শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়ায় বিরল সাপ
মৌলভীবাজার:: বেম্বো ট্রিংকিট কে একটি বিরল প্রজাতির সাপ। এ সাপটির কোনো বাংলা নাম নেই। মাঝে মধ্যে ডিসকভারি চ্যানেলে এ সাপটি দেখা যায়। বাস্তবে এ সাপের দেখা মেলা খুব দুষ্কর। কারণ এটি দুর্লভ একটি সাপ। আর এই দুর্লভ সাপটির দেখা পাওয়া যায় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে।
৩০ ডিসেম্বর উপজেলার ফিনলে টি কো¤পানির সোনাছড়া চা বাগানের শ্রমিকরা এই সাপটি দেখতে পায়। ওই দিন বাগানের শ্রমিক নারায়ণের বাড়ির লাকড়ি রাখার ঘরে সাপটি
ঢুকে পড়ে। শ্রমিকরা সাপটি চিনতে না পেরে স্থানীয় বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে খবর পাঠায়। পরে চা বাগান থেকে সাপটি উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গলে বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে রাখা হয়। বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব বলেন, সাপটি এখন আমাদের হেফাজতে রয়েছে। দুই-এক দিনের মধ্যে সাপটি লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ছেড়ে দেওয়া হবে।
জানা যায়, বেম্বো ট্রিংকিট কে দুধরাজ সাপেরই একটি জাতভাই। তবে দুধরাজ পাওয়া গেলেও বেম্বো ট্রিংকিট সাপ খুব কম পাওয়া যায়। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ২০১১ সালে লাউয়াছড়া বনে বেম্বো ট্রিংকিট কে দেখা যায়। আর বাংলাদেশ ছাড়া দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে এ সাপটি দেখা যায়। এর মধ্যে রয়েছে ভারতের দার্জিলিং, সিকিম, আসাম, অরুণাচল, মিয়ানমার, ভুটান, থাইল্যান্ড, লাওস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, নেপাল, দক্ষিণ চীন, তাইওয়ান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া।
ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সের প্রধান নির্বাহী ও সরীসৃপ গবেষক শাহরিরায় সিজার রহমান বলেন, এ সাপটি দেখতে খুব সুন্দর। মাথা ছোট, তীক্ষè ও চকচকে। গায়ের রং লাল। কালো ডোরা কাটা। এদের কোনো বিষ নেই। এ সাপটি প্রধানত সবুজ বনে বাস করতে বেশি পছন্দ করে। এরা ইঁদুর ও অন্যান্য প্রাণী খেয়ে জীবন ধারণ করে। এ সাপটি সারা বিশ্বেই দুর্লভ।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুল এইচ খান বলেন, বছরদুয়েক আগে লাউয়াছড়া বনের রাস্তার ওপর দুটি মৃত বেম্বো ট্রিংকিট কে পাওয়া গিয়েছিল। এবার আবারও এ সাপটি পাওয়া যাওয়ায় এটাই প্রমাণ হলো, আমাদের দেশে এরা এখনো টিকে আছে।