207844

কামরাঙ্গীরচরে স্বামী-স্ত্রীর ইয়াবা কারখানা

মাদকের বিষাক্ত থাবায় জর্জরিত রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর। অলিগলিসহ যেখানে-সেখানে চলছে মাদকের বিকিকিনি। স্থানীয় মাদকসেবী তো বটেই, আশপাশের অনেক এলাকার নেশাখোরও চরাঞ্চলের এই থানা এলাকায় আসেন সহজে ও সুলভে মাদক কেনার জন্য।

সময় সময় পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিপুলসংখ্যক মাদকসেবী ও মাদক কারবারিকে আটক করলেও আইনের ফাঁক গলে জামিনে বেরিয়ে আসছে তারা। ফলে মাদকের বিষাক্ত বলয় থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না কামরাঙ্গীরচর। এই যখন দশা, তখন নতুন আরেকটি তথ্য বেরিয়ে এসেছে স্থানীয় থানা পুলিশের অভিযান থেকেÑ খোদ এই এলাকায়ই রয়েছে ইয়াবা তৈরির কারখানা। গত বুধবার পুলিশ অভিযান চালায় কামরাঙ্গীরচরে মাদক কারবারের মূলহোতা বলে অভিযুক্ত আলমগীর হোসেনের বাসায়। আর এতেই বেরিয়ে আসে মরণ নেশা ইয়াবা উৎপাদনের কারখানার সন্ধান; জব্দ করা হয় ইয়াবা তৈরির মেশিন।

জানা গেছে, প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ মাদক কারবারিকে ইয়াবা সরবরাহ করতেন আলমগীর হোসেন ও তার স্ত্রী ইমু আক্তার। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত বুধবার রাত সাড়ে নয়টায় আলমগীরের ইয়াবা কারখানায় অভিযান চালায় কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ। এ সময় ইয়াবা তৈরির মেশিন এবং পাউডার, বিভিন্ন কেমিক্যাল, রঙসহ ইয়াবা তৈরির বিপুল পরিমাণ কাঁচামাল আটক করা হয়। এ ছাড়া ১৩০টি ইয়াবা ও মদ উদ্ধার করা হয়। আলমগীর হোসেন পালিয়ে গেলেও অভিযানকালে তার স্ত্রী ইমু আক্তারকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

জানা গেছে, জব্দকৃত মেশিনে একসঙ্গে ৫২টি ইয়াবা তৈরি করা যেত। পুলিশ জানায় ইয়াবা কারখানার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বাড়ির মালিক শহিদুল ইসলামকেও আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া গত কয়েক দিনে চিহ্নিত ১০ মাদক ব্যবসায়ীকেও আটক করা হয়। গতকাল হেরোইনসহ আটক করা হয় মাদক ব্যবসায়ী সুরুজ এলাহী সুইজ্জাকে। তার বিরুদ্ধে তিনটি মাদক মামলা ও দুইটি হত্যা মামলা রয়েছে।

অভিযানে অংশ নেওয়া কামরাঙ্গীরচর থানার এসআই হান্নান হোসেন তালুকদার বলেন, এর আগে মাদক ব্যবসায়ী দম্পত্তি মদ-গাঁজার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। কিন্তু বর্তমানে মরণনেশা ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গেও জড়িয়ে পড়ে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে এসব উদ্ধার করা হয়। এরা আগেও তারা মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিল।
কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি মো. শাহিন ফকির আমাদের সময়কে বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স। কিন্তু মাদক ব্যবসায়ীদের আটক করলেও তারা জামিনে বেরিয়ে এসে পুরনো পেশায় ফিরে যায়। এরা সবাই চিহ্নিত। প্রত্যেকের নামে পাঁচ থেকে বিশটিরও অধিক মামলা রয়েছে। তবে থানা পুরো নিয়ন্ত্রণে। মাদক নির্মূলে ক্রাশ প্রোগ্রাম চলছে। মাদক ব্যবসায়ীদের ঠাঁই হবে না এই থানায়।

ad

পাঠকের মতামত