এবার শাবনূর-পপিকে ধুয়ে দিলেন মুনমুন
বিনোদন ডেস্ক।। ঢাকাই সিনেমার বেশ আলোচিত-সমালোচিত নায়িকা ‘মুনমুন’। ১৯৯৭ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত দাপটের সঙ্গে অভিনয় করে গেছেন এই নায়িকা। তবে বিভিন্ন সময় হয়েছেন সমালোচিত। ২০০৩ সালের পরে চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে অনেকটা গুটিয়ে নেন মুনমুন। চলচ্চিত্র পাড়ার অনেকেই বলে থাকে সে সময় মুনমুনকে কেন্দ্র করেই অশ্লীলতা নির্ভর অ্যাকশন চলচ্চিত্র নির্মিত হতে শুরু হয়। তবে এ বিষয়টি মানতে নারাজ অ্যাকশন লেডি মুনমুন। চলচ্চিত্র থেকে বেশ কিছু দিন দূরে থাকলেও আবারো চলচ্চিত্র নিয়ে ব্যস্ত হয়েছেন এই নায়িকা।
দর্শক আপনাকে অশ্লীল ছবির নায়িকা হিসেবেই জানেন, এটা কিভাবে দেখছেন জানতে চাইলে সরাসরি মুনমুন বলেন, ‘আপনারা সাংবাদিকরা অনেকে জানেন আবার অনেকে না জানার ভান ধরেন। ২০০৩ সালে আমি ফিল্ম ছেড়ে চলে গেলাম। এর পরের ৪টা বছর অশ্লীলতায় ঘিরে ছিলো বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। এটার জন্য আপনি কয়জন শিল্পীকে দায়ী করবেন। যখন অশ্লীল সিনেমা শুরু হয় আমি তখন কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। আমাকে কেউই কখনো বলেনি আমি অশ্লীল চলচ্চিত্রের নায়িকা।
আমার ছবি আপনারা দেখেন আমি যে ড্রেসগুলো পড়েছি, আমি যেসব সিন করেছি তা কি অন্য নায়িকারা করেনি? শাবনূর করেনি? পপি করেনি? সবাই এমন পোশাক পড়ছে। দোষ কেন মুনমুনের একার হবে?
আমি এটার জন্য অপমানিত হচ্ছি। পরে পরিচালক সমিতি, শিল্পী সমিতি, প্রযোজক সমিতি সবাই আমার পক্ষে কথা বলছে। আজ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সবাই আমাকে ওয়েলকাম করছে। কারণ আমি অনেক লক্ষ্মী নায়িকা ছিলাম। কারণ আমি কোনো দাম দেখায়নি। সবাই আমাকে অনেক পছন্দ করেন। তাছাড়া আমাকে অশ্লীল হিসেবে পরিচিত করার পেছনে অনেক সাংবাদিক দায়ী। আমি নিজে বলবো না, ইউটিউবে অনেক ছবি আছে আমার আপনারাই দেখেন কোনটা অশ্লীল।’
নানা কারণে চলচ্চিত্র থেকে দূরে সরে গিয়েছিলাম উল্লেখ করে মুনমুন বলেন, ‘ হিরোদের সঙ্গে রোমান্টিক সিন করতেও ভয় পেতাম, কারণ করবো একটা, স্ক্রিনে না আবার অন্য কিছু দেখায়! কাউকে বিশ্বাস করতে পারছি না। যার কারণেই ওই সময়ে ফিল্ম ছেড়ে চলে যাওয়া। ব্যাপারটা এমন না, আমি জোর করে চলে গেছি। আমি ভাবলাম, এ মুহূর্তে ফিল্ম থেকে দূরে থাকি। পরে ভালো সময় হলে আবার ফিরে আসবো।
আমি যখন ফিরে আসলাম তখন দেখলাম আমার এতো শত্রু, যা আমি কল্পনাও করিনি। আমি খুব সহজ সরল ছিলাম, অনেক কিছুই বুঝতাম না। যে যেভাবে কাজ করতে বলেছে ওই ভাবেই করেছি। আপনারা হয়তো বলবেন, আপনি অনেক রাগী ছিলেন শো-আপ করছেন। আমাকে পরিচালক শো-আপ করতে বলছে, শাবনূর যে ধরনের চরিত্রে কাজ করতো আমাকে তো ওই ধরনের চরিত্র দেয়নি। আমাকে পরিচালক হাতে অস্ত্র নিয়ে মানুষ মারতে দিয়েছে। আমাকে যে ধরনের চরিত্রে কাজ করতে দিছে পরিচালক, আমি সেভাবেই করেছি। আমি তো শুধু অভিনয় করেছি কিন্তু এর জন্য আমার ব্যক্তি জীবনে বদনাম করে ক্ষতি করার কি মানে?’
আমি এক ধরনের দৃশ্যে অভিনয় করতাম অথচ পর্দায় দেখতাম অশ্লীল কিছু এমনটা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ফিল্মে সহশিল্পী চরিত্রে যারা কাজ করে যেমন ফাইটিংয়ের জন্য যাদের আনা হয়েছে, এদের দিয়ে রেপ সিন গুলোতে কাপড় খুলে দৃশ্যগুলো নিতো। আমি প্রায় দেখতাম শুটিং চলাকালে আশেপাশে কিছু মেয়ে ঘোরাঘুরি করছে, আমি জানতাম না এদের দিয়ে কি করানো হয়। একদিন আমাকে মেকাপের একটা ছেলে বলেন, আপু জানেন এদের দিয়ে কি কাজ করানো হয়?
আমি বললাম না, আমি তো জানি না। কি আর করানো হবে ফাইটের দৃশ্য করানো হয়? ওই ছেলে বলে, না আপা ওদের দিয়ে খোলানো হয়। আপনার রেপ সিন হইতেছে আপনি তো এই শর্ট দিবেন না। আপনার কাপড়টা ওদের পড়িয়ে পুরা খোলানো হয়। এগুলো পরে হলে প্রদর্শন করে। যখন এসব একের পর এক শুনতে থাকলাম বিভিন্ন জনের কাছে, আমি তো আর গ্রামে ছবি দেখতে জেতাম না। যদি দেখতাম তাহলে বুঝতাম ছবিতে কি কি যোগ করা হচ্ছে। এরপরই সিদ্ধান্ত নিলাম ফিল্ম ছেড়ে চলে যাবো।
ভবিষ্যতে আর্ট ফিল্ম বানানোর ইচ্ছা আছে বলে জানান মুনমুন। প্রায় ৯৩ টি ছবির নায়িকা মুনমুনের জন্ম ইরাকে হলেও তার পৈতৃক বাড়ি চট্টগ্রামে।