180050

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, আমাদের সন্তানদের বাঁচান

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী। আশা করি ভালো আছেন। শেষ পর্যন্ত আপনাকে খোলা চিঠি লেখার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমি একটা ‘সম্মানজনক’ পেশার সাথে জড়িত। তাই আমার জীবন হয়তো কোনোমতে চলে যাবে, চিন্তা করি না। কিন্তু আমার বা আমার মত অন্য নাগরিকদের সন্তানদের কী হবে? অনেক চিন্তা হয় নতুন প্রজন্ম নিয়ে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রে অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হলেও শিক্ষা-সংস্কৃতি ও সামাজিক মূল্যবোধের ভয়ঙ্কর অবনমন ঘটেছে।

এই পুরো প্রক্রিয়ায় আপনার একার দায় নেই, আমরা সবাই দায়ী। আপনি আপনার সাধ্যমত চেষ্টা করে চলেছেন, কিন্তু শিক্ষক-অভিভাবক-আমলাদের একটা অংশ যদি দূষিত হয়ে যায়, সেখানে আপনি একা কী করে অবনমন ঠেকাবেন?

কিন্তু দেশের অন্য কারো কাছে তো আমরা দাবি নিয়ে শিক্ষা-সঙ্কটের সমাধান চাইতে পারি না। তাই আপনাকেই লিখছি। আপনি হলেন শিক্ষামন্ত্রী, দেশের পুরো শিক্ষাব্যবস্থার দায়-দায়িত্ব আপনার। প্রাথমিক শিক্ষার জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় থাকলেও, শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে আপনি নিশ্চয় সবকিছুর খোঁজ-খবর নিয়ে থাকেন। শিক্ষা ব্যবস্থায় বিশেষ করে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে এক শ্রেণীর শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে যেভাবে দুর্নীতি-প্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে বেশ আতঙ্ক আর উদ্বেগ নিয়ে বেঁচে থাকছি আমরা।

আপনাকে উদ্দেশ্য করে যখন লিখতে বসলাম, তখন বাজে রাত ১টা। গরমের দিনে কষ্ট হলেও এখন জানালা দিয়ে আরামের বাতাস ঘরে ঢুকছে। আমার সাড়ে তিন বছরের ছেলে এই মাত্র ঘুমিয়েছে। আমার ঘুম আসছে না। আমার ছেলের জন্য সেদিন স্কুল দেখতে গিয়েছিলাম। সরকারি চাকুরীজীবীদের বেতন বাড়ানোর ফলে জীবনের মান আমাদের বেড়েছে বেশ। তবু আমাদের অঢেল টাকা নেই। সীমিত আয়ের মানুষ। বাচ্চার জন্য মনে মনে যেমন একটা স্কুলের ছবি এঁকেছিলাম, দেখতে যাওয়া স্কুলটা প্রায় তেমনি। অনেক টাকাও লাগবে না, আবার একেবারে মানহীনও হবে না। মোটামুটি মানের। বাচ্চার জন্য আমার কোনো তাড়াহুড়ো ছিল না, এখনো নাই। সাড়ে তিন বছরের বাচ্চার আবার স্কুল কিসের? কিন্তু অস্থির, নাগরিক সমাজ আমাকে বাধ্য করেছে অসময়ে উদ্যোগী হতে।

আমরা স্কুলে গিয়েছি ৬ বছর বয়সে, আর আমাদের বাচ্চাদের অনেকে তিন বছর থেকেই স্কুলে যায়। প্রজন্মান্তরে এই পরিবর্তন দেখে গর্বে আমাদের বুক ফুলে থাকার কথা, কিন্তু আমরা যেন দিন দিন কুঁচকে যাচ্ছি। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, আপনার মত মানুষ ইচ্ছা করলেই যেখানে সেখানে যেতে পারেন না। প্রটোকল এর বিষয় আছে। তাছাড়া আপনি কোথাও গেলে, যদি যথাযথ দাপ্তরিক ও রাজনৈতিক সম্মান না পান, তাহলে কেমন দেখায়! আপনার পক্ষে যত্রতত্র যাওয়া সম্ভব নয়। আপনার সম্মান, আপনার লেভেল আমরা বুঝি।

