সৌদি আরবে কফিলের অত্যাচার থেকে বাঁচতে প্রবাসীদের জন্য সুখবর দিল সৌদি সরকার
সৌদি আরবে কর্মরত বিদেশি শ্রমিকদের ‘গ্রিন কার্ড’ বা স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে সনদ দেওয়ার কথা ভাবছে দেশটির সরকার। আর এই পরিকল্পনাকে দারুণভাবে স্বাগত জানিয়েছে ওই দেশে বসবাস করা প্রবাসীরা।
সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সৌদি রাজপরিবারের উপযুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান এই পরিকল্পনার কথা জানান। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন কার্ড ব্যবস্থার অনুকরণে ফি’র বিনিময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে দক্ষ শ্রমিক নিয়োগ করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সৌদি গেজেট জানিয়েছে, সৌদি আরবের রাজস্ব আয়ের সবচেয়ে বড় অংশই আসে তেল বিক্রির মাধ্যমে। তেল বিক্রির ব্যবসা থেকে আয়ের মূল উৎস সরাতে গ্রিন কার্ড চালুর উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা হাতে নিতে যাচ্ছে দেশটির সরকার। গ্রিন কার্ড ব্যবস্থার মাধ্যমে অন্তত ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের চিন্তা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সৌদি আরবে বসবাসরত ভারতের ব্যবসা উন্নয়ন বিষয়ক নির্বাহী আমির কাইয়ুম আরব নিউজকে বলেন, ‘যারা এখানে ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে বাস করছেন তারা এই পরিকল্পনাকে দারুণভাবে স্বাগত জানিয়েছেন। আমি পরামর্শ দেব যেসব প্রবাসীর অন্তত একজন সন্তান স্বশস্ত্র বাহিনীতে স্বেচ্ছায় যোগ দেবে তাদের নাগরিকত্ব দিতে।’
সৌদি সরকারের এমন পরিকল্পনাকে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন সালেহ আমপাসো নামে একজন সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার। তিনি বলেন, ‘দেশটিতে আমি ১৯৯২ সাল থেকে অবস্থান করছি। সৌদি আরবে যেসব প্রবাসী জীবনের অর্ধেকের বেশি সময় কাটিয়ে দিয়েছেন আমিও তাঁদের মধ্যে একজন। আমার সব সন্তানের জন্ম এখানে। তাই যদি আমাদের নাগরিকত্ব বা গ্রিন কার্ড দেওয়া হয় তবে তা হবে দারুণ সম্মানের।’
দ্য ফেডারেশন অব লেবার কমিটির চেয়ারম্যান নিদাল রিদওয়ান সৌদি গেজেটকে বলেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে একটি স্বাধীন কমিটি গঠন করে দেওয়া হবে বলে আশা করছেন তিনি।
রিদওয়ান বলেন, ‘নতুন এই পদ্ধতি সৌদি আরবের অর্থনীতি ও সমাজে উন্নয়ন বয়ে আনবে। সৌদি আরবের নাগরিকদের মতো প্রবাসী নাগরিকরাও জাকাত দেবেন, বিভিন্ন কর দেবেন এবং বিমার প্রিমিয়াম দেবেন। তাঁরাও নিজেদের ব্যবসা, শিল্প কারখানার মালিক হতে পারবেন।’
সৌদি আরবে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিক ডা. এম এস করিমুদ্দিন বলেন, ‘যদি এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয় তবে আমি সবার আগে আবেদন করব। এটা প্রবাসীদের জন্য দারুণ খবর।’ এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সৌদি আরবকে আরো আপন করে নিতে পারবেন তাঁরা বলে জানান তিনি।