
এমপি হতে চান ইমারত শ্রমিক সাইদুল আলম
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন প্রাথমিক স্কুলের গন্ডি পার হতে না পারা মেহেরপুরের সাইদুল আলম শাহীন। তিনি মেহেরপুর জেলা জাকের পার্টির সাধারণ সম্পাদক। ব্যাপক ভোটে জয়লাভ এবং তাদের পার্টিই সংখ্যাগরিষ্ট এমপি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করবেন বলে আশা করছেন তিনি। দল সরকার গঠন করলে শ্রমিক মন্ত্রী হবেন বলেও আশা প্রকাশ করেছে ইমারত শ্রমিক শাহীন। ।মেহেরপুর জেলা শহরের শিশুবাগান পাড়ায় নিজের ছোট্ট একটি বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন শাহীন। তিনি শ্রমজীবী মৃত মহিরদ্দিনের ছেলে। ছত্রিশ বছরের বিবাহিত শাহীন দুই সন্তানের জনক। স্ত্রীর নাম আসমিনা খাতুন এবং ছেলে-মেয়ের নাম আরমান হোসেন ও শারমিন খাতুন। মেয়ে কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্রী। ছেলে তারসাথে জুগালির (রাজমিস্ত্রি/ইমারত মিস্ত্রির সাহায্যকারি) কাজ করে।
আর্থিক সংকটে লেখা পড়া করতে পারেননি শাহীন। বর্তমানে মোটামুটি সচ্ছ্বল জীবনযাপন করেন তিনি।বছর দশেক আগে জাকের পার্টিতে যোগ দিলে ২০১৭ সাল থেকে জেলা জাকের পার্টির সাধারণ সম্পাদক হন শাহীন। শাহীনের কথায়- ‘দেশের খেটে খাওয়া অল্প শিক্ষিত লোকজনের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্যই তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। জনসংযোগেও দেখা যাচ্ছে তাকে।দলীয় মনোনয়ন পাবার পর অনুভূতি জানতে চাইলে শাহীন বলেন-দলীয় মনোনয়ন পাবার পর মনে হচ্ছিল আকাশের চাঁদ হাতে পেলাম। সেসময় খুব অস্থির লাগছিল। মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছিল না। দলীয় মনোনয়ন দেবার পর আমাদের দলের চেয়ারম্যান পীরজাদা মোস্তফা আমীর ফয়সাল মোজাদ্দেদ আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন কর্মী সমর্থকদের নিয়ে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়তে। ভোটের খরচের ব্যাপারেও তাকে কোনো চিন্তা ভাবনা না করতে বলা হয়েছে।
তার সাথে আলাপকালে শাহীনের মা সাহেদা খাতুন হাসিমুখে ছেলের পাশে এসে দাঁড়ান। ছেলে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় মা হিসেবে কেমন অনূভূতি জানতে চাইলে সাহেদা বলেন- বলে বোঝানো যাবে না। জয় পরাজয় থাকবেই। তিনি আরও বলেছেন- এতদিন অন্য প্রার্থীদের ভোট দিয়েছি। এবার নিজের ছেলেকে ভোট দেব। মানুষের কাছে ছেলের জন্য ভোট চাইবো।শাহীন বলেন, দল ক্ষমতায় গেলে তিনি শুধু এমপি নন, আরো বড় কিছু হবেন। তিনি মন্ত্রীও হতে পারেন। তিনি শ্রমিক মন্ত্রী হয়ে দেশের শ্রমিক শ্রেণির মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাবেন।জেলা শহরের পোস্ট অফিস মোড়ে একটি নির্মাণাধীন বাড়ির সার্টারিং খোলার সময় কথা হয় জাকের পার্টির এই প্রার্থীর সাথে। তিনি জানালেন প্রতিমাসে তার উপার্জন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা।
নির্বাচনী বাজেট কত রেখেছেন জানতে চাইলে বলেন, কর্মী সমর্থকরা ব্যয় বহন করবে। প্রয়োজনে কেন্দ্রের সহযোগিতা নেয়া হবে।শাহীন জেলা ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের ১০৫০ নম্বরের সদস্য। তিনি আরো বলেছেন, ‘আদব, বুদ্ধি, মহব্বত ও সাহস’ এই চার স্তম্ভের উপর যে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে তার জীবনের চলারপথ সহজ হবে। তাদের দলের প্রতিটি কর্মী এই স্তম্ভে বিশ্বাসি।শাহীনের সমর্থক কামাল হোসেন মিন্টু বলেন, ভারতের দস্যুরানী ফুলন দেবীও সে দেশের এমপি হয়েছিলেন। ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, আমেরিকার সর্বকালের সেরা রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিঙ্কন, ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জন মেজর প্রমুখেরা শৈশব ও কৈশোর আমাদের শাহীনের চেয়েও গরীব ছিল।