কিন্তু আপনি যদি গোপনে কাউকে না জানিয়ে খুব বিশ্বস্ত এক দুইজনকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন স্কুল, স্কুলের মাঠ, ক্লাসরুম, পরীক্ষার হল, কোচিং আর প্রাইভেট স্যারদের বাসায়, ড্রয়িংরুমে গোপনে সময়ে-অসময়ে ঢুঁ মারতে পারতেন, তাহলে এমন কিছু দৃশ্য দেখতেন, যা আপনাকে খুব আহত করত। আপনি বিস্মিত হয়ে দেখতেন; দেখতে-শুনতে ভদ্র মানুষেরা কীভাবে নিজের সন্তানদের তাৎক্ষণিক সাফল্যের জন্য জাতির বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছেন। শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীকে সাজেশনের নামে আগাম প্রশ্ন এনে দিয়ে দিচ্ছে। শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীদেরকে তার কাছে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করছে, যদি কেউ নির্দিষ্ট ব্যাচে না পড়ে তাহলে সে ছাত্র বা ছাত্রীকে পরীক্ষায় ফেল করানো হচ্ছে।

আমাদের অভিভাবক ও শিক্ষকদের এই দুনম্বর অংশটাকে শুদ্ধ করা আমাদের ঢাকার বুড়িগঙ্গার কালো পানি শোধনের মতই কঠিন মনে হবে আপনার কাছে। এখন জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা চলছে। বাবা-মা-শিক্ষকদের একটা অংশ কী এক মরণ নেশায় বুঁদ হয়ে আছে, তার কিছু উদাহরণ ছবিসহ আপনাকে দেখতে দিব। যদিও এসব ছবি আমাদের মূলধারার মিডিয়ার সংগৃহীত নয়। এখন ফেসবুক, ইউটিউবের যুগ। মানুষের হাতে হাতে ক্যামেরা। কে কোনদিক দিয়ে কোন ছবি তুলে ফেলে, কেউ জানে না। মানুষ শুধু ছবি তুলেই ক্ষেমা দিচ্ছে না, ফেসবুকে ও ইউটিউবে দিয়ে দিচ্ছে। মূলধারার মিডিয়া যেখানে গরহাজির, নাগরিক সাংবাদিকরা সেখানে হাজির। এবং নাগরিক সাংবাদিকদের বড় অংশই বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজে পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরা। এখনো আমাদের তরুণ-তরুণীদের সবাই গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দেয়নি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আনিস জামান পিপু। নভেম্বর ৯ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে সকালে একটি ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে যায় সে। মাঠে গিয়ে সে যখন পৌঁছায় তখন বাজে কেবল সাতটা। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, আপনাকে একদিন এই ভোরে জাহাঙ্গীরনগরে হাঁটার আমন্ত্রণ রইল। আপনার অসাধারণ সব অভিজ্ঞতা হবে। স্কুল অ্যান্ড কলেজের খেলার মাঠ ও চারপাশের পরিবেশ আপনাকে বিমোহিত করবে, আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি। যাইহোক, সকাল সাতটায় জামান পিপু কুয়াশা ভেজা মাঠ ও বৃক্ষরাজি দেখে মনে যে প্রশান্তি পেয়েছিল, ঘণ্টা দেড়েক পরে তা উবে গিয়ে সেখানে রাজ্যের অস্বস্তি আর বিষাদ এসে জড়ো হয়।

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ও সচেতন ছাত্র জামান পিপুর ফেসবুক পোস্ট থেকেই জেনে নিন কী হচ্ছে বাংলাদেশে। সে লিখেছে, ‘ইন্টার-ডিপার্টমেন্ট ক্রিকেট টুর্নামেন্ট এবং নিজ ব্যাচের খেলা চলার সুবাদে, দর্শক হিসেবে আজ সকাল ৭ টায় ‘জাহাঙ্গীরনগর স্কুল ও কলেজ মাঠ প্রাঙ্গনে হাজির হই। খেলা ৮:৩০ ঘটিকা নাগাদ গড়াতে না গড়াতেই শুরু হয় বিভিন্ন স্কুল থেকে জে,এস,সি পরীক্ষার্থী বহনকারী বাসের আগমন। হঠাৎ খেয়াল করলাম, একজন শিক্ষক ৩ জন ছাত্রীকে বাসগুলোর পেছনে নিয়ে যান! সন্দেহ হওয়াতে ছুটে যেয়ে দেখি, তিনি তার এন্ড্রয়েড ফোনটি বের করে, দেখে দেখে বলে দিচ্ছেন একের পর এক অবজেক্টিভ প্রশ্নের উত্তর! এভাবে তিনি একটু পর পর কয়েকজন করে পরীক্ষার্থীদের নিয়ে যেয়ে বলতে থাকেন সবগুলো উত্তর!

তিনি শুধু একাই নন, অন্য বাসগুলো থেকেও কয়েকজন শিক্ষক একই কাজ করতে থাকেন! আমি আরও অবাক হলাম, যখন দেখতে পেলাম, কিছু অভিভাবক ও তাদের সন্তানদের নিয়ে একইভাবে, ফোন দেখে উত্তর মুখস্ত করাতে থাকেন! হঠাৎ দেখলাম, প্রায় সকল শিক্ষার্থীর হাতে বইয়ের বদলে, এন্ড্রয়েড ফোন! শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নেয়ার বদলে, শিক্ষার্থীরা নকল বা চিটিং করায় ব্যাস্ত ছিল’!

