হাসপাতালের বিছানায় রক্ত দিয়ে প্রেমিকার মাথায় সিঁদুর দিলেন প্রেমিক
টান-টান চিত্রনাট্য। বলিউডের প্রেমকাহিনিকেও রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় এই লাভ-র্বাডদের ভালবাসার গপ্পো। আধুনিক যুগের এই জুটি লায়লা মজনু কিংবা রোমিও জুলিয়েটকেও লজ্জায় ফেলে দিল। এ গল্প প্রেমের স্বপ্নপূরণের।
লায়লাকে ভালবেসে প্রেমে আত্নবলিদান দিতে হয়েছিল মজনুকে। দুই প্রেমিক প্রেমিকার নির্মম পরিণতির সে ইতিহাস সকলেরই জানা। প্রেমের গল্পে ট্র্যাজিক নায়ক হয়েই থাকতে হয়েছিল রোমিও-মজনুকে৷ তাঁরা পারেননি। কিন্তু বলরাম পারলেন।
ভাবী শ্বশুর মশাইয়ের হাতে চ্যালা কাঠের আঘাত খেয়েও মাথায় নোয়ায়নি তাঁর ভালবাসা। মাথা ফাটিয়ে হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই প্রেমিকাকে রক্ত দিয়ে সিঁদুর পড়িয়ে নতুন ঘর বাঁধার স্বপ্নপূরণ করলেন বলরাম। সেই ঘটনারই সাক্ষী রইলেন হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্স, আয়ারা। এমন প্রেম দেখে হতবাক তাঁরাও। বলছেন, ‘এ যেন লায়লা মজনু কিংবা রোমিও জুলিয়েটকেও হার মানিয়ে দিল৷ ওরা সুখে থাকুক সেই কামনাই করি। ’ সোমবার রাতে এই প্রেমের গল্প গোটা হাসপাতাল চত্বরে ছড়িয়ে পড়ে।
বনগাঁ হাসপাতাল সংলগ্ন শক্তিগড় এলাকার বাসিন্দা প্রেমিক বলরাম ও প্রেমিকা পিউলি। পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি বলরামকে জামাই হিসাবে পছন্দ হয়নি পিউলির বাবার। তাই বনগাঁ কলেজের বিএ চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রী পিউলির জীবন থেকে তাঁর প্রেমিক বলরামকে হটাতে পুলিশের দ্বারস্থও হয়েছিলেন তাঁর বাবা তাপস বিশ্বাস। তবুও হার মানেনি প্রেমিক যুগল। বাধা বিঘ্ন যতই আসুক না কেন দাঁতে দাঁতে চেপে সহ্য করে পরস্পরের হাত ধরে থেকেছেন৷ সোমবার রাতে সেই কঠিন লড়াইয়ের মধুরেন সমাপয়েত হল৷
ওই দিন বিকেলে বাড়িতে ডেকে চ্যালা কাঠ দিয়ে বলরাম বিশ্বাসকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিলেন পিউলির বাবা, অভিযোগ এমনটাই। গুরুতর জখম অবস্থায় বলরামকে ভরতি করা হয় বনগাঁ হাসপাতালে। প্রেমিকের এমন অবস্থার খবর পেয়েই ছুটে আসেন পিউলি। তাও আবার শাঁখা সিঁদুর কিনে বিয়ের জন্য তৈরি হয়েই হাসপাতালে পৌঁছন প্রেমিকা৷ আর তারপরই আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ৷ হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই রক্তাক্ত অবস্থায় প্রেমিকা পিউলিকে ফাটা কপালের রক্ত দিয়ে সিঁদুর পরিয়ে দেন বলরাম৷