ববিতা ও শাবানা আমার আদর্শ: মৌসুমী
বাংলা চলচ্চিত্রে নব্বইয়ের দশকের সেরা অভিনেত্রী মৌসুমী। অভিনয় গুণে এই অভিনেত্রীকে মর্যাদার আসনে বসিয়েছেন ভক্তসমাজ। সম্প্রতি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নিয়ে কথা বলেন ‘দুলাভাই জিন্দাবাদ’ খ্যাত এই অভিনেত্রী।
তিনি বলেন, ‘শিল্পীদের স্বার্থ রক্ষার জন্যই তো বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। কিন্তু শিল্পী সমিতি কি সেটা করছে? এটা করলে তো শাকিব খান শিল্পী সমিতি থেকে বের হতো না! তাই বলতে চাই যা হয়েছে ভালো হয়েছে। এখন এক সমিতির সঙ্গে অন্য সমিতির দ্বন্দ্ব নেই। সবাই সবার মতো ভালো কাজ করুক এটাই আমি চাই।’
আর চলচ্চিত্র ফোরামের যেসব উদ্দেশ্য আছে সেগুলো ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করব আমরা। গেল শুক্রবার ছিল তার জন্মদিন। দিনটি পারিবারিকভাবে পালন করেছিলেন এই অভিনেত্রী। গত রোববার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ফোরাম কেক কেটে তার জন্মদিন উদযাপন করে। রাজধানীর মগবাজারে অবস্থিত জাজ মাল্টিমিডিয়ার অফিস ভবনে তার এই জন্মদিন উদযাপন করা হয়। সেখানে কেক কাটার পর তিনি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নিয়ে এই কথাগুলো বলেন।
মৌসুমী আরো বলেন, আজ চলচ্চিত্র ফোরাম এই আয়োজন করায় আমি ভীষণ আনন্দিত। এজন্য ফোরামের সভাপতি নাসিরউদ্দিন দিলু, প্রযোজক মোহাম্মদ হোসেন, আবদুল আজিজ, রমিজভাইসহ আয়োজক সকলকে ধন্যবাদ।
জন্মদিন এলে অনেকে বয়স লুকিয়ে ফেলেন, এ বিষয়টি আপনি কিভাবে দেখেন? এর উত্তরে মৌসুমী বলেন, এটা আসলে ঠিক না। কারণ প্রত্যেক মানুষের আলাদা আলাদা বয়সে আলাদা সৌন্দর্য রয়েছে। বয়স লুকিয়ে রাখাটা স্মার্টনেসের পরিচয় না। জীবন থেকে কিছু সময় চলে যাবে এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু এটা ভেবে আমাকে ভয় পেতে হবে, বর্তমান জীবনকে নষ্ট করতে হবে তা ঠিক না। এমনকি অভিজ্ঞতা লুকিয়ে রাখাটাও ঠিক না। অন্য কারো চেয়ে যদি আমার অভিজ্ঞতা বেশি থাকে সেটা তো আমারই এচিভমেন্ট। সেটা কেন লুকিয়ে রাখব?
চলচ্চিত্রে আসার আগে কার কাজ দেখতেন মৌসুমী সেটাও খোলা মনে জানিয়ে দিলেন। তিনি বলেন, ‘আমার চাচা মোশাররফ হোসেন চলচ্চিত্রের প্রযোজক ছিলেন। কিন্তু আমি চলচ্চিত্রে খুব সহজে আসতে পারিনি। বাসা থেকেও প্রথমে অনুমতি মেলেনি। অভিনেত্রীদের মধ্যে ববিতা ও শাবানা আপা আমার আদর্শ ছিলেন। এরপর বলতে গেলে চিত্রনায়িকা শাবনাজকে দেখে চলচ্চিত্রে আসার সাহস পেয়েছিলাম। তার ‘চাঁদনী’, ‘দিল’ এসব ছবি দেখে সাহস যুগিয়েছি। সে সময় আমার মনে হতো এ মেয়েটিতো আমারই বয়সী। তাহলে আমি পারবো না কেন? মডেলিং করার পর ভালো সাড়া পেয়েছিলাম। মূলত এরপর আব্বু, আম্মুকে পটাতে চেষ্টা করতাম চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করার জন্য। চিত্রনায়িকা শাবনাজ আমাদের প্রোডাকশন থেকে ছবি করেছে। এরপর তখন মনের ভেতরে স্বপ্ন বুনতে শুরু করলাম, সামনে আমিও বড় পর্দায় কাজ শুরু করব ‘
তিনি আরো বলেন, তবে আমার কল্পনার বাইরে ছিল যে আমিও একদিন হিরোইন হব। ভাবতাম হয়তো একটা দুইটা নাটক, চলচ্চিত্র করা হবে আমার। তবে সোহানুর রহমান সোহান ভাই যখন ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ চলচ্চিত্রের জন্য আমাকে নির্বাচন করলেন, তখন আমি এ ছবিটি আর মাথা থেকে সরাতে পারিনি। এর আগে আমি শেখ নজরুল ইসলাম, বাদল খন্দকারসহ অনেক গুণী নির্মাতার বিভিন্ন ছবিতে কাজ করার প্রস্তাব পেয়েছিলাম। তখন বাসায় অনুমতি না মেলার কারণে তাদের ছবিগুলো আর করা হয়ে ওঠেনি।
এরপর ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবিটি করা হলো। এরপর তো মৌসুমী কাজ শুরু করলেন এবং রূপালী পর্দায় দর্শকের মন জয় করলেন।
এটা সবারই জানা। এখনও সমান তালে কাজ করছেন তিনি। কয়েকদিন আগেই মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত তার অভিনীত ‘দুলাভাই জিন্দাবাদ’ ছবিটি মুক্তি পায়। এ ছবিতে তিনি ডিপজলের বিপরীতে অভিনয় করেন। সম্প্রতি একে সোহেলের ‘পবিত্র ভালোবাসা’ ও উত্তম আকাশের ‘আমি নেতা হব’ নামে দুটি ছবির কাজ শেষ করেছেন মৌসুমী।
এ দুটি ছবিতে তার সহশিল্পী যথাক্রমে ফেরদৌস এবং ওমর সানী। এছাড়া সম্প্রতি রিয়াজ ও জাহিদ হাসানের বিপরীতে দুটি নতুন বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েছেন। খুব শিগগির এগুলো ছোট পর্দায় প্রচার হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।