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে রাষ্ট্র ও সমাজের মঙ্গলের জন্য যা করা দরকার জামান পিপু তাই করেছে। সে তার কাজ করে দিয়েছে। আপনি প্লিজ এখন ছবিতে দৃশ্যমান শিক্ষক, অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীগুলোকে এরেস্ট করানোর ব্যবস্থা করুন। শিক্ষার্থীদের অ্যারেস্ট করানোর কথা বললাম এই কারণে যে, এরাই পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে প্রশ্ন ফাঁসের চেষ্টা করবে। এমন নীতি-নৈতিকতাহীন, দুনম্বরি চিন্তা-ভাবনার শিক্ষক-অভিভাবক ও শিক্ষার্থী আমাদের দরকার নেই। এমনকি প্রশ্ন ফাঁসকারী শিক্ষকদের ধরে ক্রসফায়ারে দিলেও সাধারণ মানুষ রাগ করবে বলে মনে হয় না। র‌্যাব-পুলিশ সন্ত্রাসীদের ধরে মাঝে মাঝে ক্রসফায়ারে দেয়, আমরা রাগ করে ক্রসফায়ারকে বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলি। এই প্রশ্নফাঁসকারী শিক্ষকরা তো বড় বড় সন্ত্রাসীদের চেয়ে বড় অপরাধী। পুরো জাতির মাজা ভেঙ্গে দিচ্ছে এরা। আমাদের কোমলমতি ছেলে-মেয়েরা ছোটবেলা থেকেই দুর্নীতি শিখছে। এভাবে চলতে থাকলে একটা দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা কখনোই সম্ভব হবে না।

প্রশ্ন ফাঁস না করে, শিক্ষকের অবৈধ সহযোগিতা না নিয়ে, বৈধ পথে যেসব ছেলে-মেয়ে পড়ালেখায় ভালো করছে তাদেরকেও অন্যরা সন্দেহজনক দৃষ্টি নিয়ে দেখছে। যে বাবা-মা রাতের বেলায় প্রশ্নের তালাশ না করে ছেলে-মেয়ের পাশে বসে বাতাস করতে থাকেন, যে ভাই-বোন তাদের জুনিয়রদেরকে অবৈধ পথে চিন্তা করতে বাধা দিচ্ছেন, তাদেরকে অনেক সময় নানাবিধ প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। সততা ও দেশপ্রেমের মত গুণাবলীকে বাংলাদেশের অনেক মানুষ বেকুবি বলে মনে করে। সৎ মানুষ দেখলে অনেকে বলে, ‘ঐ দেখ একটা বেকুব যাচ্ছে,’। এতদিন আমাদের বড়দের অনেকে দুনম্বরি কাজ করে। তাদেরকে ঠেকানোর জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন কাজ করছে। কিন্তু বাচ্চারা যে দুনম্বর হয়ে যাচ্ছে, তাদেরকে তো দুদক গ্রেপ্তার করতে পারবে না। আমাদের সন্তানরা যে স্কুল লাইফেই পরিবার থেকেই দুর্নীতি করা শিখছে। এদেরকে বাঁচানোর কৌশল বের করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে সততা, নীতি-নৈতিকতা ও দেশপ্রেমের কথা বলি, তখন ওদের অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে তাদের ফেলে আসা স্কুল ও কলেজ জীবনের কথা বলে কেঁদে ফেলে। শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে খুব গুরু-গম্ভীর কথা এরা বলে না। কিছু ঘটনা বর্ণনা করে। স্যার/ম্যডামরা তাদের সাথে কী বলত, কী করত ইত্যাদি ইত্যাদি। এ প্লাস, গোল্ডেন এ প্লাস পাওয়া বহু ছাত্র-ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায় না। আবার অনেক ৩.৫/৪ পাওয়া ছাত্র-ছাত্রীও চান্স পেয়ে যায়। কিন্তু সবাই তো শুধু মেধার জোরে চান্স নাও পেতে পারে। এসএসসি ও এইচএসসি লেভেলে এ প্লাস পাওয়া ছাত্র-ছাত্রীরা পয়েন্টের কারণে এগিয়ে থাকে। এদের মধ্যে কেউ যে ফাঁসকৃত প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষায় এ প্লাস নিয়ে আসেনি, সেটি জোর দিয়ে বলার কোনো সুযোগ নেই।

