177987

ফুসফুস ক্যান্সারের যে লক্ষণগুলো এমনকি অধুমপায়ীদেরও জানা দরকার

অ্যাশলে রিভাসের বয়স ছিল তখন ২৬। তিনি লক্ষ করছিলেন যে, দৌঁড়াতে গিয়ে তিনি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম সময়েই ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছেন।

পরের কয়েক বছরে নিউ মেক্সিকোর আলবুকার্কের এই এক্সরে টেকনিশিয়ান দীর্ঘমেয়াদি কফ এবং শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন। তার ডাক্তার এর কারণ হিসেবে তার অতিরিক্ত শরীরচর্চার অভ্যাসকেই দায়ী করেন।

এ ছাড়াও আরো কিছু লক্ষণ ছিল তার মধ্যে: ওজন কমে যাওয়া, জ্বর এবং নিউমোনিয়ার কয়েকটি উপলক্ষ। এরপর এখনও যখন রিভাস চূড়ান্তভাবে নিজের বক্ষের একটি এক্স-রে করার সিদ্ধান্ত নেন তার মাথায় শুধু একটিই চিন্তা ছিল: ক্যান্সার।

কিন্তু এক্স-রে করার পর তার ফুসফুসের ডান পাশে একটি মারাত্মক সংক্রামক টিউমার ধরা পড়ে। রিভাসের বয়স ছিল ৩২ এবং তিনি জীবনে কখনো একটি সিগারেটও পান করেননি। তিনি বলেন, “আমি চাই লোকে জানুক যে কারোরই ফুসফুস ক্যান্সার হতে পারে। “

এরপর রিভাস আমেরিকান লাং অ্যাসোসিয়েশনের লাং ফোর্স ক্যাম্পেইনে যোগ দেন। তিনি যে ধূমপান না করেও ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন তা প্রচারের জন্যই রিভাস এতে যোগ দেন। প্রকৃতপক্ষে, ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের ১৫ শতাংশেরই ধূমপানের কোনো অতীত রেকর্ড নেই।

ধূমপান ছাড়াও উত্তরাধিকার সূত্রে এবং বায়ুদূষণকারী বিভিন্ন উপাদান, যেমন অ্যাজবেস্টস, আর্সেনিক, র‌্যাডন, ডিজেলের ধোঁয়ার সংস্পর্শে আসলেও ফুসফুস ক্যান্সার হতে পারে। ফুসফুস ক্যান্সার বিশ্বব্যাপী বহুল বিস্তৃত একটি ক্যান্সার। আর প্রতিবছর স্তন, ডিম্বাশয় এবং জরায়ু ক্যান্সারে যত মানুষ মারা যায় তারচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় ফুসফুস ক্যান্সারে।

যদি শুরুতেই চিকিৎসা করা হয় তাহলে এই রোগ দ্রুত ভালো হয়। রিভাসের ক্ষেত্রে তাই ঘটেছে। প্রথমদিকেই রোগ শনাক্ত করে তার চিকিৎসা করা হয়।

কিন্তু মাত্র ১৬% রোগীর ক্ষেত্রেই প্রাথমিক স্তরে ফুসফুস ক্যান্সার ধরা পড়ে। বেশির ভাগ রোগীর ক্ষেত্রেই অনেক দেরি হয়ে যায়। আর একবার যখন টিউমারটি বেড়ে ওঠে তখন সেটি নিঃশ্বাস গ্রহণ প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করে এবং শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।

তেমনটিই ঘটেছে মার্লো প্যালাসিওর বেলায়। ২০১৩ সালে তিনি আগে দেখা যায়নি এমন এক ধরনের কাশিতে আক্রান্ত হন। ছয় সপ্তাহ কাশিতে আক্রান্ত থাকার পর তিনি ডাক্তারের কাছে যান। পরীক্ষা করানোর পর দেখা যায় ৩৯ বছর বয়সী এই অধূমপায়ী চতুর্থ স্তরের ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত।

চতুর্থ স্তরে এসে প্যালাসিওর ফুসফুস লক্ষণগুলোসহ দেহের বিভিন্ন অংশে আরো নানা লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন, পিঠ ব্যথা, হাড়ের ব্যথা, মাথাব্যথা, ওজন কমা এবং বিভ্রান্তি।

পঁচিশের পর গিয়ে ফ্রিদা ওরোজকোর দ্বিতীয় স্তরের ফুসফুস ক্যান্সার ধরা পড়ে। এর কয়েক মাস পর তার শুষ্ক কাশি দেখা দেয়। এরপর তিনি কাশির সময় পাঁজরের নিচের অংশে, বুকের বাম পাশে এবং কণ্ঠঅস্থির কাছে ব্যথা অনুভব করতে থাকেন। একসময় জ্বর, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা নিয়ে তিনি জরুরি স্বাস্থসেবার জন্য হাসপাতালে গেলে এক্স-রে করার পর তার ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে।

সূত্র : ফক্স নিউজ

ad

পাঠকের মতামত