234991

লাশ দাফনে সুদ ব্যবসায়ীর বাধা!

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শহিদুল ইসলাম (৩৫) নামে এক শ্রমিকের লাশ গ্রামে দাফনের সময় স্থানীয় এক সুদ ব্যবসায়ীর বাধা দেওয়ার খবর মিলেছে। এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, মৃত শহিদুল মারা যাওয়ার আগে বেশ কিছু টাকা সুদের উপর ধার নিয়েছিলেন। পরে অবশ্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে লাশ দাফন করা হয়।নিহত শহিদুল চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের জগতলা গ্রামের মৃত সোহরাব উদ্দিনের ছেলে এবং দাফনে বাধা দেয়া সুদ ব্যবসায়ী হলেন একই গ্রামের গুজরত আলীর ছেলে জামাত আলী। সে একজন এলাকার প্রখ্যাত সুদে কারবারি বলে এলাকাবাসী জানায়।জানা গেছে, রোববার (২ ডিসেম্বর) সকালে পাবনা সদর উপজেলার নুরপুর বাইপাস এলাকায় কাঠবোঝাই ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে চাটমোহর উপজেলার ৩ শ্রমিক নিহত ও একজন আহত হন। হতাহত সবার বাড়ি উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নে। নিহতদের একজন জগতলা গ্রামের শহিদুল ইসলাম। রোববার দুপুরে নিহতদের মরদেহ গ্রামে পৌঁছার পর হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। স্বজনদের আহাজারীতে ভারী হয়ে ওঠে গ্রামের বাতাস।

নিহত শহীদুলের পরিবারের পক্ষ থেকে জানা যায়, জগতলা গ্রামের গুজরত আলীর ছেলে জামাত আলী এলাকায় একজন চিহ্নিত সুদ ব্যবসায়ী। তিনি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সুদের কারবারের সাথে জড়িত। তার হাতে অনেকেই জিম্মি হয়ে পড়েছে।নিহত শহীদুল মৃত্যুর বেশকিছু দিন আগে জামাত আলীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা সুদে নেয়। প্রতিমাসে সুদের টাকা পরিশোধও করতেন শহীদুল। আসল টাকা পরিশোধ না করলেও সুদ বাবদ প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা দিয়েছিলেন তিনি।এর মাঝে রোববার মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান দরিদ্র দিনমজুর শহীদুল ইসলাম। পাবনা থেকে মরদেহ গ্রামে আসার পর দাফন করার জন্য বিকেলে গোরস্থানে নেওয়া হয়। সেখানে মরদেহ দাফনে বাধা দেন সুদ ব্যবসায়ী জামাত আলী। টাকা পরিশোধ না করে শহীদুল মারা যাবেন, এটা হয়তো মানতে পারেননি ওই সুদ ব্যবসায়ী। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং লাশ দাফন করা হয়।

এ বিষয়ে মূলগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বকুল জানান, ‘বিষয়টি অত্যন্ত অমানবিক। জানাযায় বাধা দেওয়ার বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে জামাত আলীকে সতর্ক করা হয়েছে। গ্রামবাসীকে সুদ ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’

ad

পাঠকের মতামত