
আমি হয়তো প্রতারণার শিকার, ইচ্ছে করেই আমার সঙ্গে……..
মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতা থেকে ফিরেছেন। এখন নিজেকে অন্য মানুষ মনে হচ্ছে?
একদম না, আমি আগের সেই জেসিয়াই আছি। তবে এটা ঠিক, আমার জীবনে কিছু পরিবর্তন এসেছে। সাধারণ একজন মেয়ে থেকে ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ হওয়া, এরপর ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতায় বিশ্বের সব সুন্দরীদের সঙ্গে লড়াই করা চাট্টিখানি ব্যাপার না। নতুন অনেক কিছু শিখেছি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিযোগীদের সঙ্গে মাস খানেক থাকতে পেরে আমার ভাবনা-চিন্তায় কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে।
প্রতিযোগিতায় যাওয়ার আগে মানুষ আপনাকে নিয়ে নানা কথা বলেছে।
আমি কখনোই কারও কথায় কান দিইনি। আমি আমার মতো করে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি।
অনেকে অনেক কথা বলবে, তাই বলে নিজের পথচলা তো থামিয়ে রাখতে পারব না। নিজের মেধা আর যোগ্যতার ব্যাপারে আমার যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস আছে, সেই শক্তিতে আপন মনে এগিয়ে চলি। আরেকটা কথা, জগতে কিছু মানুষ থাকবেই, যারা শুধু পরনিন্দা আর পরচর্চা করে বেড়াবে।
মিস ওয়ার্ল্ড ক্যাম্পে কার সঙ্গে ভালো বন্ধুত্ব হলো?
অনেকের সঙ্গে। তাঁর মধ্যে সবচেয়ে ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠেছে কেনিয়া, নেপাল আর মিসরের প্রতিযোগীদের সঙ্গে। আর যিনি ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ হয়েছেন, ভারতের মানুষী শিলারের সঙ্গেও আলাপ হয়েছে, তবে তা খুব উল্লেখ করার মতো নয়।
পুরো এক মাস মিস ওয়ার্ল্ড ক্যাম্পে থেকেছেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অভিজ্ঞতার কথা বলুন।
পুরো জার্নিটাই ছিল মজার আর আনন্দের। আমরা অনেক অনেক ভ্রমণ করেছি। অনেক কিছু চিনেছি, দেখেছি, জানতে পেরেছি।
কী দেখে খুব অবাক হয়েছেন?
অনেক কিছু দেখে। তবে এসব গল্প আরেক দিন করব।
‘হেড টু হেড চ্যালেঞ্জ’ পর্বে প্রতিযোগীরা ভিডিওর মাধ্যমে নিজের দেশ আর সংস্কৃতি উপস্থাপন করেছেন। আপনার ভিডিও দেখে মনে হলো, এটি খুব তাড়াহুড়ো করে তৈরি হয়েছে।
আমি হয়তো প্রতারণার শিকার, ইচ্ছে করেই আমার সঙ্গে এমনটা করা হয়েছে
ঠিকই বলেছেন। অবশ্যই তা ভালো হয়নি। আমাকে বলা হয়নি যে এটা পরিচিতির ভিডিও। ওই ভিডিওটা ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনের দিন করা হয়েছে। আমাকে বলা হলো, দুই মিনিটের একটা ভিডিও হবে। বললাম কিসের? বলল, এমনি।
আমার ধারণা ছিল না, এটা পরিচিতির ভিডিও। পরে ভিডিও দেখে আমি স্টুপিড হয়ে যাই। আমার ভিডিও দেখে সবাই বুঝতে পেরেছে, ওটা কোনো ভাবে যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে করা হয়নি।
আমি কতটা আপসেট ছিলাম, তা ভিডিও দেখে বুঝেছেন সবাই। এই ভিডিও ছাড়ার পর আমি হতাশ হয়ে পড়ি। আমি হয়তো প্রতারণার শিকার। ইচ্ছে করেই আমার সঙ্গে এমনটা করা হয়েছে।
‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতা থেকে কী শিখেছেন?
সব পরিস্থিতিতে নিজেকে কীভাবে শক্ত রাখতে হয়, তা শিখেছি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে যত প্রতিযোগী এসেছেন, তাঁদের সবার চেয়ে আমার প্রস্তুতি ছিল সবচেয়ে কম। সব প্রতিযোগীর আয়োজক দেশ তাদের প্রতিযোগীদের যেভাবে সহযোগিতা করেছে, আমি তার কিছুই পাইনি।
খুব মন খারাপ নিয়ে ঢাকা থেকে আমার যাত্রা শুরু হয়। চীনে পৌঁছার পর একসময় ভাবলাম, যখন এসে পড়েছি, শেষ পর্যন্ত লড়ে যাব। সবচেয়ে কম প্রস্তুতিতে সেরা চল্লিশে থাকতে পেরেছি, আমি তাতেই তৃপ্ত। এই প্রতিযোগিতা থেকে আমরা যা শিখেছি, তা পরবর্তী সময়ে আমার দারুণ কাজে লাগবে।
সেরা চল্লিশে আসার পর মনে হয়েছে, আপনিও সেরা হতে পারেন?
মোটেই না! সত্যি বলতে, সেরা চল্লিশের বেশির ভাগ প্রতিযোগী ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ হওয়ার মতো যোগ্যতা রাখেন।
আগামী দিনগুলোর জন্য কী পরিকল্পনা করছেন?
এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। আপাতত সপ্তাহ খানেক সময় নেব, এরপর ভাবব—কী করব।
সুত্রঃ প্রথম আলো