহুর্তে হঠাৎ ‘অসুস্থ হয়ে’ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি হন এরশাদ। এসময় তার ও মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারের বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ তোলেন জাতীয় পার্টির বেশ কয়েকজন মনোনয়নপ্রত্যাশী।এরপর পটুয়াখালী-১ আসনে হাওলাদারের মনোনয়নপত্র বাতিলের পর সোমবার আকস্মিকভাবেই জাতীয় পার্টির মহাসচিব পরিবর্তনের ঘোষণা আসে। এরশাদ দলীয় চেয়ারম্যানের ক্ষমতাবলে হাওলাদারকে সরিয়ে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রাঙ্গাকে মহাসচিব করেছেন বলে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের প্রেস সচিব সুনীল শুভ রায় জানান।

এদিকে মহাসচিবের দায়িত্ব নেওয়ার পর সোমবার বনানীতে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে মশিউর রহমান বলেন, চেয়ারম্যানের (এরশাদ) অবস্থা ভালো । গতকাল রাতেও তার সঙ্গে ছিলাম। তার বাসায় গিয়ে দেড় ঘণ্টা কথা বলেছি। আজ সকালে নাশতা করেছি। চিকিৎসার জন্য তিনি দেশের বাইরে যেতে পারেন। চিকিৎসক তাকে দেখেছেন। তার রক্তে হিমোগ্লোবিনের সমস্যা আছে। হিমোগ্লোবিন কমে গেলে তিনি দুর্বল হয়ে যান। তবে এরশাদের বিদেশ যাওয়ার দিন-ক্ষণ সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি জাতীয় পার্টির নতুন মহাসচিব।মহাসচিবের দায়িত্ব নিয়ে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে রাঙ্গা মনোনয়ন বাণিজ্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, এই অভিযোগের প্রসঙ্গে সত্যতা, অসত্যতা রয়েছে। নানা বক্তব্য আছে। আমরা জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যরা গত রাতে আলোচনা করেছি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জানান, জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের অন্যতম শরিক দল জাতীয় পার্টি। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য দলটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের এখন পর্যন্ত আসন সমঝোতা হয়নি। এরশাদের দল থেকে প্রায় ২০০ জন প্রার্থী বিভিন্ন আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে নতুন মহাসচিবের দাবি করেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমন্বয় করে একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছে জাতীয় পার্টি।এর আগে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে মহাজোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন দিয়েছিলেন এরশাদ। প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিলও করেন। পরে হঠাৎ আবার নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন এরশাদ। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশও দেন দলীয় প্রার্থীদের। একপর্যায়ে সিএমএইচে ভর্তি করা হয় এরশাদকে। তিনি সেখানেই ছিলেন ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত। সেই নির্বাচনে এরশাদ নিজেসহ তার দলের ৩৩ জন নেতা সাংসদ নির্বাচিত হন। পরে তারা প্রধান বিরোধীদল হিসেবে সংসদে যায়। সূত্র:বাংলাদেশ জার্নাল

ad

পাঠকের মতামত