
পেটে বাচ্চা রেখেই সেলাই : ক্ষতিপূরণ দিতে হবে খাদিজাকে
জমজ সন্তানের একজনকে ভূমিষ্ঠ করে আরেকজনকে রেখেই পেট সেলাই করে দেয়ার ঘটনায় ভুক্তভোগী মা খাদিজাকে ৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কুমিল্লার লাইফ হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক এই ক্ষতিপূরণ দেবেন।
রোববার (২৬ নভেম্বর) বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের বেঞ্চ এ রায় দেন। এছাড়া অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক হোসনে আরা বেগমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিএমডিসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ব্যবস্থা নেয়ার আগ পর্যন্ত ওই চিকিৎসককে অস্ত্রোপচার থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
আদেশে লাইফ হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে বলা হয়েছে। রোববার অস্ত্রোপচারে সংশ্লি¬ষ্ট চিকিৎসক হোসনে আরা বেগম এবং লাইফ হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৯ অক্টোবর সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও কুমিল্লার সিভিল সার্জনসহ তিনজনকে তলব করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। সে অনুযায়ী গত ৭ নভেম্বর আদালতে হাজির হয়ে তারা ঘটনার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন। এর আগে পত্রিকায় প্রকাশিত এ সংক্রান্ত খবর আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহফুজুর রহমান মিলন। পরে আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দেন।
কুমিল্লার হোমনা উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের আউয়াল হোসেনের স্ত্রী খাদিজা আক্তারকে (২২) গত ১৮ সেপ্টেম্বর দাউদকান্দির গৌরীপুর লাইফ হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অপারেশন করা হয়। সেখানে খাদিজার পেটে একটি সন্তান রেখেই অপারেশন শেষ করার অভিযোগ ওঠে ডা. হোসনে আরার বিরুদ্ধে। খাদিজার গর্ভে দুইটি সন্তান থাকলেও চিকিৎসক হোসনে আরা অপারেশন করে একটি সন্তান বের করে অপরটি টিউমার বলে অপারেশন সমাপ্ত করেন। পরবর্তীতে খাদিজা বাড়িতে যাওয়ার পর দীর্ঘ এক মাস তার পেটে ব্যথা ছিল। এ নিয়ে চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে যান তিনি। পেটের ব্যথা বাড়তে থাকলে খাদিজা উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৫ অক্টোবর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। দ্বিতীয় অপারেশনের পর খাদিজার গর্ভে থাকা অপর বাচ্চাটি মারা যায়।