179423

ক্লাসে নাঈমার সবচেয়ে অপছন্দ ছিলেন তাসকিন

স্পোর্টস ডেস্ক : গায়ে হলুদ, আংটি বদল, বিয়ে- সবকিছু যেন এক পলকে হয়ে গেল। দু’দিন আগে হয়েছে বিয়ে। নবপরিণীতা সৈয়দা রাবেয়া নাঈমা আছেন মোহাম্মদপুরের জাকির হোসেন রোডে তাসকিনের বাসার পাশেই বাবার বাড়িতে।

একসময় রাবেয়ার কাছে ক্লাসের সবচেয়ে অপছন্দের ছেলে ছিলেন তাসকিন। এখন তিনিই তার জীবনসঙ্গী-

প্রশ্ন: এত দ্রুত বিয়ে করলেন?

তাসকিন: সবার আগে মা-বাবার ইচ্ছায়। এখন যেখানে আছি, এটাই আমাদের বাড়ি। চাচা, ফুফুদের নিয়ে আমাদের পরিবার। নতুন ফ্ল্যাট কিনেছি। সবাই চেয়েছেন এই (পুরনো) বাড়িতে আমার বউকে নিয়ে যেন কিছুদিন থাকি। আমার মত ছিল। আমাদের সাত বছরের সম্পর্ক। বিয়ের ব্যাপারে সিনিয়র খেলোয়াড়দের সঙ্গেও আলোচনা করেছি। তারাও মত দিয়েছেন। বিয়ের পর খেলায় যদি ফোকাস বেশি দিতে পারি, তাহলে সমস্যা কোথায়।

প্রশ্ন: অনেক তরুণীর হৃদয় ভেঙে দিলেন?

তাসকিন: (হাসি) যারা আমাকে পছন্দ করে তারা বিয়ের পর পছন্দ করবে না, এটা তো হতে পারে না। হয়তো আগে অন্য দৃষ্টিতে দেখেছে তারা। এখন ভাইয়ের দৃষ্টিতে দেখবে! আপনাদের কাছে আমি আগে যা ছিলাম, এখনও তা-ই আছি। দোয়া করবেন, বিবাহিত জীবনে যেন সুখী হতে পারি।

প্রশ্ন: প্রেমের ইতিহাস?

তাসকিন: স্কুল থেকে শুরু। এসএসসি পরীক্ষার আগে থেকে বার্তা আদান-প্রদান হতো। ক্লাসে তার সবচেয়ে অপছন্দের ছেলে ছিলাম আমি। ক্লাসের সবচেয়ে দুষ্টু ছেলে ছিলাম। ও বোরকা পরত। ক্লাসে চুপচাপ থাকত। একসময় নানা অজুহাতে ওর কাছে প্রশ্ন, সাজেশন আনতে যেতাম। ওকে রাজি করাতে আমাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। পরে মা-বাবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছি। তরুণী ভক্তরা আমাকে পছন্দ করে আমি তাসকিন হওয়ার পর। কিন্তু ও আমার পাশে তাজিম (তাসকিনের ডাক নাম) থাকা অবস্থা থেকে।

প্রশ্ন: প্রেমিকাকে বিয়ের পর অনুভূতি কেমন?

তাসকিন: আমি এখন অনেক খুশি। তবে আমি ওকে যতই পছন্দ করি না কেন, বাবা-মা না চাইলে কখনোই এ বিয়ে হতো না। সে এখন আমার পরিবারের একজন। মা ওকে পেয়ে খুশি।

প্রশ্ন: মধুচন্দ্রিমায় কবে যাচ্ছেন?

তাসকিন: সুযোগ পেলে তো এখনই যেতাম। বিপিএলের পর আবার জাতীয় দলের অনুশীলন শুরু হবে। এখন সব কিছু নির্ভর করছে ফ্রি সময়ের ওপর।

প্রশ্ন: বিয়ের পর কিছু নেতিবাচক ছবি বা ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। আপনার বক্তব্য কী?

তাসকিন: এ নিয়ে চিন্তা করি না। জানি আমি কতটা সৎ। সেদিন দেখলাম বিরাট কোহলি ও আনুশকার একটি ছবির মধ্যে বিরাটের জায়গায় আমাদের রুবেল ভাইয়ের ছবি। আমাকেও অনেকে শাহরুখ খান বানিয়ে দিতে পারে।

প্রশ্ন: বিয়ে মানুষকে পরিণত করে। সেটা কি এই ৪৮ ঘণ্টায় মনে হচ্ছে?

তাসকিন: বিয়ের দিন আমার মনে হয়েছে, ‘আমি কী বিয়ে করে ফেললাম!’ দক্ষিণ আফ্রিকায় যখন যাই, তখন জানতাম না কোন তারিখে বিয়ে হচ্ছে। পরে বাবা বললেন, বিপিএল শুরু হওয়ার আগেই তোমার বিয়েটা সারতে চাই। এছাড়া মাশরাফি ভাইয়ের ম্যাচ ৪ তারিখে। তিনি আবার আমার উকিল বাবা হয়েছেন।

প্রশ্ন: মাশরাফিকে উকিল বাবা করতে চাইলেন আর তিনি রাজি হয়ে গেলেন?

তাসকিন: আমার বাবার খুব ইচ্ছা ছিল মাশরাফিকে উকিল বাবা বানাবেন। অনেক বলার পর তিনি রাজি হয়েছেন। এখনও উকিল বাবা বলে ডাকা হয়নি। সুযোগ পেলেই ডাকব।

প্রশ্ন: শচীন টেন্ডুলকার যেমন ২১ বছর বয়সে বিয়ে করেছিলেন খেলায় মনোযোগ দেয়ার জন্য…। আপনিও কি তাই?

তাসকিন: এটাও একটি বিষয়। একসময় চিন্তা করেছি, শচীন টেন্ডুলকার বিয়ে করেছেন ২১ বছরে, আমাদের মাশরাফি ২৪, সাকিব ২৫ বছরে। যারা আজ বড় খেলোয়াড়, তারা কিন্তু অল্প বয়সেই বিয়ে করেছেন। শচীনের সময় আর আমার সময় এক নয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। বাবা আমাকে পরিণত করে তোলার জন্যই বিয়ে দিয়েছেন।

প্রশ্ন: নতুন বউকে ফেলে বিপিএলে খেলতে যাচ্ছেন?

তাসকিন: খারাপ লাগারই কথা। বউও হয়তো বুঝে যাবে। এখানে বাবা-মা আছেন।

প্রশ্ন: শোনা যাচ্ছে, আপনি শুধু মাশরাফি-তামিমকে বিয়ের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়েছিলেন?

তাসকিন: এটা ঠিক না। বিয়েতে জাতীয় দলের সবাইকে ডেকেছিলাম। ওইদিন আমরা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরেছি। সবাই ক্লান্ত ছিল। তাই আসেনি। পরে বড় করে যখন অনুষ্ঠান করব, তখন সবাইকে আমন্ত্রণ জানাব।

ad

পাঠকের মতামত