
‘আমি প্রতিদিন সকালে হাঁটতে বের হতাম,গেটে দায়িত্বরত প্রহরী আমাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করত।’
টিউশনের কারণে রাতে হলে ফিরতে দেরি হলে প্রহরীরা উল্টাপাল্টা কথা বলেন। দেরিতে আসায় হল সুপারও ‘বাজে’ মন্তব্য করেন। আর হল প্রভোস্টকে বিষয়টি জানালে তিনি উল্টো চটে যান।
– এভাবেই যুগান্তরকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের পরিস্থিতির কথা জানালেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রী।
আরেক ছাত্রী বলেন, ‘আমি প্রতিদিন সকালে হাঁটতে বের হতাম। ওই সময় আশপাশে কেউ না থাকায় গেটে দায়িত্বরত প্রহরী মোস্তাক আমাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করত।’
‘পোশাক নিয়ে একদিন প্রহরী খুবই বাজে মন্তব্য করলে বাধ্য হয়ে আমি সকালে বের হওয়াই বন্ধ করে দিই’ বলে উল্লেখ করেন ওই ছাত্রী।
দিন দিন পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় রোববার ফুঁসে ওঠেন বঙ্গমাতা হলের আবাসিক ছাত্রীরা।
এ দিন বিকালে তারা হল প্রশাসন ও কর্মচারীদের অসদাচরণ ও অশালীন মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন।
পরে রাতে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ফাহিমা খাতুনের কাছে চার দফা দাবিসহ লিখিত অভিযোগ জমা দেয়া হয়। এতে প্রায় ৩০০ আবাসিক ছাত্রীর স্বাক্ষর রয়েছে।
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর তা সমাধানে সাত দিন সময় চেয়ে ছাত্রীদের শান্ত করেন প্রভোস্ট।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, হলের ফটকে দায়িত্বরত প্রহরী ও হলসুপার তাদের সঙ্গে কয়েক দিন ধরে খুব খারাপ আচরণ করছে।
হলের ফটকে কর্তব্যরত প্রহরী মোস্তাক ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করেন। তিনি ছাত্রীদের পোশাক নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেছেন।
সন্ধ্যায় কোনো ছাত্রীর হলে ফিরতে দেরি হলে হলসুপার মোহসিনা ছাত্রীদের বকাঝকার একপর্যায়ে অশালীন মন্তব্য করেন। ছাত্রীরা বিষয়টির প্রতিবাদ করলে মোহসিনা তাদের হল থেকে বের করে দেয়ার হুমকিও দেন।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে হলসুপার মোহসিনা পারভীন বলেন, ‘হল থেকে যেভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়, আমি সেই নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করি। কেউ দেরিতে এলে খাতায় স্বাক্ষর করে হলে ঢুকতে দেয়া হয়। কাউকে হয়রানি করা হয় না।’
তবে প্রহরী মোস্তাক বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন বলেন, ‘আমি ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের অভিযোগ শুনেছি। হলটি নতুন। তাই কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। তবু প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা গুলো সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সূত্র: যুগান্তর।