অমর একুশে গ্রন্থমেলা থাকছে তারকাদের বই
বিনোদন ডেস্ক।।
বছর ঘুরে আবার এলো অমর একুশে গ্রন্থমেলা। আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি থেকে জানানো হয়েছে, গতকাল থেকে শুরু হওয়া মেলায় এরই মধ্যে অনেক নতুন বই এসেছে। দেশের পাঁচ শতাধিক প্রকাশনী সংস্থা থেকে প্রতিদিনই আসবে নতুন নতুন বই। এই মিলনমেলায় দেশের জনপ্রিয় তারকারাও প্রকাশ করেন তাদের লেখা বই। সেই ধারাবাহিকতায় এ বছরও মেলায় পাওয়া যাবে বেশ কয়েকজন তারকার বই।
রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা : লেখক হিসেবেও পরিচিত শ্রোতাপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী কনকচাঁপা। একজন লেখক হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে ২০১০ সালে। সে বছর অনন্যা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় ‘স্থবির যাযাবর’। এর পর ‘মুখোমুখি যোদ্ধা’ ও ‘মেঘের ডানায় চড়ে’ নামে আরও দুটি বই উপহার দিয়েছেন পাঠকদের। তিন বছর পর আবারও কনকচাঁপা একটি স্মৃতিচারণমূলক বই নিয়ে হাজির হচ্ছেন। বইটির নাম ‘কাটা ঘুড়ি’। ‘প্রাণের বাংলা’ নামক একটি অনলাইন পোর্টালে দুই বছর ধরে নিয়মিত স্মৃতিচারণমূলক লেখা লিখে আসছেন তিনি। সেই লেখাগুলোই একত্রিত করে বই আকারে প্রকাশ হচ্ছে। প্রকাশ করছে অনন্যা প্রকাশনী। কনকচাঁপা বলেন, ‘প্রতিটি মানুষই একটি দর্শন নিয়ে জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আমার জীবনের দর্শন আমার বাবা-মা। তাদের সঙ্গে জীবনের নানা মুহূর্তের স্মৃতিচারণমূলক গল্পই উঠে আসবে এবারের বইতে। আমি ধন্যবাদ দিতে চাই আবিদা নাসরিন কলিকে। তার উৎসাহে নিয়মিত এ ধরনের লেখা না লিখলে এই বই প্রকাশ হতো না।’ এদিকে এবারের গ্রন্থমেলার শীর্ষ সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন কনকচাঁপা। জামাল রেজার লেখা এবং ফরিদ আহমেদের সুর-সংগীতে ‘বই আমার প্রিয় বন্ধু, ভালো বন্ধু বই, সুরে সুরে বলি তাই, বই এবং বই’ এমন কথার গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে গানটির রেকর্ডিংয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
নরেশ ভূঁইয়া : নরেশ ভূঁইয়াকে সবাই অভিনেতা এবং নাট্যনির্দেশক হিসেবেই জানেন। এর পাশাপাশি তিনি লেখালেখিও করেন। ১৯৯০ সালে নরেশ ভূঁইয়ার লেখা দুটি উপন্যাসের একুশে বই মেলায় প্রকাশিত হয়। নাম ছিল ‘যেখানে তারার আলো’ এবং ‘অচিন মানুষ’। এর পর অভিনয় এবং নির্মাণ নিয়ে নরেশ ভূঁইয়া ব্যস্ত হয়ে উঠেন। ফলে আর লেখালেখির দিকে মনোযোগ দিতে পারেননি। তবে গত বছর গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হয় তার লেখা প্রেমের কবিতার বই এসেছে। বইটির নাম দিয়েছিলেন ‘নীতা তোমার জন্য’। এ বছরও বই প্রকাশ করছেন তিনি।
আশনা হাবিব ভাবনা : এবারের গ্রন্থমেলায় অভিনেত্রী ভাবনা নিয়ে আসছেন তার লেখা প্রথম উপন্যাস ‘গুলনেহার’। উপন্যাসটির মূল চরিত্র ৮৭ বছরের বৃদ্ধা গুলনেহার। তাকে ঘিরেই পুরো উপন্যাসটি লেখা হয়েছে। তার স্বপ্ন, প্রেম আর কষ্টের চিত্র পাওয়া যাবে এ উপন্যাসে। এরই মধ্যে প্রচ্ছদ তৈরি হয়েছে। চলছে ছাপা ও বাইন্ডিংয়ের কাজ। তাম্রলিপি প্রকাশনা থেকে আসছে উপন্যাসটি। ভাবনা বলেন, ‘আমি খুবই উচ্ছ্বসিত। প্রথম সিনেমা মুক্তির মতো টেনশন হচ্ছে। একটি মানবিক উপন্যাস লেখার চেষ্টা করেছি। জানি না কতটা পেরেছি।’
শানারেই দেবী শানু: গত বছরের মেলায় অনন্যা প্রকাশনী থেকে প্রকাশ পেয়েছিল অভিনেত্রী শানুর প্রথম গ্রন্থ ‘নীল ফড়িং কাব্য’। যেখানে স্থান পেয়েছিল ৫৮টি কবিতা। এবার তিনি নিয়ে আসছেন ‘লাল এপিটাফ’। বইটিতে থাকবে ৭০টি কবিতা। শানু বলেন, ‘প্রথম বই প্রকাশের পর থেকে সবাই খুব উৎসাহ দিয়েছেন। প্রথম বইয়ের মাধ্যমে সিটি-আনন্দ আলো পুরস্কারও পেয়েছি। এবার মেলায় নতুন বই নিয়ে হাজির থাকছি। এ বইয়ের সবগুলো কবিতা ২০১৭ সালের গ্রন্থমেলার পর লেখা।’
সাজিয়া সুলতানা পুতুল : সংগীতশিল্পী সাজিয়া সুলতানা পুতুল মেলায় নিয়ে আসছেন তার লেখা প্রথম উপন্যাস। উপন্যাসের নাম ‘একটি মনস্তাত্ত্বিক আত্মহনন ও তার পুতুলকাব্যিক প্রতিবেদন’। একটি মেয়ের গল্প উঠে আসবে এ উপন্যাসে। উপন্যাসটি উৎসর্গ করা হয়েছে লেখক প্রয়াত হুমায়ুন আজাদকে। উপন্যাসটি প্রকাশ করছে প্রিয়মুখ প্রকাশনী। এর আগে কবিতার বই প্রকাশ করেছিলেন। নিজের লেখা কবিতা সুর করে গানও করেছেন। গত দুই গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হয়েছে তার দুটি কবিতার বই।
মাকসুদা আক্তার প্রিয়তি: আত্মজীবনী লিখছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মিস আয়ারল্যান্ড মাকসুদা আক্তার প্রিয়তি। ১৭ বছর আগে আয়ারল্যান্ডে পাড়ি দেওয়ার অভিজ্ঞতা ও বৈমানিক পেশার সঙ্গে শোবিজ জগতে কাজ করার নানা ঘটনা এবার তিনি প্রকাশ করবেন বইয়ের পৃষ্ঠায়। নাম ঠিক না হওয়া বইটি এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশ করার কথা জানান তিনি। প্রিয়তি বলেন, ‘আমার লেখার কাজ প্রায় শেষ। তবে কিছু সম্পাদনা বাকি আছেন। বেশ কয়েকজন প্রকাশক যোগাযোগ করেছেন। এখনো চূড়ান্ত কথা হয়নি।’