মাননীয় মন্ত্রী, আমার এই চিঠি পড়ে আপনি ক্ষেপে যাবেন না। আপনি ক্ষেপে গেলে আমাদের বাঁচার আর কোনো পথ থাকবে না। প্রশ্ন যে শিক্ষকরা ফাঁস করে দিচ্ছে, এমনটা আপনি নিজেই একাধিকবার মিডিয়ার সামনে বলেছেন। এও বলেছেন যে, এসব শিক্ষককে আপনি কঠোর হাতে দমন করবেন। যে শিক্ষকদের ছবি এই লেখায় দেয়া হলো, এদের অন্তত গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয়া হোক। এদেরকে শাস্তির আওতায় আনলে অন্য দুর্নীতিপরায়ণ শিক্ষকরা সাবধান হবেন, কাঁচা পয়সা কামানোর ইচ্ছে থাকলেও ভয়ে হয়ত নিবৃত্ত থাকবে।

আপনি মোবাইল কোর্ট এর ব্যবস্থা করতে পারেন। অপরাধী শিক্ষকদের বিচারের জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনাল করতে পারেন। পরিবর্তন আনতে হবেই। এবং পরিবর্তন আনতে যে আপনি অনেক আন্তরিক এটা আমরা বিশ্বাস করি। এসএসসি ও এইচএসসি লেভেলে এ প্লাসের সংখ্যা কমে যাওয়াই প্রমাণ করে আগের চিন্তায় আপনাদের কিছু পরিবর্তন এসেছে।

আমাদের বিশ্বাস আপনি পারবেন। বছরের প্রথম দিন পহেলা জানুয়ারিতে বাচ্চাদের হাতে নতুন গন্ধের বই তোলে দেয়ার কাজ কিন্তু আপনার হাত দিয়েই শুরু হয়েছে। আগে আমরা এমনটা ভাবতেও পারতাম না। শিক্ষাব্যবস্থায় এবং ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা জরুরী হয়ে পড়েছে। আমরা যেমন গ্রামের সরকারি-বেসরকারি স্কুল, কলেজ পার হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছি। আবার শহরের অনেক ছেলে-মেয়ে ছোট বেলা থেকেই ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াশুনা করে। এরা মূলত দেশে থাকে না। একটা নির্দিষ্ট সময় পড়ে ইউরোপ-আমেরিকায় চলে যায়। ছোটবেলা থেকেই এরা পশ্চিমকে আঁকড়ে ধরে, অনুকরণ করে বড় হয়। মাদ্রাসায় যারা পড়ে তারা দেশে থাকলেও, দেশের উন্নয়নের তুলনায় নিজেদের পরকালের উন্নয়ন নিয়েই ইনারা বেশি ব্যস্ত থাকেন।

মাননীয় মন্ত্রী; ঘুরে-ফিরে দেখবেন, জেনারেল লাইনে পড়াশুনা করা ছেলে-মেয়েরাই বাংলাদেশকে টিকিয়ে রেখেছে। এরাই শিক্ষক, পুলিশ, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সাংবাদিক, কবি-সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ, সামরিক বাহিনীর অফিসার-সৈন্য হয়ে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের নিমিত্তে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক আহুত দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের একেকজন সৈনিক। তাই আমাদের স্কুল-কলেজগুলোকে সুব্যবস্থাপনার মধ্যে আনা না যায়, নতুন প্রজন্মের মন থেকে যদি অবিশ্বাস, অনাস্থা আর অনিয়মপ্রিয়তা দূর করা না যায়, তাহলে রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ বেশিদূর অগ্রসর হতে পারবে না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ গত ৮ বছরে অনেক এগিয়েছে। খাদ্য ও বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে, মানুষের আয় বেড়েছে, শিল্পায়ন হয়েছে। দারিদ্র ও জেন্ডার বৈষম্য কমেছে, জঙ্গিবাদকে শক্ত হাতে দমন করা হচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদী শক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সরকার পদ্মাসেতু নির্মাণ করে ফেলছে, মিয়ানমার ও ভারতকে আইনি লড়াইয়ে হারিয়ে বিশাল সমুদ্রসীমা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ থেকে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছানোর স্বপ্ন দেখছি।

সব হচ্ছে কিন্তু স্কুল-কলেজের প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা থামছে না। আজকের বাচ্চারাই ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে। আপনি বা আমদের প্রধানমন্ত্রী সারাজীবন থাকবেন না। নতুন প্রজন্মের উপরই নির্ভর করতে হবে বাংলাদেশকে। একমাত্র একটা প্রগতিশীল, স্বচ্ছ, সৃজনশীল ও উৎপাদনমুখী শিক্ষাব্যবস্থাই পারে বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করতে।

সূত্র: চ্যানেল আই অনলাইন

ad

পাঠকের মতামত